নির্দেশনা

এনরিফার প্রাপ্তবয়স্কদের আয়রনের ঘাটতি জনিত অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় নির্দেশিত:
  • যারা মুখে খাওয়ার আয়রন সহ্য করতে পারে না অথবা মুখে খাওয়ার আয়রন যাদের ক্ষেত্রে অসন্তোষজনক ফলাফল দেয়।
  • যে সকল কিডনী রোগীরা ডায়ালাইসিস নির্ভরশীল না।

বিবরণ

এনরিফার হল কার্বক্সিম্যাল্টোজ কলয়ডাল আয়রন (III) হাইড্রোক্সাইড এর যৌগিক দ্রবণ যা আয়রন নির্গত করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ এর মাত্রা সংক্রান্ত তথ্য পর্যায়ক্রমে দেওয়া হল:
  • স্টেপ (১) একজন রোগীর কতটুকু পরিমাণ আয়রনের প্রয়োজনীয়তা সেটা জানা দরকার,
  • স্টেপ (২) আয়রনের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আয়রন মাত্রা নির্ণয় এবং প্রয়োগ করতে হয় এবং
  • স্টেপ (৩) আয়রন প্রয়োগের পরবর্তীতে আয়রন রোগীর শরীরে পরিপূর্ণতা হয়েছে কিনা সেটি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
স্টেপ ১: রোগীর আয়রনের পরিমাণ নির্ণয়: রোগীর ওজন ও হিমোগ্লোবিন লেভেল এর উপর নির্ভর করে আয়রন ঘাটতি পুরনের সম্পূর্ণ মাত্রা নির্ধারন করে ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজ ব্যবহার করা হয়। রোগীর সম্পূর্ণ আয়রন এর মাত্রা নিচের চার্ট অনুসারে দেওয়া উচিত।

হিমোগ্লোবিন <১০ গ্রাম/ডে.লি.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি নিচে: ৫০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি থেকে ৭০ কেজি এর নিচে: ১৫০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন >৭০ কেজি: ২০০০ মি.গ্রা.
হিমোগ্লোবিন ১০-১৪ গ্রাম/ডে.লি.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি নিচে: ৫০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি থেকে ৭০ কেজি এর নিচে: ১০০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন >৭০ কেজি: ১৫০০ মি.গ্রা.
হিমোগ্লোবিন >১৪ গ্রাম/ডে.লি.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি নিচে: ৫০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন ৩৫ কেজি থেকে ৭০ কেজি এর নিচে: ৫০০ মি.গ্রা.
  • রোগীর ওজন >৭০ কেজি: ৫০০ মি.গ্রা.
বি: দ্র: রোগীর আয়রনের ঘাটতি আছে কিনা সেটি ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে নির্ণয় করতে হয়।

স্টেপ ২: রোগীর সর্বোচ্চ আয়রন মাত্রা নির্ণয়: আয়রনের প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে ওপরের নির্ধারিত ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজ এর যথাযথ মাত্রা নিম্নলিখিতভাবে প্রয়োগ করা উচিত। ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজের এর একক মাত্রা নিম্নলিখিত মাত্রার ওপরে দেওয়া উচিত না।
  • সর্বোচ্চ দৈহিক ওজনের ১৫ মি.গ্রা./ কেজি পর্যন্ত ইন্ট্রাভেনাস ইঞ্জেকশনের ক্ষেত্রে এবং ২০ মি.গ্রা./ কেজি পর্যন্ত ইন্ট্রাভেনাস ইনফিউশন ক্ষেত্রে।
  • ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজের এর সর্বোচ্চ একক মাত্রা ১০০০ মি.গ্রা. আয়রন পর্যন্ত (সর্বোচ্চ ২০ মি.লি. ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ)।
  • ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজ আয়রনের মাত্রা এক সপ্তাহে ১০০০ মি.গ্রা. এর বেশী দেওয়া যাবে না।
স্টেপ ৩: আয়রন প্রয়োগ পরবর্তী পুনঃ মূল্যায়ন: পৃথকভাবে রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে আয়রন পুনঃ মূল্যায়ন করা হয়। ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজের সর্বশেষ মাত্রা প্রয়োগ করার চার সপ্তাহ পরে রোগীর হিমোগ্লোবিন লেভেল পুনঃ মূল্যায়ন করা উচিত কারণ রোগীকে অবশ্যই যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত ইরাইথ্রোপয়েসিস এবং আয়রনের সঠিক ব্যবহারের জন্য। যদি রোগীর আরও আয়রনের দরকার হয়, সেক্ষেত্রে আয়রনের প্রয়োজনীয়তা উপরোক্ত চার্ট অনুসারে নির্ণয় করা উচিত।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

আনুষ্ঠানিকভাবে এনরিফার এর সাথে ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় কোন তথ্যাদি নেই।

প্রতিনির্দেশনা

ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশনাঃ
  • ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ সক্রিয় উপাদান অথবা এর কোন এক্সিপিয়েন্ট এর প্রতি অতিসংবেদনশীলতা
  • অন্যান্য প্যারেন্টারাল আয়রন উপাদানের ক্ষেত্রে জানা মারাত্নক অতিসংবেদনশীলতা
  • আয়রন শূন্যতাজনিত অ্যানিমিয়া না হলে যেমন- অন্যান্য মাইক্রোসাইটিক অ্যানিমিয়া
  • অতিরিক্ত আয়রন প্রমানিত অথবা আয়রনের ব্যবহার বাধাগ্রস্থ

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

এনরিফার এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সচরাচর দেখা যায় না এবং সাধারণত সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলেও রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করার প্রয়োজন নাই।

সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল- বমি বমি ভাব সাথে মাথা ব্যথা, মাথাঘোরা এবং উচ্চরক্তচাপ, ইঞ্জেকশন সাইটে প্রতিক্রিয়া, এলানিন অ্যামাইনোট্রান্সফারেজ এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রক্তে ফসফরাস এর পরিমাণ কমে যাওয়া।

সচরাচর দেখা যায় না এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল- অতিসংবেদনশীলতা, ডিসগুইসিয়া, ট্যাকিকারডিয়া, নিম্ন রক্তচাপ, মুখলাল হয়ে যাওয়া, ডিসনিয়া, বদহজম, পেটে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, প্ররাইটিস, ছুলি, ইরাইথিমা, র‍্যাশ, পেশির ব্যথা, পিঠে ব্যথা, আর্থলজিয়া, পেশির খিচুনি, জ্বর জ্বর ভাব, অবসাদ, বুকে ব্যথা, পেরিফেরাল ইডিমা, শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস, অ্যাসপারেট আমাইনোট্রান্সফারেজে বৃদ্ধি, গামা গ্লুটামাইল ট্রান্সফারেজে বৃদ্ধি, রক্তে ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজিনেজ বৃদ্ধি এবং রক্তে অ্যালকাইন ফসফেট বৃদ্ধি।

বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল- অ্যানাফাইল্যাকটয়েড প্রতিক্রিয়া, জ্ঞান হারানো, দুশ্চিন্তা, পেলবাইটিস, সিনকোপ, প্রিসিনকোপ, শ্বাসনালীর সংকোচন, পেটফাপা, অ্যানজিও এডিমা, বিবর্ণতা, মুখ ফোলা, কঠিন্যতা, অস্থিরতাবোধ এবং ইনফ্লুয়েজার মত অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ গর্ভাবতী মহিলাদের ব্যবহারের কোন তথ্যাদি নেই। পর্যাপ্ত সাবধাণতার সাথে ঝুঁকি অথবা সুবিধা অনুধাবন করে গর্ভাবস্থায় দেওয়া উচিত নয়। প্রাণীদের উপর পরিচালিত রিপোর্টে দেখা যায় ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ যে আয়রন নির্গত করে তা প্লাসেন্টাল বেরিয়ার ক্রস করতে পারে এবং গর্ভাবস্থায় ব্যবহারে ভ্রূণ এর দেহের কাঠামো বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। যদি ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজ ব্যবহারে অনাগত শিশুর ঝুঁকির চেয়ে সুবিধা বেশি হয় সেক্ষেত্রে ২য় ত্রৈমাসিক ও ৩য় ত্রৈমাসিক এ সীমিত আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেরিক কার্বক্সিম্যাল্টোজ মাতৃদুগ্ধ নিঃসৃত হলেও সাধারণত শিশুকে আক্রান্ত করে না।

সতর্কতা

অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া: এনরিফার ব্যবহারে মারাত্নক সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া সহ এনাফাইল্যাকটিক টাইপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে যা জীবনের জন্য মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ন হতে পারে। রোগীর শক, চিকিৎসাগতভাবে গুরুত্বপূর্ন নিম্নরক্তচাপ, জ্ঞান হারানো এবং মানসিক শক্তি নিঃশেষ হতে পারে। এনরিফার ইনফিউশন প্রয়োগের নূন্যতম ৩০ মিনিট পর পর্যন্ত অতিসংবেদনশীলতার লক্ষণ ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। এনরিফার শুধুমাত্র প্রয়োগ করা যাবে যখন মারাত্নক সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ায় চিকিৎসকবৃন্দ এবং চিকিৎসা তাড়াতাড়ি প্রাপ্য। অন্যান্য মারাত্নক বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সাথে অত্যাধিক সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ায় সাথে অত্যাধিক সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া সহ ফুসকুড়ি, র‍্যাস, ছুলি, শ্বাসকষ্ট এবং নিম্নরক্তচাপ হতে পারে।

উচ্চরক্তচাপ: অস্থায়ী সিস্টেলিক রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং কখনও মুখে লালচে ভাব, ঘুম ঘুম ভাব, বমি বমি ভাব দেখা যায়। এইসব বৃদ্ধি সাধারণত এনরিফার দেওয়ার পর পর ঘটে এবং ৩০ মিনিটের ভিতর কমে যায়। প্রতিবার এনরিফার প্রয়োগের পর উচ্চরক্তচাপ এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলো পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে।

ল্যাবরেটরি পরীক্ষার পরিবর্তন: এনরিফার প্রয়োগের ২৪ ঘন্টায় এনরিফার আয়রনের পরিমাপে ল্যাবরেটরি পরীক্ষার সেরাম আয়রনের পরিমাণ বেশী অনুমান করা হয়।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

হেমোডায়ালাইসিস ডিপেনডেন্ট রোগী: যে সমস্ত রোগীর হেমোডায়ালাইসিস ডিপেনডেন্ট ক্রনিক কিডনী ডিজিজ আছে এই সমস্ত রোগীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ একক মাত্রা ২০০ মি.গ্রা. এর ওপরে প্রয়োগ করা উচিত নয় ।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: শিশুদের ক্ষেত্রে ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজ ব্যবহারের কোন তথ্যাদি নেই এজন্য ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এর 'ব্যবহার না করাই ভালো।

মাত্রাধিক্যতা

ফেরিক কার্বক্সিম্যান্টোজের অতিরিক্ত ব্যবহারে স্টোরেজ সাইটে আয়রন জমা হতে পারে যা হেমোসিডারোসিস সৃষ্টি করতে পারে। আয়রনের প্যারামিটার যেমন সেরাম ফেরিটিন এবং ট্রান্সফেরিন এর সম্পৃক্ততা আয়রনের জমা হওয়াতে সহায়তা করে। যদি আয়রনের অ্যাকুউমুলেশন ঘটে তাহলে স্ট্যান্ডার্ড মেডিকেল প্র্যাকটিস অনুসারে চিকিৎসা দিতে হবে যেমন-আয়রন চিলেটর ব্যবহার বিবেচনা করা।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Parenteral Iron Preparations

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা (৩০°সে. এর নিচে) ও শুকনো স্থানে রাখুন। ফ্রিজে রাখবেন না। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
Pack Image of Enrifer 500 mg/10 ml Injection Pack Image: Enrifer 500 mg/10 ml Injection
Thanks for using MedEx!
How would you rate your experience so far?