অ্যাজাথিওপ্রিন

নির্দেশনা

চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইমরুযা ট্যাবলেট  নিম্নলিখিত রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করে:
  • অঙ্গ প্রতিস্থাপন/অরগ্যান ট্রান্সপ্লান্ট প্রত্যাখ্যানের
  • রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস
  • প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ (IBD) (ক্রোহনস ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস)
  • সিস্টেমিক লুপাস ইরাইথেমাতুসাস
  • ডার্মাটোমায়োসাইটিস এবং পলিমায়োসাইটিস
  • অটো-ইমিউন ক্রনিক সক্রিয় হেপাটাইটিস
  • পেমফিগাস ভালগারিস
  • পলিআর্টেরাইটিস নোডোসা
  • অটো-ইমিউন হেমোলাইটিক অ্যানিমিয়া
  • ক্রনিক রিফ্র্যাক্টরি ইডিওপ্যাথিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা

ফার্মাকোলজি

অ্যাজাথিওপ্রিন একটি ইমিউনোসাপ্রেসিভ অ্যান্টিমেটাবোলাইট, যেটি রাসায়নিকভাবে 6-[(1-মিথাইল-4-নাইট্রো-1H-imidazol-5-yl)thio]-1H-পিউরিন নামে পরিচিত। এটি 6-মেরকাপটোপিউরিনের একটি ইমিডাজোলিল ডেরিভেটিভ এবং এর অনেক জৈবিক প্রভাব মূল যৌগের মতো।

অ্যাজাথিওপ্রিন হল 6-mercaptopurine (6-MP) এর একটি ইমিডাজল ডেরিভেটিভ। এটি শরীরের ভিতর প্রবেশের পর খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভেঙে যাই এবং 6-MP এবং অ্যামেথিলনিট্রোইমিডাজল পরিণত হয়। 6-MP সহজেই কোষের পর্দা অতিক্রম করে এবং কোষের ভিতরে থাকা অনেকগুলি পিউরিনগুলোকে থায়োঅ্যানালগগুলিতে রূপান্তরিত করে, যার মধ্যে রয়েছে প্রধান সক্রিয় নিউক্লিওটাইড, থায়োইনোসিনিক অ্যাসিড। এই রূপান্তরের হার এক ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যাক্তির মধ্যে পরিবর্তিত হয়। নিউক্লিওটাইডগুলি কোষের পর্দা ভেদ করে যেতে পারে না তাই শরীরে থাকা তরল বা পানিও জাতীয় পদার্থেও যেতে পারে না। 6-MP প্রধানত অকার্যকর অক্সিডাইজড মেটাবোলাইট থিওইউরিক অ্যাসিড হিসাবে শরীর থেকে বের হয়ে যাই। অ্যালোপিউরিনল এনজাইম জ্যান্থাইন অক্সিডেসকে বাধা দেয়, যা এই জারণ ঘটায়।

শোষণ: মুখে খাবারের পর অ্যাজাথিওপ্রিন ভালভাবে শোষিত হয়। যদিও অ্যাজাথিওপ্রিনের সাথে কোন খাদ্য প্রভাবের অধ্যয়ন করা হয়নি, তবে 6-মারকাপ্টোপিউরিনের সাথে ফার্মাকোকাইনেটিক গবেষণা হয়েছে যা অ্যাজাথিওপ্রিনের সাথে সম্পর্কিত । যখন খাবার এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবারের সাথে খাওয়া হয় শোষণ ক্ষমতা তখন ২৭% কমে যাই। জ্যান্থাইন অক্সিডেসের উপস্থিতির কারণে, 6-মেরকাপটোপিউরিন দুধে স্থিতিশীল নয় (৩০  মিনিটের মধ্যে ৩০% ক্ষয় করে ফেলে)। অ্যাজাথিওপ্রিন খাবারের সাথে বা ছাড়াই নেওয়া যেতে পারে। ওষুধটি দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্যের সাথে একত্রিত করা উচিত নয়। [35S]-অ্যাজিথিওপ্রিনের মুখে খাবারের পর , সর্বাধিক প্লাজমা তেজস্ক্রিয়তা পেতে ১-২ ঘন্টা সময় লাগে  এবং ৪-৬ ঘন্টার ভিতর অর্ধেক পরিমান ওষুধ ক্ষয় হয়ে যাই। অ্যাজাথিওপ্রিন প্রধানত প্রস্রাবের মধ্যে 6-থায়োরিক ইউরিক অ্যাসিড হিসাবে বের হয়ে যায় । প্রসাবে এটি কে অল্প পরিমান ১-মিথাইল-৪-নাইট্রো-৫-থিওইমিডাজলও হিসাবে সনাক্ত করা হয়েছে। অ্যাজাথিওপ্রিনের অল্প পরিমাণ   ওষুধ বিপাকহীন অবস্থায় প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায় ।

বায়োট্রান্সফরমেশন: থিওপিউরিন এস-মিথাইল ট্রান্সফারেজ (TPMT): TPMT কার্যকলাপ বিপরীতভাবে লোহিত রক্তকণিকা 6-মেরকাপ্টোপিউরিন থেকে প্রাপ্ত থিওগুয়ানাইন নিউক্লিওটাইড ঘনত্বের সাথে সম্পর্কিত, থিওগুয়ানিন নিউক্লিওটাইড এর পরিমান অনেক বেশি হলে শ্বেতরক্তকণিকা এবং নিউট্রোফিলের সংখ্যা অনেক বেশি কমে যায়। যেসব রোগীর শরীরে TPMT অভাব থাকে তাদের শরীরে অনেক বেশি সাইটোটক্সিক থিওগুয়ানাইন নিউক্লিওটাইড তৈরী হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

মুখে খাওয়ার জন্য। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারের কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে বা ২ ঘন্টা পরে গ্রহণ করা উচিত।

প্রতিস্থাপ্নের ক্ষেত্রে
  • নিযুক্ত  ইমিউনোসাপ্রেসিভ পদ্ধতির উপর নির্ভর করে, থেরাপির প্রথম দিনে ৫ মিগ্রা/কেজি/দিন পর্যন্ত একটি ডোজ মুখে বা ইনজেকশন হিসেবে শিরায় দেওয়া যেতে পারে।
  • মেইনটেন্যান্স/ চলমান ডোজ ১-৪ মিগ্রা/কেজি/দিনের মধ্যে হওয়া উচিত এবং ক্লিনিকাল প্রয়োজনীয়তা এবং হেমাটোলজিকাল সহনশীলতা অনুযায়ী সামঞ্জস্য করা উচিত।
  • রুগীর যদি গ্রাফ্ট প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি থাকে তাহলে ডোজ কমিয়ে  হলেও তা চলমান রাখতে হবে।
অন্যান্য নির্দেশনার ক্ষেত্রে:
  • সাধারণভাবে, প্রাথমিক ডোজ হল ১-৩ মিগ্রা /কেজি/দিন, ক্লিনিকাল প্রতিক্রিয়া এবং হেমাটোলজিকাল সহনশীলতার উপর নির্ভর করে এই রেঞ্জের মধ্যে ডোজ কমানো বা বাড়ানো যেতে পারে।
  • যখন থেরাপিউতিক রেস্পন্স সন্তুষ্টি পূর্ণ হয়,তখন মেইনটেন্যান্স/ চলমান ডোজ রেস্পন্স অনুযায়ী সর্বনিম্ন মাত্রায় কমিয়ে আনা বিবেচনা করা উচিত। যদি তিন মাসের মধ্যে রোগীর অবস্থার কোনো উন্নতি না হয়, তাহলে অ্যাজাথিওপ্রিন প্রত্যাহার করার বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত।  IBD-এর রোগীদের জন্য, কমপক্ষে বারো মাস চিকিত্সার সময়কাল বিবেচনা করা উচিত এবং ওষুধ খাবার ৩-৪ মাস পরে চিকিৎসার ফলাফল ক্লিনিক্যাল্লি দৃশ্যমান নাও হতে পারে।
  • মেইনটেন্যান্স/ চলমান  প্রয়োজনীয় ডোজ ১-৩ মিগ্রা/কেজি/দিন মধ্যে হতে পারে, যা নির্ভর করে , চিকিৎসারত  রোগীর  রোগ, প্রত্যেক  রোগী  নিজস্ব প্রতিক্রিয়া এবং হেমাটোলজিকাল সহনশীলতার উপর।
অতিরিক্ত ওজনের শিশু: অতিরিক্ত ওজন হিসাবে বিবেচিত শিশুদের বেশি মাত্রায় অসুধ প্রয়োজন পরতে পারে তাই চিকিত্সার সময়  নিবিড় পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

বৃদ্ধ: বয়স্ক রোগীদের জন্য অ্যাজাথিওপ্রিন ব্যবহারে অভিজ্ঞতা কিছুটা কম রয়েছে।

কিডনি জটিলতা: যেসব রুগীদের কিডনি ভালোভাবে কাজ করে না তাদের ক্ষেত্রে ডোজ কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত।

লিভার জটিলতা: যেসব রুগীদের লিভার  ভালোভাবে কাজ করে না তাদের ক্ষেত্রে ডোজ কমানোর বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্যান্য ওষুধের সাথে অ্যাজাথিওপ্রিনের  ড্রাগ-ড্রাগের মিথস্ক্রিয়া থাকতে পারে। নিম্নলিখিত ওষুধ এর সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারেঃ Allopurinol, Neuromuscular blocking agents, Anticoagulants, Cytostatic/myelosuppressive agents, live vaccines hepatitis B vaccine, Ribavirin, Methotrexate, aminosalicylate derivatives বিস্তারিত তথের জন্য ইংরেজি অংশ দ্রষ্টব্য।

প্রতিনির্দেশনা

অ্যাজাথিওপ্রাইন / 6-mercaptopurine  এর প্রতি সংবেদনশীলতা থাকলে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ট্রান্সপ্ল্যান্ট রোগীদের মধ্যে ভাইরাল, ফাংগাল এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন,অস্থি মজ্জা কার্যকারিতা কমে যাওয়া, লিউকোপেনিয়া, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, বমি বমি ভাব, এবং নিওপ্লাজম ( বিরল)।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায়: গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা যাবেনা।

স্তন্যদান: ঔষধটি ব্যবহারের সময়  স্তন্যদান করা যাবেনা।

জন্ম নিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার: অ্যাজাথিওপ্রিনের জিনোটক্সিক সম্ভাবনার কারণে , কার্যকর জন্ম নিরোধক পধতি ব্যবহার করতে হবে

মহিলাদের  ক্ষেত্রে:  চিকিত্সাধিন অবস্থায় এবং চিকিত্সা শেষ হওয়ার এক মাস পর্যন্ত।

পুরুষের ক্ষেত্রে: চিকিতসাধীন অবস্থায় এবং চিকিত্সা শেষ হওয়ার তিন মাস পর্যন্ত  ।

টেরাটোজেনিসিটি: মানুষের মধ্যে অ্যাজাথিওপ্রিন এর টেরাটোজেনিসিটির প্রমাণ দ্ব্যর্থহীন। যারা সাইটোটক্সিক  কেমোথেরাপি নেয় তাদের এবং তাদের সঙ্গীর অবশ্যই পর্যাপ্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পধতি ব্যবহার করা উচিত।

সতর্কতা

অভিজ্ঞ চিকিতসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যাজাথিওপ্রাইন সেবন করুন। বিস্তারিত তথের জন্য ইংরেজি অংশ দ্রষ্টব্য।

মাত্রাধিক্যতা

লক্ষণ: ইনফেকশন, গলায় ইনফ্লামম্যাশন এবং রক্তপাত, বমি বমি ভাব, বমি , ডায়রিয়া, লিউকোপেনিয়া এবং লিভারের কার্যকারিতা কমে যাওয়া।

প্রতিকার: যেহেতু কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষেধক নেই, রক্তের সংখ্যা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Cytotoxic immunosuppressants

সংরক্ষণ

২৫ ডিগ্রি সে তাপমাত্রার নিচে ,আলো থেকে দূরে রাখুন। সকল ওষুধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।