বেক্লোমিথাসোন ডিপ্রোপিওনেট

নির্দেশনা

বেক্লোমিথাসোন ডিপ্রোপিওনেট ৫০, ১০০ এবং ২৫০ এইচএফএ ইনহেলার প্রাপ্তবয়স্ক বা শিশুদের হালকা, মাঝারি বা গুরুতর হাঁপানির রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনায় নির্দেশিত। হাঁপানির প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার জন্য বেক্লোমেটাসোন ডিপ্রোপিয়েনে ইনহেলেশনের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রতিকূল প্রভাবের তীব্রতা ছাড়াই ফুসফুসে কার্যকরী প্রদাহ-বিরোধী ক্রিয়া প্রদান করে যেখানে কর্টিকোস্টেরয়েড সেবনে প্রতিকূলতা বেশি পরিলক্ষিত হয়।

হালকা হাঁপানি: রোগীদের নিয়মিতভাবে সিম্পটমেটিক ব্রঙ্কোডাইলেটর অ্যাজমা এর ওষুধ প্রয়োজন।

মাঝারি হাঁপানি: প্রফাইল্যাকটিক থেরাপি বা ব্রঙ্কোডাইলেটর চলা সত্ত্বেও অস্থির বা ক্রমবর্ধমান হাঁপানির রোগী।

গুরুতর হাঁপানি: গুরুতর দীর্ঘস্থায়ী হাঁপানির রোগী এবং যারা লক্ষণগুলির পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমিক কর্টিকোস্টেরয়েডের উপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী আছেন যারা উপসর্গের পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমিক কর্টিকোস্টেরয়েডের উপর নির্ভরশীল তারা চাইলে ওরাল কর্টিকোস্টেরয়েড কমাতে বা বাদ দিতে সক্ষম হন যদি উচ্চ মাত্রার ইনহেলড বেক্লোমেটাসোন ডিপ্রোপিয়েনেট গ্রহণ শুরু করেন।

ঔষধের মাত্রা

বেক্লোমিথাসোন ডিপ্রোপিওনেট ইনহেলার শুধুমাত্র মৌখিক ইনহেলেশনে ব্যবহারের জন্য। রোগীদের তাদের রোগের তীব্রতার জন্য উপযুক্ত ইনহেলড বেক্লোমেটাসোন ডিপ্রোপিয়নেটের একটি প্রাথমিক ডোজ দেওয়া উচিত। তারপরে নিয়ন্ত্রণ অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ডোজ সামঞ্জস্য করা যেতে পারে, বা পৃথক প্রতিক্রিয়া অনুসারে ন্যূনতম কার্যকর ডোজ হ্রাস করা যেতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের (বয়স্কদের সহ): স্বাভাবিক প্রাথমিক ডোজ ২০০ মাইক্রোগ্রাম দিনে দুবার । আরও গুরুতর ক্ষেত্রে প্রাথমিক ডোজটি প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ মাইক্রোগ্রামে বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে যা রোগীর হাঁপানি স্থিতিশীল হয়ে গেলে হ্রাস করা যেতে পারে। মোট দৈনিক ডোজ দুই, তিন, বা চার বিভক্ত ডোজে দেয়া যেতে পারে।

শিশু: প্রতিক্রিয়া অনুসারে ৫০ থেকে ১০০ মাইক্রোগ্রাম প্রতিদিন দুই, তিন বা চার বারে দেওয়া উচিত। বিকল্পভাবে, ১০০ মাইক্রোগ্রাম বা ২০০ মাইক্রোগ্রাম দিনে দুবার দিতে হবে। স্বাভাবিক প্রাথমিক ডোজ হল ১০০ মাইক্রোগ্রাম প্রতিদিন দুবার। শিশুদের জন্য বেক্লোমেটাসোন ২৫০ ইনহেলার প্রযোজ্য হয়।

বেক্লোমিথাসোন ২৫০ HFA ইনহেলার: স্বাভাবিক প্রাথমিক ডোজ ২০০ মাইক্রোগ্রাম দিনে দুবার । আরও গুরুতর ক্ষেত্রে প্রাথমিক ডোজটি প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০ মাইক্রোগ্রামে বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে যা রোগীর হাঁপানি স্থিতিশীল হয়ে গেলে হ্রাস করা যেতে পারে। মোট দৈনিক ডোজ দুই, তিন, বা চার বিভক্ত ডোজে দেয়া যেতে পারে।

হেপাটিক বা রেনাল প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে ডোজ বাড়ানোর দরকার নেই।

সেবনবিধি

ইনহেলার ব্যবহার সহজ মনে হলেও অনেক রােগী সঠিকভাবে এর ব্যবহার জানে না। রােগী সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার না করলে তার ফুসফুসে পর্যাপ্ত মাত্রায় ঔষধ প্রবেশ করে না। ইনহেলারের নিয়মিত ও সঠিক ব্যবহার এ্যাজমা আক্রমন রােধ করে ও এর তীব্রতা কমায়।

নিম্নলিখিত নিয়মাবলী পালন করে আপনি আশানুরূপ ফল পেতে পারেন যা অ্যাজমা এসােসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত "National Asthma Guidelines for Medical Practitioners" অনুসরণে:
  1. প্রথমে ঢাকনা খুলে নিন
  2. প্রতিবার ব্যাবহারের পুর্বে ইনহেলার ভালোভাবে ঝকিয়ে নিন।
  3.  ইনয়েলারটি যদি নতুন হয় অথবা এক সপ্তাহ বা এর অধিক বিরতিতে ব্যবহৃত হয় তাহলে এই পরীক্ষামূলক ব্যবহার প্রয়োজন; অর্থাৎ একটি মাত্রা বাতাসে নিঃসৃত করে দেখতে হবে।
  4. সুবিধাজনকভাবে যতটুকু সম্ভব শ্বাস ত্যাগ করুন এবং ইনহেলালকে সোজাভাবে ধরুন।
  5. শ্বাস বন্ধ অবস্থায় ইনহেলারের মুখ আপনার মুখের ভিতর এমনভাবে পুরে নিন যেন আপনার মুখ ও ইনহেলারের মধ্যে কোন ফাঁক না থাকে।
  6. ক্যানিস্টারে চাপ দিন এবং সাথে সাথে মুখ দিয়ে অবিরাম কিন্তু ধীর গতিতে পূর্ণ মাত্রায় শ্বাস নিন।
  7. আপনার মুখ থেকে ইনহেলার বের করে নিন। ইনহেলার করার ১০ সেকেন্ড বা যতক্ষন সম্ভাব শ্বাস বন্ধ রাখুন এবং পরে ধীরে ধীরে শ্বাস ত্যাগ করুন।
  8. ডাক্তার যদি প্রতিবার একাধিক মাত্রা গ্রহনের পরামর্শ দেশ, তবে দ্বিতীয় চাপটির জন্য একসাথে ১ মিনিট অপেক্ষা করুন। অতঃপর ইনহেলার ভালোভাবে ঝাকিতে নিন এবং ৪ নং থেকে ৭ নং পর্যন্ত নিয়মাবলীর পুনরাবৃত্রি করুন।
  9. ব্যবহারের পর ক্যাপ দিয়ে এ্যাকচুয়েটরের মুখ বন্ধ রাখুন। ইনহেলার ব্যবহারের পর মুখে সাধারণ পানি দিয়ে কুলি করুন।
  10. আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পুরো পদ্ধতিটা মাঝে মাঝে অনুশীলন করুন। যদি কোন সাহা ধোঁয়া দেখতে পান তবে বুঝবেন যে ঠোঁট দিয়ে এ্যাকচুয়েটরের মুখ ভালোভাবে ঢোকে নাই অথবা আপনি চাপের সাথে শ্বাস নিচ্ছেন না। এটা পদ্ধতিগত ভুল। এমন হলে ৪ নং পদ্ধতিটি আবার চেষ্টা করুন।
ইনহেলার পরিষ্কার করার নিয়মাবলী: সপ্তাহে অন্তত একবার আপনার ইনহেলার পরিষ্কার করুন। ক্যানিস্টারটি এ্যাকচুয়েটর থেকে আলাদা করুন এবং এ্যাকচুয়েটর ও কাভার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। কিন্তু ধাতব ক্যানিস্টারটিকে কখনই পানিতে ভিজাবেন না। অতঃপর এ্যাকচুয়েটর ও কাভার শুকিয়ে নিন এবং ধাতব ক্যানিস্টারটি সাবধানে এ্যাকচুয়েটরের অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে নিন। মাউথপিস কাভারটি সঠিকভাবে স্থাপন করুন।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ইনহেলড কর্টিকোস্টেরয়েডের সিস্টেমিক এফেক্ট ঘটতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য নির্ধারিত উচ্চ মাত্রার ডোজে। সম্ভাব্য সিস্টেমিক প্রভাবগুলির মধ্যে রয়েছে কাশিং সিনড্রোম, কাশিংগয়েড বৈশিষ্ট্য এবং অ্যাড্রেনাল দমন, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের বৃদ্ধি প্রতিবন্ধকতা, হাড়ের খনিজ ঘনত্ব হ্রাস, ছানি এবং গ্লুকোমা।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Respiratory corticosteroids