নির্দেশনা

এই ক্রীম মুখের মধ্যম থেকে তীব্র মেছতা প্রতিরোধে একটি স্বল্প মেয়াদী চিকিৎসা। ব্যবহারের পরবর্তীতে সূর্য রশ্মি থেকে এড়িয়ে চলতে হবে এবং সূর্য রশ্মি প্রতিরোধক লোশন (সানস্ক্রীন) ব্যবহার করতে হবে। এস পি এফ ৩০ অথবা তার চেয়েও বেশি মাত্রার সানস্ক্রীন ব্যবহার করতে হবে।

ফার্মাকোলজি

এই ক্রীম তিনটি মূল উপাদান ফ্লুসিনোলোন এসিটোনাইড, হাইড্রোকুইনোন এবং ট্রিটিনয়িন এর সমন্বয়ে গঠিত। এদের সবগুলোই মেছতা দূর করতে সহায়তা করে। যদিও এই ক্রীমের মূল উপাদান গুলো মেছতা প্রতিরোধে কিভাবে কাজ করে তা এখনো অজানা, তবুও ফ্লুসিনোলোন এসিটোনাইড একটি কর্টিকোস্টেরয়েড যা ত্বকের বাহ্যিক ব্যবহারের নির্দেশিত প্রদাহরোধী ওষুধীয় গুনাবলী সমৃদ্ধ একটি উপাদান। হাইড্রোকুইনোন মেছতার দাগ দূর করে, যা টাইরোসিন-টাইরোসিনেজ এনজাইমকে প্রতিরোধের মাধ্যমে মেলানিন সংশ্লেষন প্রক্রিয়াকে বাঁধা দেয়। ট্রিটিনয়িন ক্যারাটোলাইটিক হিসেবে পরিচিত।

মাত্রা ও সেবনবিধি

এই ক্রীম প্রতি রাতে একবার ব্যবহার করতে হবে। এটি ঘুমানোর ৩০ মিনিট পূর্বে ব্যবহার করতে হবে। মৃদু পরিষ্কারক দিয়ে মুখ ও ঘাড় ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে তোয়ালের সাহায্যে মুখ শুকিয়ে নিতে হবে। মুখমণ্ডলের মেছতা আক্রান্ত স্থান থেকেও ১/২ ইঞ্চি বেশী জায়গা জুড়ে এই ক্রীম পাতলা আবরণ করে ব্যবহার করতে। দিনে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রীন ব্যবহার করতে হবে। সূর্য রশ্মি এড়িয়ে চলতে হবে। দিনে ব্যবহারকারীদের মোয়েশ্চারাইজার ক্রীম এবং / অথবা কসমেটিকস ব্যবহার করতে পারেন।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: শিশুদের ক্ষেত্রে এই ওষুধের কার্যকারিতা এবং কতটুকু নিরাপন তা এখনো জানা যায়নি।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ওষুধীয় গুনাবলী সম্বলিত সাবান, খসখসে সাবান, পরিষ্কারক, কসমেটিকস্ পদার্থ যে গুলোর ত্বক শুষ্ক করার প্রবণতা আছে, যে গুলোতে আছে উচ্চ মাত্রার অ্যালকোহল, ত্বক সংকোচনকারক, অন্যান্য প্রদাহ উৎপন্নকারী পদার্থ, অথবা ক্যারাটোলাইটিক উপাদান আছে তা পরিহার করতে হবে। এই ক্রীমের পাশাপাশি একইসাথে আলো সংবেদী ওষুধের ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে।

প্রতিনির্দেশনা

এই ক্রীমে ব্যবহৃত তিনটি উপাদানের যে কোনটির প্রতি সংবেদনশীল ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

এই ক্রীম ব্যবহারের ফলে খুবই অল্প সংখ্যক ব্যবহারকারী তীব্র এলার্জী জনিত সমস্যার সম্মুখীন হন। তাদের শ্বাস কষ্টের তীব্র সমস্যা অথবা তীব্র হাপানীর আক্রমন হতে পারে। যখন রোগীরা এই ক্রীম ব্যবহার করেন তাদের ত্বক মৃদু থেকে মাঝারী লালচে হওয়া, ত্বকের চামড়া উঠে যাওয়া, ত্বক জ্বালা পোড়া করা, ত্বক শুষ্ক হওয়া অথবা তুক চুলকাতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভকালীন সময়: প্রেগন্যান্সি ক্যাটেগরি সি। এই ক্রীমে রয়েছে ট্ৰিটিনয়িন যা গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের মৃত্যু, ভ্রুণের বৃদ্ধির পরিবর্তন, ভ্রুণের অপুষ্টি এবং ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতিসাধন করতে পারে। অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে ভ্রুণের উপর এই ওষুধের প্রতিক্রিয়াটি অনুমান করা অনেক কঠিন। কারণ সে ক্ষেত্রে ত্বকে ব্যবহারের সুনির্দিষ্টি স্থান নির্ণয় করা যেমন কঠিন, তেমনি ওষুধের সঠিক কোনো মাত্রাও তুলনা করা যায় না। গর্ভবর্তী মহিলাদের উপর এই ওষুধের পর্যাপ্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র ভ্রুণের ঝুঁকির তুলনায় গর্ভকালীন মায়ের সুফলের মাত্রা বেশী হলে গর্ভাবস্থায় এই ক্রীম ব্যবহার করা যাবে।

স্তন্য দানকালীন সময়: রক্তের মাধ্যমে শোষিত কর্টিকোস্টেরয়েড মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়। এই ক্রীমের বাহ্যিক ব্যবহারের মাধ্যমে ফ্লুসিনোলোন এসিটোনাইড, হাইড্রোকুইনোন এবং ট্রিটিনয়িন রক্তে শোষিত হয়ে সামান্য পরিমানে মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হতে পারে। কারন অনেক ওষুধ মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়। তাই স্তন্য দানকালীন মায়েদের ক্ষেত্রে এই ক্রীমের ব্যবহার সতর্কতার সহিত অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতা

এই ক্রীমে আছে হাইড্রোকুইনোন এবং ট্রিটিনয়িন যা মৃদু থেকে মাঝারী পর্যায়ে প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। এটি ব্যবহারে প্রয়োগকৃত স্থানে প্রদাহ যেমন ত্বক লালচে হওয়া, ত্বকের চামড়া উঠে যাওয়া, মৃদু জ্বালা পোড়া করা, ত্বক শুষ্ক হওয়া বা ত্বক তীব্র চুলকাতে পারে। ক্রীম প্রয়োগের ফলে ত্বকের ক্ষনস্থায়ী লালচে ভাব অথবা মৃদু জ্বালা পোড়া হলেও চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না। যদি ত্বকের অতিমাত্রায় সংবেদনশীলতা অথবা রাসায়নিকের প্রভাবে প্রদাহ অনুভূত হয়, তবে তখন এটির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি এই ক্রীমে রয়েছে ফ্লুসিনোলোন এসিটোনাইড নামক একটি কর্টিকোস্টেরয়েড। এই ক্রীম ব্যবহার বন্ধ করার পর রক্তে শোষিত কর্টিকোস্টেরয়েডের মাধ্যমে হাইপোথালমিক পিটুইটারী-এড্রেনাল এক্সিস সাপ্রেসন হতে পারে যার কারণে শরীরে গ্লুকোকর্টিকয়েডের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই ক্রীম ব্যবহারের সময় বাহ্যিক কর্টিকোস্টেরয়েড রক্তে শোষণের মাধ্যমে কাসিং সিনড্রোম (গ্লুকোেকর্টিকয়েড বেড়ে যাওয়া), রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বেড়ে যাওয়া এবং মূত্রে গ্লুকোজের উপস্থিতি দেখা দিতে পারে। যদি হাইপোথালমিক-পিটুইটারী এড্রেনাল এক্সিস সাপ্রেসন দেখা দেয়, তাহলে এই ক্রীমের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। যদি বাহ্যিক ব্যবহৃত কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধ করা হয়, তবে হাইপোথালমিক-পিটুইটারী এড্রেনাল এক্সিসের সামঞ্জস্যতা পুনরায় পূর্বের অবস্থায় আসতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Hydroquinone Preparations

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, শুষ্ক ও ঠান্ডা স্থানে রাখুন। ফ্রিজে রাখবেন না। ওষুধ শিশুদের নাগালের বাহিরে রাখুন।
Pack Image of Nospot 0.01% 4% Cream Pack Image: Nospot 0.01% 4% Cream