নির্দেশনা

জেপটাইড টাইপ ২ ডায়াবেটিস মেলিটাস আছে এমন প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ উন্নয়নের জন্য ডায়েট এবং ব্যায়ামের সাথে সংযোজক চিকিৎসায় নির্দেশিত।

ব্যবহারের সীমাবদ্ধতাঃ
  • প্যানক্রিয়েটাইটিস হওয়ার ইতিহাস আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এটি নিয়ে গবেষণা করা হয়নি।
  • এটি টাইপ ১ ডায়াবেটিস মেলিটাসের রোগীদের ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

ফার্মাকোলজি

টিরজেপাটাইড একটি জিআইপি (GIP) রিসেপ্টর এবং জিএলপি-১ (GLP-1) রিসেপ্টর এগোনিস্ট। এটি সি২০ (C20) ফ্যাটি ডাইএসিড ময়েটি যুক্ত একটি ৩৯-অ্যামিনো এসিড মডিফাইড পেপটাইড যা এলবুমিনকে বন্ধনে যুক্ত হতে সক্ষম করে এবং অর্ধ-জীবনকে (half-life) প্রলম্বিত করে। এটি সুনির্দিষ্টভাবে সহজাত জিআইপি (GIP) এবং জিএলপি-১ (GLP-1) এর টার্গেট জিআইপি (GIP) এবং জিএলপি-১ (GLP-1) রিসেপ্টর উভয়ের সাথে বন্ধনে যুক্ত হয় এবং সক্রিয় করে। এটি প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ায় এবং গ্লুকাগন লেভেল কমায়, উভয়ই গ্লুকোজ-নির্ভর উপায়ে ।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ওষুধ গ্রহণের পথঃ টিরজেপাটাইড চামড়ার নিচে ইনজেকশন হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে।

প্রয়োগমাত্রা-
  • অনুমোদিত প্রারম্ভিক মাত্রা হচ্ছে চামড়ার নিচে ইনজেকশন হিসাবে ২.৫ মিগ্রা সপ্তাহে একবার। ২.৫ মিগ্রা মাত্রাটি চিকিৎসা শুরু করার জন্য ব্যবহৃত হয়, গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়।
  • ৪ সপ্তাহ পর, মাত্রাটি বাড়িয়ে সপ্তাহে একবার ৫ মিগ্রা করতে হবে। যদি অধিকতর গ্লাইসেমিক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন হয়, তাহলে বর্তমান মাত্রায় অন্তত ৪ সপ্তাহ ওষুধ প্রয়োগের পর ২.৫ মিগ্রা হারে মাত্রা বৃদ্ধি করা যাবে। সর্বোচ্চ মাত্রা হচ্ছে ১৫ মিগ্রা চামড়ার নিচে সপ্তাহে একবার।
  • কোনো মাত্রা বাদ পরলে, বাদ পরা মাত্রার ৪ দিনের (৯৬ ঘণ্টা) মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাত্রাটি গ্রহণ করতে হবে। ৪ দিনের বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে, বাদ পরা মাত্রাটি একেবারে বাদ দিতে হবে এবং পরবর্তী মাত্রাটি স্বাভাবিক নিয়মমাফিক দিনে প্রয়োগ করতে হবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই, রোগীরা এরপর তাদের স্বাভাবিক সাপ্তাহিক ডোজিং শিডিউল পুনরায় চালু করতে পারবে।
  • প্রয়োজন হলে, সাপ্তাহিক ওষুধ প্রয়োগের দিনটি পরিবর্তন করা যাবে, তবে দুইটি মাত্রা প্রয়োগের মধ্যে অন্তত তিন দিনের (৭২ ঘণ্টা) পার্থক্য থাকতে হবে।
প্রস্তুতি এবং প্রয়োগবিধি-
  • প্রি-ফিল্ড সিরিঞ্জের নীডল এর কাভারে শুকনো প্রাকৃতিক রাবার (যা ল্যাটেক্স থেকে উৎপন্ন) থাকে যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • হিমায়িত করা যাবে না। হিমায়িত করা হয়েছে এমন টিরজেপাটাইড ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • প্রি-ফিল্ড সিরিগুগুলিকে আলো থেকে দূরে রাখতে হবে।
  • চামড়ার নিচে ওষুধ প্রয়োগ করার আগে ক্ষুদ্র কণা এবং বিবর্ণতা আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বিভিন্ন কণার উপস্থিতি বা বিবর্ণতা প্রদর্শন করে এমন কোনো প্রি-ফিল্ড সিরিঞ্জ ব্যবহার করা যাবে না।
  • ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রি-ফিল্ড সিরিজটি উপর হতে নিচে কোন শক্ত স্থানের উপর পড়ে গেলে তা ব্যবহার করা যাবে না।
  • টিরজেপাটাইড কে লঘুকরণ করে ব্যবহার এবং অন্যান্য ওষুধের সাথে প্রয়োগ করা যাবে না।
প্রয়োগ পদ্ধতি-
  • সপ্তাহে একবার, দিনের যেকোনো সময়ে, খাবারের সাথে বা খাবার ছাড়া প্রয়োগ করতে হবে।
  • পেট, উরু বা হাতের উপরের অংশের চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হবে। প্রত্যেক মাত্রার সাথে সাথে ইনজেকশনের জায়গা পরিবর্তন করতে হবে। ইনসুলিনের সাথে ব্যবহারের সময়, আলাদা ইনজেকশন হিসাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং কখনোই মেশানো যাবে না। টিরজেপাটাইড এবং ইনসুলিন শরীরের একই অংশে প্রয়োগ করা যাবে, তবে ইনজেকশন দুইটিকে একে অপরের কাছাকাছি দেওয়া যাবে না।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্য ওষুধের সাথে: হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমানোর জন্য একই সাথে প্রয়োগ করা ইনসুলিন সিক্রেটাগণ (যেমন-সালফোনাইলইউরিয়া) বা ইনসুলিনের মাত্রা কমানো বিবেচনা করতে হবে। রিজেপাটাইড পাকস্থলী খালি হওয়ার প্রক্রিয়াতে বিলম্ব ঘটায় এবং এ কারণে একই সাথে প্রয়োগ করা মুখে খাওয়ার ওষুধের শোষণে প্রভাব বিস্তার করার সম্ভাবনা থাকে। কার্যকারিতার জন্য প্রেশোল্ড ঘনত্বের উপর নির্ভরশীল এবং থেরাপিউটিক ইনডেক্স সংকীর্ণ এমন মুখে খাওয়ার ওষুধ (যেমন, ওয়ারফারিন) একই সাথে গ্রহণ করা রোগীদেরকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মুখে হরমোনাল জন্মবিরতিকরণ ওষুধ নেওয়া রোগীদেরকে ওষুধ শুরুর পর ৪ সপ্তাহ এবং প্রত্যেক মাত্রা বৃদ্ধির পর ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত নন-ওরাল জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি অনুসরণ করার বা ব্যারিয়ার জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি সংযোজন করার উপদেশ দিতে হবে। যে সকল হরমোনাল জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি মুখে গ্রহণ করা হয় না সেগুলোর উপর কোন প্রভাব পরে না।

প্রতিনির্দেশনা

যাদের টিরজেপাটাইড বা এই ওষুধের অন্যান্য উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রতিনির্দেশিত। যাদের মেডুলারি থাইরয়েড কারসিনোমা (MTC) এর ব্যক্তিগত বা পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে অথবা যেসব রোগীর মাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিওপ্লাসিয়া সিন্ড্রোম টাইপ২ (MEN 2) আছে তাদের ক্ষেত্রেও এটি প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হচ্ছে বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, ক্ষুধামন্দা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম এবং পেট ব্যথা।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় সঠিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা না হলে মা ও ভ্রূণের ঝুঁকি থেকে যায়। টিরজেপাটাইড শুধুমাত্র তখনই গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা উচিত যখন সম্ভাব্য সুবিধাসমূহ ভ্রূণের প্রতি সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে বেশি হবে। স্তন্যদানকারী মায়েদের প্রয়োজনীয়তা এবং টিরজেপাটাইডের ব্যবহার বা মায়ের বর্তমান সমস্যার জন্য মায়ের দুধ পাচ্ছে এমন শিশুদের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সাপেক্ষে বৃদ্ধিগত ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতা বিবেচনা করে টিরজেপাটাইড প্রদান করতে হবে।

সতর্কতা

রোগীদেরকে জেপটাইডের ব্যবহার থেকে সম্ভাব্য এমটিসি (MTC) এর ঝুঁকি সম্পর্কে উপদেশ দিতে হবে এবং থাইরয়েড টিউমারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। চিকিৎসা শুরুর পর, প্যানক্রিয়েটাইটিসের লক্ষণ উপসর্গসমূহের জন্য রোগীদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যদি প্যানক্রিয়েটাইটিস সন্দেহ করা হয়, তাহলে জেপটাইড বন্ধ করে দিতে হবে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে। সালফোনাইল ইউরিয়া (বা একইসাথে প্রয়োগ করা অন্যান্য ইনসুলিন সিক্রেটাগগ) অথবা ইনসুলিনের মাত্রা হ্রাস করে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

অতিসংবেদনশীলতা জনিত প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে, টিজেপাটাইড বন্ধ করে দিতে হবে: লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত দ্রুত উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। বৃক্কীয় অকার্যকারিতার রোগী যাদের গুরুতর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেয় তাদের ক্ষেত্রে মাত্রা শুরু বা বৃদ্ধি করার সময় বৃত্তীয় কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ইতিহাস আছে এমন রোগীদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির অগ্রগতি হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে কোলিলিথিয়াসিস সন্দেহ হলে, পিত্তথলি পরীক্ষা করতে হবে এবং উপযুক্ত ক্লিনিক্যাল পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে ব্যবহারঃ ১৮ বছরের কম বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে জেপটাইডের নিরাপদ ব্যবহার ও কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

মাত্রাধিক্যতা

রোগীর ক্লিনিক্যাল লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ অনুযায়ী উপযুক্ত সহায়ক চিকিৎসা শুরু করতে হবে। জেপটাইডের অর্ধ-জীবন (half-life) প্রায় ৫ দিন, এ তথ্য অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত উপসর্গসমূহের পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

GLP-1 receptor agonists

সংরক্ষণ

শিশুদের দৃষ্টি এবং নাগালের বাইরে রাখুন। ২° সে. থেকে ৮° সে. তাপমাত্রায় রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করুন। হিমায়িত করবেন না এবং আলো থেকে দূরে রাখুন। হিমায়িত হয়ে গেলে ব্যবহার করবেন না। কেবলমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের | ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবহার্য ও বিক্রয়যোগ্য।