রুক্সোলিটিনিব

নির্দেশনা

রুক্সোলিটিনিব হল একটি জেনাস কাইনেজ এনজাইম ইনহিবিটর, যা এটোপিক ডার্মাটাইটিস এবং শ্বেতরোগ এর জন্য নির্দেশিত।

এটোপিক ডার্মাটাইটিস: নন-ইমিউনোকম্প্রোমাইজড প্রাপ্তবয়স্ক, ১২ বছর বা তার বেশি রয়সের শিশু এবং যাদের রোগটি টপিকাল প্রেসক্রিপশন থেরাপির মাধ্যমে পর্যাপ্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, তাদের ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি এটোপিক ডার্মাটাইটিসের স্বল্পমেয়াদী টপিকাল এবং নন-কনটিনিউয়াস ক্রনিক ট্রিটমেন্ট এ নির্দেশিত।

শ্বেতরোগ: রুক্সোলিটিনিব ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী পেডিয়াট্রিক এবং ননসেগমেন্টাল শ্বেতরোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

ফার্মাকোলজি

রুক্সোলিটিনিব একটি জেনাস কাইনেজ ইনহিবিটর, যা জ্যাক ১ এবং জ্যাক ২ কে বাধা দেয়ার মাধ্যমে হেমাটোপয়েসিস এবং ইমিউনো ফাংশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাইটোকাইনের বৃদ্ধিতে কার্যকারী ভূমিকা রাখে। জ্যাক সিগন্যালিং এর মাধ্যমে এসটিএটিএস (সিগন্যাল ট্রান্সডিউসার এবং ট্রান্সক্রিপশনের অ্যাক্টিভেটর) সাইটোকাইন রিসেপ্টরগুলিকে সক্রিয় করে যা পরবর্তীকালে এসটিএটিএস-এর নিউক্লিয়াসে লোকালাইজেসন করার মাধ্যমে জিনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। থেরাপিউটিক কার্যকারিতার সাথে জ্যাক এনজাইমগুলির ইনহিবিশনের প্রাসঙ্গিকতা বর্তমানে জানা যায়নি।

শোষণ: রুক্সোলিটিনিবের প্লাজমা ঘনত্ব সবার ক্ষেত্রে পরিমাপযোগ্য। ২৮ দিনের জন্য প্রতিদিন এটোপিক ডার্মাটাইটিস এ আক্রান্ত রোগীদের রুক্সোলিটিনিব ব্যবহার করার পরেও রুক্সোলিটিনিব এর আধিক্যর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি।

ডিসট্রিবিউশন: রুক্সোলিটিনিবের প্লাজমা প্রোটিন বাইন্ডিং প্রায় ৯৭%।

এলিমিনেশন: রুক্সোলিটিনিব প্রয়োগের পর এর গড় টার্মিনাল হাফ লাইফ প্রায় ১১৬ ঘন্টা।

মেটাবলিজম: রুক্সোলিটিনিব প্রাথমিকভাবে CYP3A4 দ্বারা এবং অল্প পরিমাণে CYP2C9 দ্বারা মেটাবোলাইজড হয়।

নির্গমন: রুক্সোলিটিনিব এবং এর মেটাবোলাইটস প্রাথমিকভাবে প্রস্রাব (74%) এবং মল (22%) দ্বারা নির্গত হয় এবং ১% এর কম অপরিবর্তিত ড্রাগ হিসাবে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ব্যবহারবিধি: রুক্সোলিটিনিব ক্রীম প্রতি সপ্তাহে ৬০ গ্রামের বেশি বা প্রতি ২ সপ্তাহে ১০০ গ্রামের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এটি শুধুমাত্র সাময়িক ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত। এটি ইন্ট্রাওকুলার, মৌখিক বা ইন্ট্রাভ্যাজাই- নাল ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত নয়।

এটোপিক ডার্মাটাইটিসের জন্য প্রস্তাবিত ডোজ: রোগীদের শরীরের ২০ শতাংশ পর্যন্ত আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন দুবার রুক্সোলিটিনিবের পাতলা স্তর প্রয়োগ করা উচিত। এটোপিক ডার্মাটাইটিসের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি (যেমন, চুলকানি, ফুসকুড়ি এবং লালচে ভাব) সমাধান হয়ে গেলে এটি ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। যদি ৮ সপ্তাহের মধ্যে লক্ষণ ও উপসর্গের উন্নতি না হয় তবে রোগীদের ডাক্তার দ্বারা পুনরায় পরীক্ষা করা উচিত। 

ননসেগমেন্টাল শ্বেতরোগ এর জন্য প্রস্তাবিত ডোজ: রোগীদের শরীরের ১০ শতাংশ পর্যন্ত আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন দুবার রুক্সোলিটিনিব ক্রীম এর পাতলা স্তর প্রয়োগ করা উচিত। তবে রোগীর সন্তোষজনক ফলাফল পাবার জন্য ২৪ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রুক্সোলিটিনিব ক্রীম দিয়ে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। ২৪ সপ্তাহের মধ্যে যদি রোগীর রিপিগমেন্টেশন সমস্যার সমাধান না হয় তবে ডাক্তার দ্বারা রোগীর পুনরায় পরীক্ষা করা উচিত।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: এটোপিক ডার্মাটাইটিস এবং ননসেগমেন্টাল শ্বেতরোগ এ ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে রুক্সোলিটিনিবের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

রুক্সোলিটিনিব সাইটোক্রোম P450 3A4 (CYP3A4) এর একটি সাবস্ট্রেট হিসাবে পরিচিত। CYP3A4-এর ইনহিবিটররা রক্তে রুক্সোলিটিনিব এর কনসেনট্রেশন বাড়াতে পারে, পক্ষান্তরে CYP3A4 -এর ইনডিউসাররা রক্তে এর কনসেনট্রেশন কমাতে পারে।

CYP3A4 এর শক্তিশালী ইনহিবিটর: CYP3A4 এর শক্তিশালী ইনহিবিটর এবং রুক্সোলিটিনিব একত্রে ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এতে রুক্সোলিটিনিবের সিস্টেমিক এক্সপোজার এর সাথে সাথে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিনির্দেশনা

রুক্সোলিটিনিব বা এই ওষুধের অন্য কোনো উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা রয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার নিষিদ্ধ।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

এটোপিক ডার্মাটাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস, ডায়রিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, কানের ইনফেকশন, ইওসিনোফিলের সংখ্যা বৃদ্ধি, আর্টিকারিয়া, ফলিকুলাইটিস, টনসিলের প্রদাহ এবং রাইনোরিয়া। ননসেগমেন্টাল শ্বেতরোগের সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি হলো অ্যাপ্লিকেশন সাইটে ব্রণ বা প্ররাইটাস দেখা দেয়া, নাসোফ্যারিঞ্জাইটিস, মাথাব্যথা, মূত্রনালীর সংক্রমণ, অ্যাপ্লিকেশন সাইটে এরিথেমা এবং জ্বরজ্বর ভাব।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, রক্তস্বল্পতা এবং নিউট্রোপেনিয়ার ঝুঁকি সহ গুরুতর প্রতিক্রিয়ার কারণে, মহিলাদের রুক্সোলিটিনিব ক্রীম দিয়ে চিকিৎসা কালীন সময় এবং ডোজ শেষ হবার পরে প্রায় চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্তন্যপান করানো উচিত নয়।

সতর্কতা

গুরুতর সংক্রমণ: স্থানীয় সংক্রমণ সহ সক্রিয় বা গুরুতর সংক্রমণের রোগীদের রুক্সোলিটিনিব এর ব্যবহার এড়ানো উচিত। যদি গুরুতর সংক্রমণ হয়, তাহলে সংক্রমনের উপশম না হওয়া পর্যন্ত রুক্সোলিটিনিব এর ব্যবহার বন্ধ রাখুন। দীর্ঘস্থায়ী বা বার বার ফিরে আসা সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীদের থেরাপি শুরু করার আগে রুক্সোলিটি-ি নবের বাবহারের ঝুঁকি এবং এটি ব্যবহারে প্রাপ্ত ফলাফলের উপকারিতার অনুপাত বিবেচনা করা উচিত। রুক্সোলিটিনিব দিয়ে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে এবং চিকিৎসার পরেও সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে রোগীদের ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

মৃত্যুহার: রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এ আক্রান্ত (RA) এবং অন্তত একটি কার্ডিওভাসকুলার রিস্ক ফ্যাক্টরের সাথে জড়িত ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সের রোগীদের মধ্যে টিউমার নেক্রোসিস ফ্যাক্টর (TNF) ব্লকার দিয়ে চিকিৎসা করার থেকে জেনাস কাইনেস ইনহিবিটার দিয়ে চিকিৎসা করায় আকস্মিক কার্ডিওভাসকুলার মৃত্যু সহ সর্বজনীন মৃত্যুর হার বেশি পরিলক্ষিত হয়েছিল।

নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার: রুক্সোলিটিনিব দিয়ে চিকিৎসা করা রোগীদের বেসাল সেল এবং স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা সহ নন-মেলানোমা স্কিন ক্যান্সার হতে পারে। রুক্সোলিটিনিব দিয়ে চিকিৎসার সময় নিয়মিত ত্বকের পরীক্ষা করা উচিত। প্রতিরক্ষামূলক পোশাক এবং ব্রড-স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন ব্যবহার করার মাধ্যমে সূর্যের আলো এবং ইউভি আলোর সংস্পর্শ থেকে যতদূর সম্ভব দূরে থাকতে হবে।

প্রধান বিরুপ কার্ডিওভাসকুলার ইভেন্টস (MACE): বর্তমান বা অতীতে ধূমপায়ী রোগীরা বিরুপ কার্ডিওভাস- কুলার ইভেন্টগুলির অতিরিক্ত ঝুঁকিতে থাকে। রোগীদের মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা স্ট্রোক করা রোগীদের ক্ষেত্রে রুক্সোলিটিনিব এর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত।

থ্রম্বোসিস: রুক্সোলিটিনিবের ট্রায়ালে থ্রম্বোএম্বোলিক ঘটনা পরিলক্ষিত হয়েছিল। থ্রম্বোসিসের লক্ষণ দেখা দিলে, রুক্সোলিটিনিব এর ব্যবহার বন্ধ করা উচিত এবং যথাযথ চিকিৎসা করা উচিত।

থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, অ্যানিমিয়া এবং নিউট্রোপেনিয়া: থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, অ্যানিমিয়া এবং নিউট্রোপেনিয়া হতে পারে। ক্লিনিক্যাল নির্দেশনা অনুযায়ী সিবিসি পর্যবেক্ষণ করুন।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Pyrrolopyrimidines

সংরক্ষণ

৩০° সে. এর কম তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক জায়গায় সংরক্ষণ করুন। আলো থেকে দূরে রাখুন। সকল ওষুধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।