নির্দেশনা

ইসোমিপ্রাজল নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লাক্স রোগ
  • ইরোসিভ ইসোফেগাইটিস রোগসমূহ নির্মূলে
  • এছাড়াও ডিওডেনাল আলসারে হ্যালিকোবেটার পাইলোরী নির্মূলে (ট্রিপল থেরাপি) ইসোমিপ্রাজল ব্যবহৃত হয়
  • এসিড সম্পর্কিত ডিসপেসিয়া
  • ডিওডেনাল অথবা গ্যাস্ট্রিক আলসার 
  • জলিঞ্জার-ইলিশন সিনড্রোম এর চিকিৎসায়

ফার্মাকোলজি

ইসোমিপ্রাজল একটি প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর যা গ্যাষ্ট্রিক প্যারাইটাল কোষে অবস্থিত H+/K+ ATPase এনজাইম সিস্টেমের সাথে কোভালেন্ট বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত এসিড নিঃসরণের প্রধান ধাপকে বাধাগ্রস্থ করে। ইসোমিপ্রাজল (ওমিপ্রাজলের S-আইসোমার), প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের প্রথম একক অপটিক্যাল আইসোমার যা রেসিমিক প্রোটন পাম্প অপেক্ষাকৃত অধিকতর এসিড নিয়ন্ত্রণ করে।

ঔষধের মাত্রা

ইসোমিপ্রাজল খাওয়ার ১ ঘন্টা পূর্বে সেবন করা উচিত। রোগের ধরণ অনুযায়ী সুপারিশকৃত মাত্রা ও প্রয়োগ নিম্নরূপ:

ইরোসিভ ইসোফ্যাগাইটিস নির্মূলে: ২০/৪০ মি.গ্রা. হিসেবে দৈনিক ১ বার করে ৪-৮ সপ্তাহ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৪-৮ সপ্তাহেই রোগ নির্মূল সম্ভব। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৪-৮ সপ্তাহকাল চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

ইরোসিভ ইসোফ্যাগাইটিস নিরাময় নিয়ন্ত্রণে: ২০ মি.গ্রা. করে দৈনিক ১ বার। ৬ মাসের অধিক সময়কালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

লক্ষণ নির্ভর গ্যাস্ট্রোইসোফেগাল রোগ সমুহের ক্ষেত্রে: ২০ মি.গ্রা. হিসেবে দৈনিক ১ বার করে ৪ সপ্তাহ।

ডিওডেনাল আলসারে হ্যালিকোবেকটার পাইলোরী নির্মূলে ট্রিপল থেরাপী:
  • ইসোমিপ্রাজল ৪০ মি:গ্রা: দৈনিক ১ বার ১০ দিন
  • এমোক্সিসিলিন ১০০০ মি:গ্রা: দৈনিক ২ বার ১০ দিন
  • ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ৫০০ মি:গ্রা: দৈনিক ২ বার ১০ দিন
জলিঞ্জার ইলিশন সিনড্রোমে: ইসোমিপ্রাজল ক্যাপসুলের দৈনিক একক প্রয়োগ মাত্রা ২০-৮০ মি.গ্রা.। রোগীর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রয়োগ মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে এবং ক্লিনিক্যাল নির্দেশনা যতদিন থাকবে ততদিন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে: দৈনিক ২০ মি. গ্রা. হিসেবে ২-৪ সপ্তাহ।

গ্যাস্ট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে: দৈনিক ২০-৪০ মি. গ্রা. হিসেবে ৪-৮ সপ্তাহ।


ইঞ্জেকশন অথবা ইনফিউশন-

ইরোসিভ ইসোফেগাইটিস সহ গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স রোগীদের ক্ষেত্রে:

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে (≥১৮ বছর)
  • ২০ মি.গ্ৰা. বা ৪০ মি.গ্রা. প্রতিদিন একবার
  • আইভি ইনজেকশনঃ >৩ মিনিট। আইভি ইনফিউশনঃ ১০-৩০ মিনিট
শিশুদের ক্ষেত্রে (১ থেকে ১৭ বছর)
  • ওজন < ৫৫ কেজিঃ ১০ মি.গ্রা. প্রতিদিন একবার
  • ওজন ≥ ৫৫ কেজিঃ ২০ মি.গ্রা. প্রতিদিন একবার
  • ১ মাস < ১ বছরঃ ০.৫ মি.গ্রা./কেজি প্রতিদিন একবার
  • আইভি ইনফিউশনঃ ১০-৩০ মিনিট
প্রাপ্তবয়স্কদের এন্ডোস্কোপির পর পুনরায় রক্তক্ষরনের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে:

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে (≥১৮ বছর)
  • ৮০ মি.গ্রা.
  • আইভি ইনফিউশনঃ ৩০ মিনিট, এরপর প্রতি ঘন্টায় বিরামহীনভাবে ৮ মি.গ্রা. ইনফিউশন করতে হবে মোট ৭২ ঘন্টা।

সেবনবিধি

ওরাল সাসপেনশন প্রস্তুত প্রনালী: একটি কাপে ১৫ মি.লি. বিশুদ্ধ পানিতে প্যাকেটের সম্পূর্ণ দানা মিশিয়ে ভালভাবে নাড়ুন এবং ২-৩ মিনিট রেখে দিন, অতঃপর পুনরায় নাড়ুন এবং সম্পূর্ণ মিশ্রণ একবারে সেবন করুন। সাসপেনশনটি ন্যাসোগ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস্ট্রিক টিউব দ্বারা প্রয়োগ করতে হলে ১৫ মি.লি. পানিতে মেশাতে হবে। অন্য কোন পানীয় বা খাদ্য ব্যবহার করা উচিত নয়। মিশ্রণটি ভালভাবে নাড়ার পর ২-৩ মিনিট রেখে দিন, অতঃপর পুনরায় ভালভাবে নাড়ার পর উপযুক্ত মাপের সিরিঞ্জ ব্যবহার করে ৩০ মিনিটের মধ্যে টিউবে প্রবেশ করাতে হবে। টিউবের ভেতরের সাসপেনশনটি পুনরায় পানি দিয়ে পরিস্কার করা উচিত।

ইন্ট্রাভেনাস ইনজেকশন: ভায়ালের ইসোমিপ্রাজলে ৫ মি.লি সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ মিশিয়ে ইন্ট্রাভেনাস ইনজেকশন ব্যবহার উপযোগী দ্রবণ তৈরি করতে হবে প্রস্তুতকৃত দ্রবণ পরিষ্কার বর্ণবিহীন থেকে হালকা হলুদ বর্ণের রঙ ধারণ করতে পারে। আইভি ইনজেকশন অবশ্যই শিরাপথে কমপক্ষে ৩ মিনিট ধরে প্রবেশ করাতে হবে। প্রস্তুতির ১২ ঘন্টার মধ্যে অবশ্যই ইনজেকশন ব্যবহার করে শেষ করতে হবে। প্রস্তুতকৃত ইনজেকশন সাধারণ আলোতে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ইসোমিপ্রাজল ব্যবহারের সময় ফেনিটয়েন, ওয়ারফেরিন, কুইনিডিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন, এমোক্সিসিলিন এর মিথষ্ক্রিয়ার কোন প্রমাণ নাই। তবে ডায়াজিপামের সাথে ইসোমিপ্রাজল ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডায়াজিপামের নিঃসরণ প্রক্রিয়া বিলম্ব হতে পারে। ইসোমিপ্রাজল কিটোকোনাজল, ডিগোক্সিন এবং লৌহ জাতীয় ওষুধের শোষণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

ইসোমিপ্রাজলের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

মৃদু ও অস্থায়ী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, তলপেটে ব্যথা, কোষ্ট কাঠিন্য ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় নিরাপদ ব্যবহারের কোন নির্দেশনা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে জীবজন্তুর উপর পরীক্ষা করে কোন বিকলাঙ্গজনিত ফলাফল পাওয়া যায়নি। যেহেতু মাতৃদুগ্ধে ইসোমিপ্রাজলের নিঃসরণ ও সদ্যজাত শিশুদের উপর এর প্রভাবজনিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই ইসোমিপ্রাজল দিয়ে চিকিৎসাকালে স্তন্যদান সাময়িক বন্ধ রাখতে হবে।

সতর্কতা

ইসোমিপ্রাজল গ্যাস্ট্রিক আলসারে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ম্যালিগন্যান্‌সির সম্ভাব্যতা যাচাই করে নিতে হবে। তা না হলে ইসোমিপ্রাজল রোগের লক্ষণসমূহকে ঢেকে দিয়ে রোগ নিরূপণে বিলম্ব ঘটাতে পারে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

শিশুদের ক্ষেত্রে: কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে: মাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন নেই

যকৃতের গোলযোগ: যকৃত ক্রিয়ায় গোলযোগের ক্ষেত্রে ওষুধের জৈবলভ্যতা (Bioavailability) এবং অর্ধজীবন (Half-Life) বেড়ে যেতে পারে তাই সেক্ষেত্রে মাত্রা নির্ধারণের প্রয়োজন রয়েছে এবং এতে সর্বোচ্চ প্রয়োগ মাত্রা হবে দৈনিক ২০ মি.গ্রা.।

মূত্র গোলযোগ: এ সকল ক্ষেত্রে মাত্রা নির্ধারণের প্রয়োজন নেই।

সংরক্ষণ

শুকনো জায়গায় ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কম তাপমাত্রায় সংরক্ষন করুন। আলো ও আর্দ্রতা থেকে নিরাপদে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।