নির্দেশনা

ইকোনাজল নাইট্রেট বিপি এবং ট্রাইএ্যমসিনোলন এসিটোনাইড বিপি যেসব চিকিৎসায় নির্দেশিতঃ
  • একজিমাটোস মাইকোসেস
  • সোরিয়াসিস
  • টিনিয়া পেডিস (অ্যাথলেটস ফুট)
  • টিনিয়া করপোরিস (রিং ওরম)
  • টিনিয়া ক্রুরিস (জক ইটছ)
  • ইনফ্লামেটোরি ইন্টারট্রিগো
  • ডায়াপার ডার্মাটাইটিস
অনিকোমাইকোসিস- অনিকোমাইকোসিসে স্থানিক চিকিৎসা হিসেবে ইকোনাজল/ ট্রাইএ্যমসিনোলন ক্রীম মুখে এন্টিমাইকোটিক এর সাথে মিলিতভাবে দেয়া যায় ।

বিবরণ

এই ক্রীম একটি বিস্তৃত বর্ণালীর ছত্রাকরোধী যার প্রদাহরোধী, চুলকানিরোধী ও এলার্জিরোধী প্রভাব রয়েছে। এই ক্রীমটি একটি শক্তিশালী ছত্রাকনাশক 'ইকোনাজোল নাইট্রেট' এবং এর ব্যাকটেরিয়ারোধী কার্যকারিতাকে উদ্বুদ্ধ এবং মারাত্নক প্রদাহকে প্রশমিত করার লক্ষ্যে 'ট্রাইএ্যমসিনোলন এ্যাসিটোনাইড' এর সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত বলে গ্রাম-পজিটিভ জীবাণু ও ছত্রাকের মিশ্র সংক্রমণ একজিমা, পুনঃপ্রদাহে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখে ও ত্বকের ভাঁজে ব্যাকটেরিয়াজনিত প্রদাহে বিশেষ কার্যকারিতা প্রদর্শন করে। ডার্মাটোফাইটস যেমন- ট্রাইকোফাইটন, ইপিডারমোফাইটন, মাইক্রোস্পোরাম, ক্ল্যাডোস্পোরিয়াম, বিবিধ ঈস্ট, যেমন- ক্যানডিডা, ক্রিপ্টোকক্কাস নিওফরম্যানস, টরোলুপসিস, রডোটরোলা, বিবিধ মোল্ড, ছত্রাকসমূহ, যেমন- স্কপোল্যারিওপসিস ব্রেভিক্যালিস, অ্যাসপারজিলাস ফ্ল্যাভাস, হিসটোপাজমা ক্যাপসুল্যাটাম, বাস্টোমাইকোসিস ডার্মাটিটাইডিস এবং অন্যান্য। সেই সাথে ম্যালাসেজিয়া ফারফার ও নোকার্ডিয়া মিনোটিস্যিমা দ্বারা সৃষ্ট সকল প্রকার ডার্মাটোমাইকোসিস ইকোনাজোলের কার্যকারিতার আওতায় পড়ে।

অধিকন্তু, স্ট্রেপ্টোকক্কাস পায়োজিনেস ও স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াস এর কিছু শ্রেনীসহ গ্রাম-পজিটিভ কক্কাই ও ব্যাসিলাই-এর বিরুদ্ধে এর জীবাণুরোধী কার্যকারিতা রয়েছে। এটি ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজাইনালিস, ভারসিকালার এবং ব্যালানাইটিস-এর বিরুদ্ধেও কার্যকর। অন্যদিকে, ট্রায়ামসিনোলোন এ্যাসিটোনাইড একটি কৃত্রিম স্টেরয়েড যা শুধু প্রদাহ প্রক্রিয়ার শুরুর প্রতিক্রিয়াগুলো প্রতিহত করে না বরং পরবর্তী প্রতিক্রিয়াগুলোকেও ব্যাহত করে।

ফার্মাকোলোজিক্যাল বৈশিষ্ট্য: ইকোনাজোল ত্বকে ব্যবহারের পর খুব সামান্যই (<০.১%) শোষিত হয়। যার ফলে সেরামে কোন সক্রিয় ঔষধ পাওয়া যায়না। কিন্তু ট্রায়ামসিনোলোন এ্যাসিটোনাইড ভালভাবেই ত্বকে শোষিত হয়।

ফার্মাকোলজি

ইকোনাজল ছত্রাক কোষ ঝিল্লির ব্যাপ্তিযোগ্যতা পরিবর্তন করে, আর এন এ, প্রোটিন সংশ্লেষণ এবং লিপিড বিপাকে বাধা দেয়। ট্রাইএ্যমসিনোলনের মূলত গ্লুকোকরটিকয়েড কার্যকলাপ আছে। এটি পলিমোরফোনিউক্লিয়ার লিউকোসাইট হস্তান্তরে বাধা দান করে এবং কৈশিক ব্যাপ্তিযোগ্যতা কমিয়ে দেয় যার ফলে প্রদাহ কমে যায়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

প্রাপ্তবয়স্ক: ত্বকের ক্ষতস্থানে এই ক্রিম অল্প পরিমাণে দিনে ২ বার প্রয়োগ করা উচিত, বিশেষ করে সকালে ১ বার এবং সন্ধ্যায় ১ বার। ব্যানডেজ দিয়ে আবৃত করে অথবা শরীরের ত্বকের বড় অংশ জুড়ে এই ক্রিম ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রদাহ জনিত লক্ষণ সমূহ হ্রাস না পাওয়া পর্যন্ত এই ক্রিম দ্বারা চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া উচিত, তবে তা ২ সপ্তাহের বেশি সময় জুড়ে নয়। এই ক্রিম দ্বারা ২ সপ্তাহ চিকিৎসা করার পর প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র ইকোনাজোল বা ইকোনাজোল নাইট্রেট যুক্ত ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা করতে হবে।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে: শরীরের ওজনের তুলনায় ত্বকের পৃষ্ঠভাগ বড় হওয়ার কারণে ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার জনিত এইচপিএ এক্সিস সাপ্রেশন এবং কুশিংস সিন্ড্রোম পরিলক্ষিত হয় (অতিরিক্ত কর্টিকোস্টেরয়েড হরমোন উৎপাদনের সংবেদনশীলতা) যা বয়ষ্কদের তুলনায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশী দেখা যায়। তাই এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ইকোনাজল: যেসব যৌগিক পদার্থের বিপাক CYP3A4/2C9 ধারা হয়, মুখে এটিকোয়াগুলান্ট (ওয়ারফারিন এবং এসিনোকোমারল)।

ট্রাইএ্যমসিনোলন: প্লাজমা স্যালিসাইলেট পরিমাণ কমিয়ে দেয়। জিআই ব্লিডিং এবং এনএসএআইডিস এর সাথে আলসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এন্টিডায়াবেটিক ওষুধের প্রভাব কমিয়ে দেয়। এমফোটেরিসিন বি, বিটা-ব্লকার, পপটাশিয়াম-ডিপ্লিটিং ডাইইউরেটিক্স, থিয়োফাইলিন এর সাথে হাইপারকেলেমিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।  ট্রাইএ্যমসিনোলন এর অপসাৱণ বেড়ে যায় যদি সিক্লোসপোরিন, কারবামাযেপিন, ফেনিঠায়িন, বারবিটিউরেটস এবং রিফাম্পিসিন এর সাথে ব্যবহার করলে।

প্রতিনির্দেশনা

এই ক্রিম নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়-
  • যে ব্যাক্তি এর কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল।
  • অন্য যেকোন ত্বকে ব্যবহার্য্য কর্টিকোস্টেরয়েড এর মতো এই ক্রিমও কোন কোন নির্দিষ্ট ত্বকীয় অবস্থার জন্য নির্দেশিত নয়, যেমন টিউবারকুলাস, ভেরিসেলা, হার্পিস সিমপ্লেক্স বা অন্য ভাইরাস জনিত সংক্রমণ বা সদ্য টিকা দেওয়া স্থান।
  • ডেকিউবিটাস আলসার: ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকজনিত চামড়ায় সংক্রমণ (উদাহরন- ত্বকের টিউবারকুলোসিস, ত্বকের সিফিলিস, হার্পিস সিমপ্লেক্স, হার্পিস জোষ্টার, চিকেন পক্স)।
  • রোজাসেয়া বা রোজাসেয়ার মত ডার্মাটাইটিস।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

বিরলক্ষেত্রে, সাময়িক স্থানিক জ্বালাতন, চুলকানি এবং লালতা দেখা দিতে পারে ব্যবহারের সাথে সাথেই।  ইকোনাজলের এলার্জিক প্রভাব খুবই কম এবং খুবই সহনীয়, এমনকি কোমল ত্বকের জন্যও।  দীর্ঘদিন করটিকোস্টেরয়েড ব্যবহার অ্যাড্রেনালিন দমিয়ে রাখার ঝুঁকি থাকে, বিশেষত নবজাতক এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অথবা যখন ওক্লুসিভ ড্রেসিং প্রয়োগ করা হয়।  নবজাতকদের ন্যাপকিন ওক্লুসিভ ড্রেসিং হিসেবে কাজ করে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায়: ইকোনাজল নয় কিন্তু ট্রাইএমসিনোলন এসিটোনাইড প্লাসেন্টা অতিক্রম করে এবং বাহ্যিক করটিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার গর্ভবতী ক্ষেত্রে ভ্রুণের ক্ষতি করে ।  মানুষের ক্ষেত্রে এই প্রভাব পরিলক্ষিত নয় ।  তবুও গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘকালীন বাহ্যিক স্টেরয়েড ব্যবহার না করা ভাল ।  

স্তন্যদানকালীন: খুবই সামান্য পরিমাণ ইকোনাজল এবং কিছু পরিমাণ ট্রাইএমসিনোলন মায়ের দুধ দিয়ে নির্গত হতে পারে ।  তাই, এই ওষুধ স্তন্যদানকালীন সময় দেয়া যাবেনা যদি দেয় তাহলে শিশুকে দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে ।

সতর্কতা

  • শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য। এই ক্রিম চোখে ব্যবহার কিংবা মুখে সেবনের জন্য নয়।
  • যদি কোন প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায় যে, অতিসংবেদনশীলতা বা রাসায়নিক প্রদাহ হবে তাহলে ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
  • ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করলে তা পর্যাপ্ত শোষিত হয়ে পুরো শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন এড্রিনাল সাপ্রেশন। রক্তে শোষনের পরিমাণ বিভিন্ন কারণে বেড়ে যেতে পারে, যেমন ত্বকের অধিক জায়গা জুড়ে ব্যবহার করলে,ক্ষতযুক্ত ত্বকে ব্যান্ডেজ দিয়ে আবৃত করে ব্যবহার করলে এবং দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করলে।
  • ত্বকে ব্যবহৃত কর্টিকোস্টেরয়েড ত্বক পাতলা এবং ক্ষয় হওয়া, ত্বকে রেখা তৈরি হওয়া, কৈশিকনালির প্রসারণ এবং ত্বকে রক্তবর্ণের দাগ তৈরির সাথে সম্পর্কিত।
  • ত্বকে ব্যবহৃত কর্টিকোস্টেরয়েড অতিমাত্রায় সংক্রমণ বা সুযোগ সন্ধানী জীবানুর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
শিশু: শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায়, শিশুর ত্বকের প্রকৃতি এবং শরীরের ওজনের তুলনায় বৃহত্তর ত্বকের পৃষ্ঠের কারণে শিশুটির ত্বকের মাধ্যমে কর্টিকোস্টেরয়েডের বর্ধিত শোষণ হতে পারে। এই ক্রিম শিশুদের সল্প সময়ের জন্য (২ সপ্তাহের কম) এবং ত্বকের ছোট অংশে (শরীর পৃষ্ঠের ১০% এর কম) ব্যবহার করা উচিৎ।

কর্টিকোস্টেরয়েডের সিস্টেমিক এবং ট্রপিক্যাল ব্যবহারে দর্শনে ব্যাঘাতের সৃষ্টি হতে পারে। যদি রোগীর অস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি বা দৃষ্টির ব্যাঘাতের অন্যান্য উপসর্গগুলি দেখা যায়, তাহলে সম্ভাব্য কারণ যার মধ্যে ক্যাটার‍্যাক্ট, গ্লুকোমা অথবা সেন্ট্রাল সেরাস কোরিওরেটিনোপ্যাথির মত দুরারোগ্য ব্যাধি থাকতে পারে তা নিরীক্ষণের জন্য অপথালমোলজিস্টের কাছে রেফার করা যেতে পারে। এই ক্রিম আবৃত অবস্থায় (ব্যান্ডেজ, ইত্যাদি) ব্যবহার করা যাবে না। ত্বকের পরিবর্তন এড়ানোর জন্য এই ক্রিম সতর্কতার সাথে মুখে ব্যবহার করতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

এই ক্রিম শুধুমাত্র বাহ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য। ত্বকে কর্টিকোস্টেরয়েড, ট্রায়ামসিনোলোন ব্যবহার করলে তা পর্যাপ্ত পরিমান শোষিত হয়ে পুরো শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে। দূর্ঘটনাবশত কেউ গিলে ফেললে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। কেউ ভুল করে চোখে দিয়ে ফেললে পরিষ্কার পানি দিয়ে বা স্যালাইন দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোন উপসর্গ থেকে যায় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Triamcinolone & Combined preparations

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা (৩০°সে. এর নিচে) ও শুকনো স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
Pack Image of Omniderm 1% 0.1% Cream Pack Image: Omniderm 1% 0.1% Cream