নির্দেশনা

ইউনিফাইলিন নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা
  • ব্রংকোস্পাজম
  • ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারী ডিজিস
  • স্পাস্টিক ব্রঙ্কিয়াল উপাদান সহ ফুসফুসের রোগ

ফার্মাকোলজি

ডক্সোফাইলিন একটি আদর্শ শ্বাসনালী সম্প্রসারক। গঠনগত দিক থেকে ৭ নম্বর পজিশনে ডাইঅক্সোলেন group থাকার কারণে এটি থিওফাইলিন থেকে আলাদা। ডক্সোফাইলিন নির্দিষ্টভাবে ফসফোডাইএস্টারেজ-৪ কে বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে শ্বাসনালীর মসৃণ মাংসপেশীর প্রসারন ঘটায়। থিওফাইলিন থেকে আলাদা হওয়ার কারণে ডক্সোফাইলিন এডিনোসিন A1 এবং A2 রিসেপ্টরের প্রতি আকর্ষণ অপেক্ষাকৃত কম তাই এটি অনেক নিরাপদ। ডক্সোফাইলিন ­প্লাটিলেট অ্যাক্টিভেটিং ফ্যাক্টর (PAF) কে এবং leukotriene উৎপাদনে বাধা প্রদান করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

বয়স্ক: ২০০ মিঃগ্রাঃ ট্যাবলেট দৈনিক দুই থেকে তিন বার।

প্রাপ্তবয়স্ক: ৪০০ মিঃগ্রাঃ ট্যাবলেট দৈনিক দুই থেকে তিন বার অথবা চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী সেবন করুন।

শিশু:
  • ১২ বছরের ঊর্ধ্বে: ১০ মিঃলিঃ সিরাপ অথবা ২০০ মিঃগ্রাঃ ট্যাবলেট দৈনিক দুই থেকে তিন বার।
  • ৬-১২ বছরের: ৬-৯ মিঃগ্রাঃ/কেজি দৈহিক ওজন হিসাবে দৈনিক দুই বার, যেমন- বাচ্চার ওজন ১০ কেজি হলে ৩ মিঃলিঃ (৬০ মিঃগ্রাঃ) করে দৈনিক দুই বার অথবা চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী সেবন করুন।
যদি ডক্সোফাইলিন এর দৈনিক নির্দেশিত মাত্রা ৪০০ মিঃগ্রাঃ হয় তাহলে ডক্সোফাইলিন এসআর ট্যাবলেট দৈনিক একবার অথবা চিকিৎসকের পরার্মশ অনুযায়ী সেবন করুন।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্যান্য জ্যানথিনসমূহের সাথে ইউনিফাইলিন সেবন করা উচিত নয়। পানীয় দ্রব্য এবং ক্যাফেইনসমৃদ্ধ খাবার সীমিত খাওয়া উচিত। ইফেড্রিন অথবা সিমপ্যাথোমিমেটিক ওষুধসমূহের সাথে ইউনিফাইলিন সেবনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। ইউনিফাইলিনের পরিমাণ রক্তরসে বেশি থাকলে কিছু ওষুধ যেমনঃ ইরাইথ্রোমাইসিন, টিএও, লিনকোমাইসিন, ক্লিন্ডামাইসিন, এলুপিউরিনল, সিমেটিডিন, ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক এবং প্রোপ্রানোলোল সাথে নিলে যকৃতে জ্যানথিনসমূহের ক্লিয়ারেন্স কমিয়ে দিতে পারে। রক্তরসে ওষুধের অর্ধায়ু কমে গেলে ফিনাইটয়িন, অন্যান্য এ্যান্টিকনভালস্যান্ট এবং ধুমপানের ফলে জ্যানথিনসমূহের ক্লিয়ারেন্স বেড়ে যেতে পারে। এসকল ক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা প্রমাণিত।

প্রতিনির্দেশনা

ডক্সোফাইলিন ও অন্যান্য জ্যানথিনসমূহের প্রতি সংবেদনশীলতা আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার প্রতিনির্দেশিত। তীব্র মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, নিম্নরক্তচাপ এর রোগীদের এবং দুগ্ধদানকালীন ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

জ্যানথিনসমূহের দ্বারা চিকিৎসারত রোগীদের ক্ষেত্রে বমিবমি ভাব, বমি হওয়া, ব্যথা, মাথা ব্যথা, খিটখিটে ভাব, অনিদ্রা, ট্যাকিকার্ডিয়া, এক্সটাসিসটোলস্, ট্যাকিপনিয়া এবং কিছু বিরল ক্ষেত্রে হাইপারগ্লাইসেমিয়া অথবা এ্যালবুমিনইউরিয়া দেখা দিতে পারে। তীব্র মাত্রার ক্ষেত্রে দীর্ঘকালস্থায়ী কার্ডিয়াক এ্যারিথমিয়া এবং টনিক-ক্লোনিক খিচুনী দেখা দিতে পারে। এই প্রভাবসমূহ বিষাক্ততার প্রথম লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াসমূহ দেখা দিলে চিকিৎসা বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা হতে পারে, যা প্রয়োজনে বিষাক্ততার সকল লক্ষণসমূহ হলে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী নিম্ন মাত্রায় পুনরায় শুরু করা যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার: প্রাণীদেহে দেখা গেছে যে মায়ের গর্ভে ও জন্মের পর শিশুর বৃদ্ধিতে ডক্সোফাইলিন বাধা প্রদান করে না। যেহেতু গর্ভকালীন সময়ে এর ব্যবহারের সীমিত অভিজ্ঞতা রয়েছে, শুধুমাত্র একান্ত প্রয়োজন হলে ডক্সোফাইলিন গর্ভবতী মহিলাদের দেয়া যেতে পারে। স্তন্যদানকালীন সময়ে এই ওষুধ প্রতিনির্দেশিত।

যানবাহন এবং যন্ত্রপাতি চালানোর ক্ষমতার উপর প্রভাব: এই ওষুধ রোগীর যানবাহন ও যন্ত্রপাতি চালানোর ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে না।

সতর্কতা

রক্তরসে ইউনিফাইলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে কয়েকটি নিয়ামকের কারণে যকৃতে জ্যানথিনসমূহের ক্লিয়ারেন্স কমে যেতে পারে। নিয়ামকসমূহ হলো বয়স, কনজেসটিভ কার্ডিয়াক ডিকমপে- নসেশন, দীর্ঘস্থায়ী অবসট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ, দীর্ঘকালস্থায়ী যকৃতের রোগ, সহগামী সংক্রমনসমূহ, কিছু ওষুধ যেমন, ইরাইথ্রোমাইসিন, টিএও, লিনকোমাইসিন, ক্লিন্ডামাইসিন, এলুপিউরিনল, সিমেটিডিন, ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক এবং প্রোপ্রানোলোন একত্রে সেবন। এসকল ক্ষেত্রে ওষুধের মাত্রা কমানোর প্রয়োজনীয়তা প্রমাণিত। জ্যানথিনসমূহের ক্লিয়ারেন্সকে প্রভাবিত করতে পারে এমন নিয়ামকসমূহের ক্ষেত্রে রক্তে ওষুধের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসাগত পরিসর নিয়ন্ত্রণ করা নির্দেশিত। হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, বার্ধক্যে, দীর্ঘকালস্থায়ী হাইপোক্সেমিয়া, হাইপারথাইরয়ডিজম, দীর্ঘকালীন কর পালমোনালী, কনজেসটিভ হার্ট ফেইলর, যকৃতের রোগ, পেপটিক আলসার এবং যকৃতের অকার্যকারীতা রোগীদের ক্ষেত্রে ওষুধটির ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিউর রোগীদের উচ্চ রক্তের মাত্রার ফলে এই ওষুধের চিকিৎসা বন্ধ করার অনেক পরেও ওষুধের ক্লিয়ারেন্স তুলনামূলকভাবে ধীরগতি সম্পন্ন হওয়ায় এই সকল রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কোন রকম আসক্তি অথবা নির্ভরতার ঝুঁকি নেই।

মাত্রাধিক্যতা

যেহেতু ইউনিফাইলিনের কোন নির্দিষ্ট এ্যান্টিডোট নেই, তাই অতিমাত্রার ক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার কলাপ্‌স এর উপসর্গিক চিকিৎসা শুরু করা উচিত।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Bronchodilator, Methyl xanthine derivatives

সংরক্ষণ

আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। কেবলমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবহার্য।