Tablet

সিটাক্রিট ট্যাবলেট

৫০ মি.গ্রা.
Unit Price: ৳ 15.00 (3 x 10: ৳ 450.00)
Strip Price: ৳ 150.00

নির্দেশনা

একক এবং সংযুক্ত চিকিৎসা হিসাবে: সিটাগ্লিপ্টিন টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলাইটাসের প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য খাদ্যাভ্যাস ও ব্যয়ামের সাথে সহায়ক হিসাবে নির্দেশিত।

ওষুধটি ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতা সমূহ: যেসকল রোগীদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস ম্যালাইটাস রয়েছে অথবা এটি ডায়াবেটিক কিটোএ্যাসিডোসিস এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ, এই সকল ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপ্টিন কার্যকরী নয়। প্যানক্রিয়াটাইটিসের (অগ্নাশয়ের প্রদাহ) ইতিহাস আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপ্টিন প্রয়োগ করে গবেষনা করা হয়নি। যেসব রোগীদের অগ্নাশয়ের প্রদাহের (প্যানক্রিয়াটাইটিস) পুর্ব ইতিহাস ছিল তাদের ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপ্টিন ব্যবহারের ফলে প্যানক্রিয়েটাইটিস হবার ঝুঁকি বেড়ে যায় কিনা তা জানা যায়নি।

ফার্মাকোলজি

সিটাগ্লিপটিন, ডাইপেপটাইডিল পেপটাইডেজ ৪ (ডিপিপি-৪) প্রতিবন্ধক। এটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলাইটাসের রোগীর ক্ষেত্রে ইনক্রেটিন হরমোনের অকার্যকর হওয়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করার মাধ্যমে কার্যকারিতা প্রদর্শন করে। সিটাগ্লিপ্টিন এর মাধ্যমে এ্যাক্টিভ ইনট্যাক্ট (কার্যকর এবং সজীব) হরমোনের ঘনত্ব বেড়ে যায়। যার ফলে ঐ হরমোনের কার্যকারিতাও বেড়ে যায় এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

সাধারণত অস্ত্র হতে সারা দিন যাবৎ ইনক্রেটিন জাতীয় হরমোন যেমন- গ্লুকাগন লাইক পেপটাইড-১ (জিএলপি) এবং গ্লুকোজ ডিপেনডেন্ট ইনসুলনোট্রপিক পলিপেপটাইড (জিআইপি) নিঃসৃত হয় এবং এগুলির মাত্রা খাদ্য গ্রহণ করার পর বৃদ্ধি পায়। আর এই হরমোনগুলো ডিপিপি-৪ দ্বারা দ্রুতই অকার্যকর হয়ে যায়। ইনক্রেটিন হরমোন হলো শরীরের অভ্যন্তরীন ব্যবস্থার একটি অংশ যা শর্করার ভারসাম্যের শরীর বৃত্তীয় প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

যখন রক্তে শর্করার ঘনত্ব স্বাভাবিক থাকে বা বেড়ে যায় তখন জিএলপি-১ এবং জিআইপি ইনসুলিনের সংশ্লেষন বাড়িয়ে দেয় এবং প্যানক্রিয়াটিক (অগ্নাশয়ের) বিটা কোষ থেকে ইনসুলিনের নিঃসরণ ঘটায় যা সাইক্লিক এএমপি সংশ্লিষ্ট আস্তঃকোষীয় সংকেতের মাধ্যমে হয়ে থাকে।

জিএলপি-১ প্যানক্রিয়াটিক (অগ্নাশয়ের) আলফা কোষ থেকে গ্লুকাগনের নিঃসরনও কমায় যা যকৃত হতে গ্লুকোজের উৎপাদনও কমিয়ে দেয়। এ্যাক্টিভ ইনক্রেটিন হরমোনের এর পরিমান বৃদ্ধি এবং দীর্ঘস্থায়ীত্বের মাধ্যমে সিটাগ্লিপ্টিন ইনসুলিনের নিঃসরণ বাড়ায় এবং গ্লুকাগন এর পরিমান কমায় যা রক্তপ্রবাহে গ্লুকোজ এর পরিমানের উপর নির্ভরশীল। সিটাগ্লিপ্টিন শুধুমাত্র বেছে বেছে ডিপিপি-৪ এর কার্যকারীতাকে বাধাদান করে এবং এটি ইনভিট্রোর ঘনত্বে ডিপিপি-৮ অথবা ডিপিপি-৯ এর কার্যকারিতায় বাধা প্রদান করে না।

মাত্রা ও সেবনবিধি

সিটাগ্লিপটিন এর নির্দেশিত সেবনমাত্রা হচ্ছে ৫০ মিগ্রা দিনে দুইবার অথবা ১০০ মিগ্রা দিনে একবার। এটা খাদ্য গ্রহনের সাথে অথবা খালি পেটে সেবন করা যায়।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্যান্য ওষুধের উপর সিটাক্রিট এর প্রভাব: মেটফরমিন, গ্লাইবুরাইড, সিম্ভাস্ট্যাটিন, রসিগ্লিাটাজোন, ওয়ারফেরিন, মুখেসেব্য জন্মনিরোধকের উপর সিটাক্রিট এর কোন কার্যকরী প্রভাব নেই।

ডিগক্সিন: সিটাক্রিট সামান্য পরিমানে ডিগক্সিনের গড় ঘনত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কোন ওষুধেরই মাত্রা সমন্বয়ের প্রয়োজন নাই।

প্রতিনির্দেশনা

যেসকল রোগীদের সিটাগ্লিপটিন এর প্রতি মারাত্মক হাইপারসেনসিটিভিটি (তীব্র এ্যালার্জিক) রিঅ্যাকশন যেমন- অ্যানাফাইল্যাক্সিস বা এ্যানজিওইডিমা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপটিন নির্দেশিত নয়।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

প্রচলিত বিরূপ প্রতিক্রিয়াসমূহ হল: মাথাব্যথা, উর্দ্ধ শ্বাসনালীর সংক্রমন এবং ন্যাসোফেরিনজাইটিস (নাসিকা রন্ধ্র ও ফ্যারিংসের প্রদাহ)। সিটাগ্লিপ্টিন এর সাথে সালফোনাইল ইউরিয়ার যৌথ ভাবে প্রয়োগ করলে অথবা ইনসুলিনের সাথে প্রয়োগ করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের পরিমান তীব্র ভাবে কমে যাওয়া) হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি বি। ইঁদুর ও খরগোশের উপর প্রজনন সম্পর্কিত গবেষনা করা হয়েছে। যদি খুব বেশী প্রয়োজন হয় তখনি শুধুমাত্র গর্ভাবস্থায় ওষুধটি ব্যবহার করা উচিত। কারণ প্রাণীদের উপর করা প্রজনন সম্পর্কিত গবেষণা অনেক ক্ষেত্রে মানুষের প্রজনন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। স্তন্যদান কালে সিটাগ্লিপটিন স্তন্যদানকারী ইঁদুরের দুধে নিঃসৃত হয়। যার প্লাজমা (রক্তরস) ও দুধের অনুপাত হচ্ছে ৪:১। সিটাগ্লিপ্টিন মনুষ্য মাতৃদুগ্ধে নিঃসরিত হয় কিনা তা জানা যায়নি। যেহেতু অনেক ওষুধই মাতৃদুগ্ধে নিঃসরিত হয় তাই স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপটিন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত।

সতর্কতা

যদি কোন রোগীর ক্ষেত্রে সন্দেহ করা হয় যে তার প্যানক্রিয়াটাইটিস রয়েছে সেক্ষেত্রে অবশ্যই দ্রুত সিটাক্রিট বন্ধ করে দিতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বৃক্কীয় অসমকার্যকারীতায় অপর্যাপ্ততা রয়েছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার: মাঝারি কিংবা তীব্র বৃক্কীয় অসমকার্যকারী রোগী এবং এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিস (ইএসআরডি) আছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে সেবন মাত্রা পরিবর্তন করতে হবে।

অন্যান্য হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ওষুধের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে: যখন সিটাগ্লিপ্টিন অন্যান্য ওষুধের ক্ষেত্রে যৌথ ভাবে ব্যবহার করা হয়, তখন হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমাতে সালফোনাইলইউরিয়া বা ইনসুলিনের এর মাত্রা সমন্বয় করতে হবে।

অতিসংবেদনশীলতা: বাজারজাত করার পরে রোগীদের সিটাক্রিট দ্বারা চিকিৎসাকালে গুরুতর এ্যালার্জি এবং হাইপারসেনসিটিভিটি প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে। যেমন- অ্যানাফাইল্যাক্সিস, এ্যানজিওইডিমা এবং স্টিভেনস জনসন সিনড্রোমসহ অতিমাত্রার ত্বকের সমস্যা। যদি অতিসংবেদনশীলতা ধরা পরে তাহলে সিটাক্রিট বন্ধ করতে হবে এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বিকল্প চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

অপ্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: ১৮ বছরের কম বয়সের রোগীদের ক্ষেত্রে সিটাক্রিট  এর নিরাপত্তা ও কার্যকারীতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: ওষুধটি বৃক্কের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়। যেহেতু বয়স্ক রোগীদের বৃক্কীয় অসমকার্যকারিতার সমস্যা থাকে তাই তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে সেবন মাত্রা নির্ধারন করতে হবে এবং ওষুধটি প্রয়োগ করার পূর্বে এবং পরবর্তী সময়ে বৃক্কের কার্যকরীতা পরীক্ষা করতে হবে।

যেসকল রোগীর মৃদু বৃক্কীয় অসমকার্যকারিতা
(ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স ৫০ মিলি  মিনিট এর কম বা সেরাম ক্রিয়োটিন লেভেল পুরুষদের ১.৭ মিগ্রা/ডিএল এবং মহিলাদের ১.৫ মিগ্রা/ ডিএল) রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সেবন মাত্রা পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই।

যেসকল রোগীর মাঝারি ধরণের বৃক্কীয় অসমকার্যকারিতা (ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স ৩০ এর কম থেকে ৫০ মিলি/মিনিট এর মধ্যে, বা সেরাম ক্রিয়েটিনিন লেভেল পুরুষদের ১৭ থেকে ৩.০ মিগ্রা/ডিএল এবং মহিলাদের ১৫ থেকে ২.৫ মিগ্রা/ডিএল) রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সিটাক্রিট এর মাত্রা হচ্ছে ৫০ মিগ্রা দিনে একবার।

যেসকল রোগীর তীব্র বৃক্কীয় অসমকার্যকারিতা (ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স ৩০ মিলি/ মিনিট এর কম অথবা সেরাম ক্রিয়েটিনিন লেভেল পুরুষদের ৩.০ মিগ্রা/ডিএল এবং মহিলাদের ২.৫মিগ্রা/ডিএল) কিংবা যেসকল রোগীদের বৃক্ক সম্পুর্ণ অকার্যকর হয়ে গেছে এবং যাদের হেমোডায়ালাইসসি বা পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিসি করতে হয় তাদের ক্ষেত্রে সিটাগ্লিপ্টিনের সেবন মাত্রা হচ্ছে ২.৫ মিগ্রা দিনে একবার।

মাত্রাধিক্যতা

সুস্থ ব্যক্তির উপর নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের (বৈজ্ঞানিক গবেষণায়) সময় একক মাত্রায় ৮০০ মিগ্রা পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়েছে। গবেষনায় দেখা গেছে ৮০০ মিগ্রা সিটাক্রিট সেবন করলে QTc সর্বাধিক গড় ৮০ msec বেড়ে যায় এবং এই গড় প্রভাব চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত নয়। ক্লিনিক্যাল স্টাডিতে ৮০০ মিগ্রা এর অধিক মাত্রার কোন অভিজ্ঞতা নেই। প্রতিদিন ৬০০ মিগ্রা করে ১০ দিন এবং ৪০০ মিগ্রা করে ২৮ দিন সিটাক্রিট এর সাথে ফেজ-১ এ একাধিক ডোজ স্টাডিতে মাত্রা সংক্রান্ত কোন চিকিৎসাগত বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

মাত্রাধিক্যের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করাই যুক্তি সম্মত। যেমন পরিপাকতন্ত্র থেকে অশোষিত বস্তু সরিয়ে ফেলা, ক্লিনিক্যালি মনিটর করা (ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম) এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী সহায়ক চিকিৎসা প্রদান করা। সিটাক্রিট মৃদুভাবে ডায়ালাইসসের মাধ্যমে অপসারণ যোগ্য। ক্লিনিক্যাল স্টাডিতে দেখা গেছে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা হেমোডায়ালাইসিস সেশন এ প্রায় ১৩.৫% মাত্রা অপসারন করা যায়। যদি ক্লিনিক্যালি যথাযথ বলে বিবেচনা করা হয় তবে দীর্ঘমেয়াদী হিমোডায়ালাইসিস দেয়া যেতে পারে। সিটাক্রিট পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস দ্বারা অপসারণ করা যায় কিনা তা জানা যায়নি।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Dipeptidyl Peptidase-4 (DPP-4) inhibitor

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে ২৫ ডিগ্রি সে. এর নিচে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষণ করুন। সমস্ত ওষুধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বিতরণযোগ্য।