নির্দেশনা

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট সকল ধরনের মৃগীরোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয় যেমন
  • পারসিয়াস সিজারস
  • এবসেন্স সিজারস (পেটিট ম্যাল)
  • জেনারালাইজড টোনিক-ক্লোনিক সিজারস (গ্রান্ড ম্যাল)
  • মায়োক্লোনিক সিজারস
  • এটোনিক সিজারস
  • মিশ্র সিজারস যার মধ্যে এবসেন্স অ্যাটাকও অন্তর্ভুক্ত
  • ফেব্রাইল কনভালসন প্রতিরোধে
  • আঘাতজনিত এপিলেন্সি প্রতিরোধে
ইহা বাইপোলার ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় এবং মাইগ্রেন প্রতিরোধেও নির্দেশিত।

উপাদান

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ট্যাবলেট: প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড ট্যাবলেটে রয়েছে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট বিপি ২০০ মি.গ্রা.।

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট কন্ট্রোলড রিলিজ ২০০ ট্যাবলেট: প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড কন্ট্রোলড রিলিজ ট্যাবলেটে রয়েছে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ২০০ মি.গ্রা. যেখানে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট বিপি ১৩৩.২ মি.গ্রা. এবং ভেলপ্রোয়িক এসিড ৫৮ মি.গ্রা.।

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট কন্ট্রোলড রিলিজ ৩০০ ট্যাবলেট: প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড কন্ট্রোলড রিলিজ ট্যাবলেটে রয়েছে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ৩০০ মি.গ্রা. যেখানে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট বিপি ১৯৯.৮ মি.গ্রা. এবং ভেলপ্রোরিক এসিত ৮৭ মি.গ্রা.।

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট কন্ট্রোলড রিলিজ ৫০০ ট্যাবলেট: প্রতিটি এন্টেরিক কোটেড কন্ট্রোলড ৱিলিজ ট্যাবলেটে রয়েছে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ৫০০ মি.গ্রা. যেখানে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট বিপি ৩৩৩ মি.গ্রা. এবং ভেলপ্রোরিক এসিড ১৪৫ মি.গ্রা.।

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট সিরাপ: প্রতি ৫ মি.লি. সিরাপে রয়েছে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট বিপি ২০০ মি.গ্রা.।

ফার্মাকোলজি

এই প্রিপারেশন এর মূল উপাদান সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট-এর বিভিন্ন ধরনের সিজার-এ মৃগীরোগ রোধী কার্যকারিতা রয়েছে। সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট-এর মৃগীরোগ রোধী কার্যপদ্ধতি এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ধারণা করা হয় যে এর কার্যকারিতা মস্তিস্কে গামা এমাইনো বিউটাইরিক এসিড (গাবা)-এর মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কযুক্ত।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ট্যাবলেট:

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ট্যাবলেট দিনে ১টি বা ২টি দেওয়া যায়। সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট সিরাপ বিভাজিত ডোজে দেওয়া উচিত।

মৃগীরোগ-
  • প্রাপ্তবয়ষ্ক: প্রাথমিক মাত্রা দৈনিক ৬০০ মি.গ্রা. দুইবারে খাবার গ্রহণের পরে সেব্য। প্রতি ৩ দিন পর দৈনিক ২০০ মি.গ্রা. থেকে সর্বোচ্চ ২.৫ গ্রাম পর্যন্ত পরিমাণে বৃদ্ধি করে বিভক্ত মাত্রায় দেয়া যেতে পারে খিঁচুনী বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত। স্বাভাবিক রক্ষণ মাত্রা দৈনিক ১-২ গ্রাম (২০-৩০ মি.গ্রা./কেজি প্রতিদিন)।
  • শিশু (দেহের ওজন ২০ কেজি এর উপরে): প্রাথমিকভাবে দৈনিক ৪০০ মি.গ্রা. বিভক্ত মাত্রায়। যদি রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রন না হয় তবে মত্রা দৈনিক ২০-৩০ মি.গ্রা./কেজি বাড়ানো যেতে পারে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩৫ মি.গ্রা./কেজি পর্যন্ত।
  • শিশু (দেহের ওজন ২০ কেজি পর্যন্ত): প্রাথমিকভাবে দৈনিক ২০ মি.গ্রা./কেজি বিভক্ত মাত্রায়।
ফেব্রাইল কনভালসন: দৈনিক ২০-৩০ মি.গ্রা./কেজি ৩টি বিভক্ত মাত্রায়।
 
বাইপোলার ডিসঅর্ডার: প্রাথমিকভাবে দৈনিক ৬০০ মি.গ্রা. (২০-৩০ মি.গ্রা./কেজি) ২-৩টি বিভক্ত মাত্রায়, ৩-৫ দিনের ভিতরে মাত্রা এডজাস্ট করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত মাত্রা দৈনিক ১০০০-২০০০ মি.গ্রা.।

মাইগ্রেন প্রতিরোধে: ৪০০-৬০০ মি.গ্রা. দিনে দুই বার, যদিও কারো কারো দৈনিক ১০০০-১৫০০ মি.গ্রা. দরকার হতে পারে।

ইনজেকশন:
  • প্রাপ্তবয়স্কদের: ৩-৫ মিনিটের মধ্যে শিরায় ধীরে ধীরে ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে, সাধারণত ৪০০-৮০০ মিলিগ্রাম শরীরের ওজনের উপর নির্ভর করে (১০ মিলিগ্রাম/কেজি পর্যন্ত)। সর্বোচ্চ ২৫০০ মিলিগ্রাম/দিন পর্যন্ত দেওয়া হয়।
  • শিশুদের জন্য: প্রাথমিক: ২০-৩০ মি.গ্রা./কেজি/দিন, সর্বোচ্চ: ৪০ মি.গ্রা./কেজি/দিন। এটি সরাসরি ধীর শিরায় ইনজেকশনের মাধ্যমে বা সামঞ্জস্যপূর্ণ তরল ব্যবহার করে দেওয়া যেতে পারে যেমন ০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড ইনজেকশন, ৫% ডেক্সট্রোজ ইনজেকশন।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ওষুধের বিপাকে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট অনির্দিষ্ট প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। যে সকল ঔষধের সাথে এটি তাৎপর্যপূর্ণ ইন্টার‍্যাকশন করে তাদের মধ্যে ফেনোবারবিটাল, ফিনাইটয়েন, ওয়ারফারিন, এসপিরিন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

প্রতিনির্দেশনা

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট এর প্রতি অতিসংবেদনশীলতা ও লিভার ডিসফাংশন-এ ইহা নির্দেশিত নয়। গর্ভাবস্থায় এবং গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলাদের ক্ষেত্রে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট-এর ব্যবহার নির্দেশিত নয়।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে ক্ষুধামন্দা, বমিভাব ও বমি। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এন্টেরিক কোটেড ওষুধ সেবনে হ্রাস পায়। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আছে ঘুম ঘুম ভাব, মাংশপেশীর অসামঞ্জস্যপূর্ণ মুভমেন্ট এবং বিভিন্ন অঙ্গের অনিয়ন্ত্রিত কম্পন। এই উপসর্গগুলো সাধারণত অনিয়মিতভাবে হয় ও মাত্রা হ্রাস করলে ফুসকুড়ি, চুল পড়ে যাওয়া ও ক্ষুধা বৃদ্ধিও মাঝে মাঝে দেখা গেছে। যকৃতের ওপর সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট এর বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্লাজমায় যকৃতের এনজাইম মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া ৪০% রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যা কোন রকম উপসর্গ ছাড়াই চিকিৎসার প্রাথমিক মাসগুলোতে দেখা দেয়। ফালমিনেট হেপাটাইটিস অত্যন্ত বিরল যা মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। দুই বছরের নীচের শিশু যার অন্য অসুস্থতাও আছে এবং যাদের একাধিক এন্টিএপিলেপটিক এজেন্ট দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে তারা বিশেষ ভাবে যকৃতের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট ব্যবহারে অগ্নাশয়ে তীব্র প্রদাহ ও রক্তে এমোনিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি প্রায়শঃ হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট প্লাসেন্টা অতিক্রম করে এবং পর্ভবর্তী মহিলাদের প্রথম তিন মাস সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট প্রয়োগে নবজাতকের নিউরাল টিউব জটিলতা যেমন এনেনকেফালি এবং স্পাইনা বিফিডা দেখা গেছে। সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট গ্রহনকারী গর্ভবর্তী মহিলাদের সেরাম আলফা-ফেটোপ্রোটিন পরিমাপ করা উচিত। সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট মাতৃদুগ্ধের সাথে নিঃসৃত হয়, যদিও স্তন্যপানকারী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা সম্ভবতঃ কোন ঝুঁকির কারণ নয়।

সতর্কতা

সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট সেবনের পূর্বে এবং সেবনকালে প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ক্ষেত্রে লিভার ফাংশন মনিটর করতে হবে। সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট সেবনের পূর্বে কিংবা বড় ধরনের অস্ত্রোপাচারের আগে যাতে কোন রক্তপাত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। কিডনীর সমস্যাজনিত রোগী, গর্ভবর্তী এবং স্তন্যদানকারী মা এবং সিটেমিক লুপাস এরিথোমেটোসাস রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। সোডিয়াম ভালপ্রোয়েট মুত্রের সাথে আংশিক ভাবে কিটোন মেটাবোলাইট হিসেবে নিঃসৃত হয় যা ইউরিন কিটোন টেস্টে ভুল তথ্য দিতে পারে। আকস্মিক ভাবে ওষুধ সেবন বন্ধ করা উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় এবং গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলাদের ক্ষেত্রে সোডিয়াম ভেলপ্রোয়েট ব্যবহার করা উচিত নয়।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Primary anti-epileptic drugs

সংরক্ষণ

৩০º সে. এর উপরে সংরক্ষণ করা হতে বিরত থাকুন। আলো থেকে দূরে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।