নির্দেশনা

ইহা উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় নির্দেশিত। এছাড়াও লেফট ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি সম্পন্ন উচ্চরক্তচাপের রোগীদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে এর নির্দেশনা রয়েছে।

ফার্মাকোলজি

অ্যানজিওটেনসিন II (যা তৈরী হয় অ্যানজিওটেনসিন I থেকে অ্যানজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম প্রভাবিত বিক্রিয়ার মাধ্যমে), যা একটি শক্তিশালী ভেসোকন্সট্রিকটর, যা প্রাথমিক ভেসোঅ্যাকটিভ হরমোন রেনিন অ্যানজিওটেনসিন সিস্টেম-এর এবং উচ্চরক্তচাপের প্যাথোফিজিওলজির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি অ্যাড্রেনাল করটেক্স থেকে অ্যালডোসটেরনের নিঃসরণর বাড়ায়। লোসারটান এবং এর প্রধান সক্রিয় মেটাবোলাইট অ্যানজিওটেনসিন II এর ভেসোকন্সট্রিকটর ও অ্যালডোসটেরন-সিক্রেটিং এফেক্ট-এ বাধা দেয় সুনির্দিষ্টভাবে AT1 রিসেপ্টর (যা পাওয়া যায় বিভিন্ন টিস্যুতে যেমন- ভাস্কুলার স্মুথ মাসল্‌, অ্যাড্রেনাল গ্ল্যান্ড) এর সাথে অ্যানজিওটেনসিন II এর যুক্ত হওয়া বন্ধ করার মাধ্যমে। ইন ভিটরো বাইন্ডিং পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, AT1 রিসেপ্টর এ লোসারটান একটি পরিবর্তনীয়, প্রতিযোগিতামূলক ইনহিবিটর AT1 রিসেপ্টরের। লোসারটান এবং এর অ্যাকটিভ মেটাবোলাইট ACE-কে (একটি এনজাইম যা অ্যানজিওটেনসিন I থেকে অ্যানজিওটেনসিন II  করে এবং ব্র্যাডিকাইনিন কে ভাঙ্গে); বাধা দেয়না এবং কার্ডিওভাস্কুলার রেগুলেশনে গুরুত্বপূর্ণ হরমোন রিসেপ্টর বা এর আয়ন চ্যানেলগুলোকে বাধা দেয়না।

হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড একটি থায়াজাইড ডাইইউরেটিক। থায়াজাইড রেনাল টিউবুলার মেকানিজমের ইলেকট্রোলাইট রিঅ্যাবসর্পসনকে প্রভাবিত করে, যা সরাসরি সোডিয়াম ও ক্লোরাইডের প্রায় সমপরিমাণ নিস্কাশন বাড়ায়। এছাড়া বিপরীতভাবে, হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড ডাইইউরেটিক অ্যাকশনের মাধ্যমে প্লাজমা ভল্যুম কমায় যার ফলাফলে রেনিনের সক্রিয়তা বাড়ে, যা অ্যালডোসটেরনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা মূত্রে পটাশিয়ামের নিঃস্কাশন বাড়ায় এবং সিরামে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমায়। রেনাল-অ্যালডোসটেরন লিংক অ্যানজিওটেনসিন দ্বারা পরিচালিত হয়, এ জন্য একই সাথে অ্যানজিওটেনসিন II রিসেপ্টর অ্যানটাগোনিস্ট ব্যবহার করার ফলে, ডাইইউরেটিক দ্বারা যে পটাশিয়াম হারানোর সম্ভাবনা থাকে, তা নাকচ করে দেয়।

ঔষধের মাত্রা

উচ্চরক্তচাপ-
  • সাধারণতঃ ৫০/১২.৫ মি.গ্রা. প্রতিদিন একটি ট্যাবলেট।
  • যেসব রোগীর উচ্চরক্তচাপ প্রতিদিন ১টি ৫০/১২.৫ মি.গ্রা. ট্যাবলেটে যথেষ্ঠ পরিমাণে নিয়ন্ত্রিত হয়না, তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১টি ১০০/২৫ মি.গ্রা. ট্যাবলেট পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে।
  • যে সমস্ত রোগীদের রক্তচাপ লোসারটান ১০০ মি.গ্রা. দিয়ে পর্যাপ্ত নিয়ন্ত্রিত হয়না তাদের ১০০/১২.৫ মি.গ্রা. এ পরিবর্তন করতে হবে।
  • লেফট ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি সম্পন্ন উচ্চরক্তচাপের রোগীদের প্রারম্ভিক মাত্রা ৫০/১২.৫ মি.গ্রা., যদি আরো রক্তচাপ কমানোর প্রয়োজন হয় তবে ১০০/১২.৫ মি.গ্রা. দেয়া যেতে পারে, পরবর্তীতে ১০০/২৫ মি.গ্রা. দেয়া যেতে পারে যদি প্রয়োজন হয়। সর্বোচ্চ মাত্রা ১০০/২৫ মি.গ্রা. প্রতিদিন ১টি ট্যাবলেট।
  • সাধারণতঃ চিকিৎসা শুরুর ৩ সপ্তাহর মধ্যে এর এন্টিহাইপারটেনসিভ এফেক্ট পাওয়া যায়।
  • বয়স্ক রোগীদের জন্য ৫০/১২.৫ মি.গ্রা. এর কোন মাত্রা পরিবর্তনের প্রয়োজন নাই। কিন্তু, সর্বোচ্চ মাত্রা ১০০/২৫ মি.গ্রা. বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে শুরুর চিকিৎসা হিসাবে দেওয়া উচিৎ নয়।
অতি উচ্চরক্তচাপে-
  • অতি উচ্চরক্তচাপে শুরুর মাত্রা হচ্ছে ৫০/১২.৫ মি.গ্রা. এর ১টি ট্যাবলেট প্রতিদিন।
  • ২-৪ সপ্তাহ চিকিৎসার পরও যেসব রোগী আশানুরূপ ফল পায়না, সে সব রোগীর ক্ষেত্রে মাত্রা হচ্ছে প্রতিদিন ১০০/২৫ মি.গ্রা. এর ১টি ট্যাবলেট। সর্বোচ্চ মাত্রা ১০০/২৫ মি.গ্রা. এর ১টি ট্যাবলেট প্রতিদিন।

সেবনবিধি

ইহা অন্যান্য উচ্চরক্তচাপের ঔষধের সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি খাবারের সাথে অথবা আলাদাভাবেও খাওয়া যেতে পারে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

লোসারটান পটাশিয়াম:
  • কোন তাৎপর্যপূর্ণ ড্রাগ-ড্রাগ ফার্মাকোকাইনেটিক ইন্টারঅ্যাকশন পাওয়া যায়নি হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড, ডিগক্সিন, ওয়ারফেরিন, সিমেটিডিন এবং ফেনোবারটিল এর সাথে।
  • এছাড়া অন্যান্য ড্রাগের ক্ষেত্রে যেমন পটাসিয়াম স্পেয়ারিং ডাইইউরেটিক (উদাহরণস্বরুপ স্পাইরিনোল্যাকটোন, ট্রায়ামটেরিন, অ্যামিলোরাইড) পটাশিয়াম সাপ্লিমেন্ট রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • তবে নন-স্টেরয়ডাল এন্টিইনফ্লামেটরী ড্রাগ ইনডোমেথাসিন, লোসারটানের এন্টি হাইপারটেনসিভ এফেক্ট কমিয়ে দিতে পারে।
হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড:
  • একইসাথে ব্যবহার করলে নিম্নলিখিত ড্রাগসমূহের সাথে থায়াজাইড ডাইইউরেটিকের ইন্টারঅ্যাকশন হতে পারে।
  • অ্যালকোহল, বারবিচুরেট অথবা নারকোটিকস্ এন্টি হাইপারটেনসিভ এফেক্ট বাড়িয়ে দিতে পারে বা অর্থোসটেটিক হাইপোটেনশন হতে পারে।
  • এন্টিডায়াবেটিক ড্রাগস (ওরাল এজেন্টস ও ইনসুলিন) ডোজের তারতম্য করার প্রয়োজন হতে পারে।
  • অন্যান্য এন্টিহাইপারটেনসিভ ড্রাগ এডিটিক এফেক্ট।

প্রতিনির্দেশনা

লোসারটান ও হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড এর কম্বিনেশন প্রতিনির্দেশিত সেসব রোগীদের ক্ষেত্রে যারা অতিসংবেদনশীল এদের কোন উপাদানের প্রতি। এর হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড উপাদানের জন্য এটি প্রতিনির্দেশিত সেসব রোগীর ক্ষেত্রে যাদের অ্যানিউরিয়া আছে অথবা সালফোনামাইড উদ্ভূত কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীল।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভধারন নিশ্চিত হওয়া মাত্রই ইহার সেবন বন্ধ করতে হবে। অন্যদানকালে ব্যাবহার করা যাবে না কারন মাতৃদুগ্ধের সাথে এটি নিঃসৃত হয় কিনা তা এখনো যানা যায়নি।

সতর্কতা

  • হাইপারসেনসিটিভিটি অ্যানজিওএডেমা।
  • ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স এর সম্ভাবনা দূর করার জন্য পিরিয়ডিক ইলেকট্রোলাইট পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ।
  • দূর্লভ ক্ষেত্রে হাইপোক্যালেমিয়া দেখা দিতে পারে, বিশেষতঃ অতিরিক ডাইইউরেসিসে, যখন মারাত্মক সিরোসিস থাকে, অথবা দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর।
  • বৃক্কের অসমকার্যকারিতায়
  • সিম্পটোমেটিক হাইপোটেনশন।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বৃক্কের অসমকার্যকারিতায়: যতক্ষণ পর্যন্ত রোগীর ৩০ মি.লি./মিনিট থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ৫০/১২.৫ মি.গ্রা এর সাধারণ সেবনমাত্রা ব্যবহার করা যাবে। তবে বৃক্কের মারাত্মক অসমার্যকারিতায় থায়াজাইড ডাইইউরেটিক এর চেয়ে লুপ ডাইইউরেটিক দেওয়া উচিৎ।

যকৃতের অসমকার্যকারিতায়: লোসারটান ও হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইডের কম্বিনেশন যকৃতের অসমকার্যকারিতায় নির্দেশিত নয়। কেননা এর জন্য প্রয়োজনীয় লোসারটানের ২৫ মি.গ্রা. এর শুরুর ডোজ দেওয়া সম্ভব হয়না।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যাবহার: শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নি।

মাত্রাধিক্যতা

লোসারটান পটাশিয়াম: মানুষের লোসারটানের ওভারডোজের খুব সামান্য তথ্য পাওয়া যায়। তবে হাইপোটেনসন ও ট্যাকিকার্ডিয়া হতে পারে, সেসব ক্ষেত্রে সাপোর্টিভ চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

হাইড্রোক্লোরোথায়াজাইড: সবচেয়ে বেশী যেসব উপসর্গ দেখা যায়, তা ইলেকট্রোলাইট নিস্কাশনের ফলে (হাইপোক্যালেমিয়া, হাইপোক্লোরেমিয়া ও ডিহাইড্রেশন), যা অতিরিক্ত ডাইইউরেসিস থেকে হতে পারে। যদি এরসাথে ডিজিটালিস ব্যবহার করা হয়, তবে অতিরিক্ত হাইপোক্যালেমিয়া থেকে কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Combined antihypertensive preparations

সংরক্ষণ

৩০°সে. এর উপরে সংরক্ষণ করা হতে বিরত থাকুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।