বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট

নির্দেশনা

বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ক্রীম ও অয়েন্টমেন্ট তীব্র কর্টিকোস্টেরয়েড সংবেদনশীল ডার্মাটোসের প্রদাহ নিরাময়ে এবং এর দ্বারা সৃষ্ট চুলকানি উপশমে নির্দেশিত। যেমন-
  • এটপিক এক্জি‌মা
  • নিউমুলার এক্জি‌মা
  • কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস
  • নিউরোডার্মাটাইটিস
  • এনোজেনিটাল এবং সেনাইল প্রুরিটাস
  • লিচেন প্লানাস
  • সোরিয়াসিস।

ফার্মাকোলজি

বেটামিথাসন ডাইপ্রপিওনেট একটি ত্বকের কর্টিকষ্টেরয়েড যা প্রদাহবিরোধী, চুলকানি নাশক এবং রক্তনালী সংকোচক গুনাগুণ সমৃদ্ধ। বেটামিথাসন ডাইপ্রপিওনেট লিপোকর্টিন নামক পেপটাইডকে প্রভাবিত করে। লিপোকর্টিন ফসফোলাইপেজ এ-২ নামক ইনজাইমকে বন্ধ করে যা লিউকোসাইড লাইসোসোমাল ঝিল্লীকে ভেঙ্গে অ্যারাকিডোনিক এসিড মুক্ত করতে সাহায্য করে। এর ফলে অন্তর্জাত প্রদাহের জন্য দায়ী উপাদান যেমন প্রষ্টাগ্ল্যানডিনস, কিনিনস, হিষ্টামিন এর পরবর্তী গঠন এবং ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করে।

ওষুধের উপর শরীরের ক্রিয়া (ফার্মাকোকাইনেটিক্স): বেটামিথাসন ডাইপ্রপিওনেট স্বভাবতই অক্ষত চামড়া হতে শোষিত হয়। কর্টিকষ্টেরয়েডগুলো প্লাজমা প্রোটিনের সাথে নানা মাত্রায় আবদ্ধ হয়। কর্টিকষ্টেরয়েড প্রাথমিকভাবে যকৃতে বিপাক হয়। এগুলো কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে নিস্কাশিত হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

আক্রান্ত স্থানে সম্পূর্ণরূপে প্রতিদিন একবার হতে দুইবার ব্যবহার করতে হবে। যেসব রোগীরা দীর্ঘদিন যাবৎ সোরিয়াসিস রোগে আক্রান্ত এবং যাদের ইতোমধ্যে বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ক্রীম এবং অয়েন্টমেন্ট ব্যবহারে অবস্থার উন্নতি হয়েছে (যেমন- শতকরা ৮০ ভাগ উন্নতি), তারা যেন আবার সোরিয়াসিসে আক্রান্ত না হয় সেজন্য পুনরায় পরপর তিনবার প্রয়োগ করতে হবে (প্রতি সপ্তাহে এক বার আক্রান্ত স্থানে ১২ ঘন্টা অন্তর)। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন এর মাত্রা ৩.৫ গ্রামের বেশি না হয়। বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ক্রীম এবং অয়েন্টমেন্ট পূর্বে আক্রান্ত এবং চিকিৎসাধীন স্থানে ব্যবহার করতে হবে। যেসব রোগীদের ক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত মাত্রা ব্যবহারের পরও আবার রোগের আবির্ভাব হয় তাদের ক্ষেত্রে আবার পূর্বের মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার কোন ধরনের তথ্য পাওয়া যায় নাই।

প্রতিনির্দেশনা

যাদের বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট, অন্যান্য কর্টিকোস্টেরয়েড অথবা এর কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাবে না। অন্যান্য টপিক্যাল কর্টিকোস্টেরয়েড এর মত বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ত্বকের ভাইরাল সংক্রামণ যেমন ভ্যাসিনিয়া, ভ্যারিসেলা এবং হারপিস সিমপেক্স, টিউবারকুলোসিস, একনি রোসাসি, ফাংগাস দ্বারা সৃষ্ট ত্বকের সংক্রামণ, পেরিওরাল ডার্মাটাইটিস এবং আলসেরেটিভ অবস্থার ক্ষেত্রে প্রতি নির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ব্যবহারের ফলে অল্প থেকে মধ্যম পর্যায়ে জ্বলুনি/ ত্বকে খোঁচা খোঁচা ভাব, শুষ্ক ত্বক, চুলকানি এবং ফলিকুলাইটিস হতে পারে। ত্বকে শির শির করা, ঘামাচিযুক্ত ত্বক অথবা ত্বক টানটান হয়ে বা ফেটে যাওয়া, উষ্ণ অনুভূতি, ল্যামিনার স্কেলিং এবং পেরিলেসনাল স্কেলিং, ফলিকুলার র‍্যাশ, ত্বকীয় অ্যাট্রোফি, ইরাইথেমা, আরটিকারিয়া, ভেসিকুলেশন, টেলানজিয়েকটাসিয়া এবং হাইপারঅ্যাসথেসিয়া কদাচিৎ দেখা যেতে পারে। পালস্ ডোজিং এর ক্ষেত্রে মধ্যম পর্যায়ের উচ্চরক্তচাপ এবং প্যারেসথেমিয়া হতে পারে। অন্যান্য স্থানীয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে চুলকানি, হাইপারট্রাইকোসিস, হাইপোপিগমেন্টেশন, পেরিওরাল ডার্মাটাইটিস, অ্যালারজিক কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, ত্বকের স্যাসেরেশন, গৌণ সংক্রামণ, মিলিয়ারিয়া এবং সংক্রামণ অবস্থার অবনতি হতে পারে।

সতর্কতা

বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট চোখের আশেপাশে কোন স্থানে ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এতে গ্লুকোমা ও ক্যাটার‍্যাক্ট হবার সম্ভাবনা থাকে। যদি বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট ব্যবহারের ফলে জ্বলুনি ও ত্বকে অস্বস্তিকর অনুভূতির সৃষ্টি হয় তাহলে এর ব্যবহার বন্ধ করা উচিৎ এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিৎ। সংক্রামণের উপস্থিতিতে একটি যথাযথ এন্টি ফাঙ্গাল অথবা এন্টিব্যাকটেরিয়াল পদার্থ ব্যবহার করতে হবে। যদি দ্রুত সুবিধাজনক ফলাফল না পাওয়া যায় তাহলে বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত সংক্রামণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

কর্টিকোস্টেরয়েড পারকিউটেনিয়াসলি শোষিত হয় তাই যেসব রোগীদের দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচুর পরিমানে ত্বকীয় ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তাদের ক্ষেত্রে সিস্টেমিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিটামিথাসন ডাইপ্রোপিওনেট অক্লুসিভ ড্রেসিং এর নীচে ব্যবহার করা যায় না। কারণ এর ফলে সিস্টেমিক শোষণের পরিমান বেড়ে যায়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ন্যাপকিন অক্লুসিভ ড্রেসিং হিসেবে কাজ করে এবং এর শোষণ বাড়িয়ে দেয়। স্ট্যাসিস ডার্মাটাইটিস এবং অন্যান্য ত্বকীয় রোগের (ইমপেয়ারডসারকুলেশন সহ) আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। দীর্ঘদিন যাবৎ ত্বকীয় কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহারের ফলে ত্বকে অথবা সাবকিউটেনিয়াস টিস্যুতে স্ট্রাইয়ি অথবা অ্যাট্রোফি হতে পারে। এটি ঘটলে চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

ক্রীম বা অয়েন্টমেন্টের ব্যবহারে তীব্রতার সম্ভাবনা অনেক কম এবং আশংকাজনক কোন উপসর্গ দেখায় না। ক্রীম বা অয়েন্টমেন্টের নির্ধারিত সময়ের বেশী দিন ব্যবহার করা উচিৎ নয়।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Corticosteroid

সংরক্ষণ

২৫° সে. তাপমাত্রার নীচে সংরক্ষণ করতে হবে। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।