নির্দেশনা

মক্সিফ্লক্সাসিন এবং ডেক্সামিথাসন চোখের ড্রপস্ বিভিন্ন ধরনের সাসেপটিবল জীবাণু দ্বারা সংঘটিত চোখের সংক্রমণে নির্দেশিত। এটি চোখের সার্জারির পরবর্তী অবস্থায় চোখের বিভিন্ন সংক্রমণ ও প্রদাহের ক্ষেত্রেও নির্দেশিত।

উপাদান

প্রতি মি.লি. তে আছে-
  • মক্সিফ্লক্সাসিন হাইড্রোক্লোরাইড বিপি যা মক্সিফ্লক্সাসিন ৫ মিগ্রা. এর সমতুল্য এবং
  • ডেক্সামিথাসন সোডিয়াম ফসফেট ইউএসপি যা ডেক্সামিথাসন ফসফেট ১ মি.গ্রা. এর সমতুল্য।

ফার্মাকোলজি

মক্সিফ্লক্সাসিন একটি চতুর্থ প্রজন্মের ফ্লোরিনযুক্ত কুইনোলন। মক্সিফ্লক্সাসিন টোপোআইসোমারেজ-২ (ডিএনএ গাইরেজ) এবং টোপোআইসোমারেজ-৪ কে বাধা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। ডিএনএ গাইরেজ একটি অপরিহার্য এনজাইম যা ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ রেপ্লিকেশন, ট্রান্সক্রিপশন এবং মেরামতের সাথে জড়িত। টোপোআইসোমারেজ-৪ একটি এনজাইম যা ব্যাকটেরিয়ার কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোসোমাল ডিএনএ-কে বিভক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডেক্সামিথাসন একটি কর্টিসন উপজাত, যা ১৬-আলফা পজিশনে মিথাইল গ্রুপ এবং ৯-আলফা পজিশনে ফ্লোরিন থাকায় উচ্চ ক্রিয়াকলাপ প্রদর্শন করে। অন্যান্য গ্লুকোকর্টিকয়েডের ন্যায় এটিও অ্যালার্জি, এক্সজুডেট ও প্রলিফারেশন বিরোধী হিসেবে কাজ করে। ডেক্সামিথাসনের প্রধান কাজ প্রস্টাগ্ল্যান্ডিন সংশ্লেষণ এর প্রথম ধাপ ফসফোলাইপেজ এ-২ কে বাঁধা দেয়া। এছাড়াও ডেক্সামিথাসন প্রদাহের স্থানে নিউট্রফিল এর কেমট্যাক্টিক অনুপ্রবেশকে বাঁধা দেয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

চোখের সংক্রমণ ও সার্জারি পরবর্তী চোখের প্রদাহের ক্ষেত্রে:  এক ফোটা করে দিনে চারবার সার্জারির আগের দিন থেকে শুরু করে সার্জারি পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত চোখে প্রয়োগ করতে হবে।

ছানি অস্ত্রোপচার রোগীদের ক্ষেত্রে:  অস্ত্রোপচারের দিন অস্ত্রোপচারের পর তাৎক্ষনিকভাবে চোখে প্রয়োগ করতে হবে।

ল্যাসিক প্রতিসরণ অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে:  অস্ত্রোপচারের দিন অস্ত্রোপচারের কমপক্ষে ১৫ মিনিট পর চোখে প্রয়োগ করতে হবে।

সাসেপটিবল জীবাণু দারা সংঘটিত চোখের সংক্রমণের ক্ষেত্রে:  এক ফোটা করে দিনে চারবার ৭ দিন চোখে প্রয়োগ করতে হবে।

প্রতিনির্দেশনা

অন্যান্য কুইনোলন এবং ঔষধের কোনও উপাদানের সাথে সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়। গ্লুকোমা এবং কর্নিয়া বা স্ক্লেরা জনিত রোগের ক্ষেত্রে, ভাইরাস, ছত্রাক বা মাইকোব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট চোখের প্রদাহ। এপিথিলিয়াল হার্পিস সিমপ্লেক্স কেরাইটিস (ডেন্ড্রিটিক কেরাইটিস), ভ্যাকসিনিয়া, ভেরিসেলা এবং কর্নিয়ার ও কঞ্জাঙ্কটিভার বিভিন্ন ভাইরাল রোগসমূহ। চোখের মাইকোব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ। অকুলার স্ট্রাকচারের ছত্রাকজনিত রোগে নির্দেশিত নয়।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

মক্সিফ্লক্সাসিন: চোখের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে কনজাংটিভাইটিস জনিত দৃষ্টির তীক্ষ্ণতা হ্রাস, চোখের শুষ্কতা, কর্নিয়াজনিত প্রদাহ, চোখের অস্বস্তি, চোখ লাল হওয়া, চোখে ব্যথা, চোখে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, চুলকানী ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

ডেক্সামিথাসন ফসফেট: চোখের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে দৃষ্টির তীক্ষ্ণতাজনিত সমস্যা, চোখের ছানি পড়া, এবং চোখের গৌণ সংক্রমণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ও সুনিয়ন্ত্রিত গবেষণা করা হয়নি।  তবে যদি নবজাতকের সমস্যার চেয়ে স্তন্যদানকারী মায়ের উপকার বেশি হয় সেক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। মক্সিফ্লক্সাসিন ও ডেক্সামিথাসন কম্বিনেশন চোখের ড্রপস স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতা

যদি মক্সিফ্লক্সাসিনে অ্যালার্জি দেখা দেয় তবে ব্যবহার বন্ধ করুন এবং ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে অপটিক নার্ভের ক্ষতির সাথে সাথে চোখের হাইপারটেনশন এবং গ্লুকোমা, চোখের তীক্ষনতার ত্রুটি, পোস্টেরিওর সাবক্যাপ্সুলার ক্যাটার‌্যাক্ট সৃষ্টি বা সেকেন্ডারি সংক্রমণ হতে পারে। চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। টপিক্যাল কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে কর্নিয়া বা স্ক্লেরা পাতলা হয়ে ছিদ্র সৃষ্টি করতে পারে। চোখের তীব্র শুকনো অবস্থায় স্টেরয়েড ব্যবহার কোন সংক্রমণকে গোপন বা বিদ্যমান সংক্রমণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: সব রোগীদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাত্রার কোন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: শিশুদের ক্ষেত্রে মক্সিফ্লক্সাসিন ও ডেক্সামিথাসন কম্বিনেশন চোখের ড্রপসের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Ophthalmic Steroid preparations

সংরক্ষণ

আলো থেকে সুরক্ষিত ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে একটি শীতল জায়গায় সংরক্ষন করুন। একবার কন্টেইনারটি খোলার পরে অবশ্যই ২৮ দিনের মধ্যে ব্যবহার করা উচিত এবং ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত ঘরের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যেতে পারে। ২৮ দিনের পরে আর ব্যাবহার করা উচৎ না। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।