ইভারমেকটিন (টপিক্যাল)

নির্দেশনা

ইভারমেকটিন টপিক্যাল লোশন ৬ মাস বা তার বেশী বয়সী রোগীদের মাথায় উকুন সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য নির্দেশিত।

ফার্মাকোলজি

ইভারমেকটিন হলো এভারমেকটিন শ্রেণীর একটি সদস্য। অমেরুদন্ডী প্রাণীর স্নায়ু ও পেশী কোষে প্রধানত গ্লুটামেট গেটেড ক্লোরাইড চ্যানেলের সাথে সুনির্দিষ্ট এবং উচ্চ সম্পৃক্ততার সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে এটা পরজীধিদের মৃত্যু ঘটায়। কোষ পর্দার ভেদ্যতা বাড়িয়ে কোষের ভেতর ক্লোরাইড আয়নের ঘনত্ব বাড়ায়। ফলে স্নায়ু ও পেশী কোষের হাইপার পোলারাইজেশন ঘটে এবং পরজীবির অসারতা ও মৃত্যু ঘটে। এই শ্রেণীর যৌগ অন্যান্য লিগ্যান্ড গেটেড ক্লোরাইড চ্যানেল, যেমন নিউরোট্রান্সমিটার গামা-অ্যামিনোবিউটাইরিক এসিড (গাবা) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ক্লোরাইড চ্যানেলের সাথেও ক্রিয়া করে। এভারমেকটিন গুলো স্তন্যপায়ীদের লিগ্যান্ড গেটেড ক্লোরাইড চ্যানেলের প্রতি স্বল্প প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং অনেক স্তন্যপায়ী প্রাণীর গ্লুটামেট-গেটেড ক্লোরাইড চ্যানেল না থাকায় এভারমেকটিন যৌগ সমূহ শুধু পরজীবিদের ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট কর্ম সম্পাদন করে। ইভারমেকটিন সহজে ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার অতিক্রম করে না।

ঔষধের মাত্রা

ইভারমেকটিন লোশন শুধুমাত্র মাথা ও মাথার চুলের ব্যবহারের জন্য। এটি মুখে, চোখে এবং যোনীতে ব্যবহারের জন্য নয়। ইভারমেকটিন লোশন শুষ্ক চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে, যাতে চুল ও মাথার ত্বক সম্পূর্ণ আবৃত হয়। লোশনটি ১০ মিনিট মাথায় রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। টিউবটি শুধুমাত্র ১ বার ব্যবহারের জন্য। অব্যবহৃত অংশ ফেলে দিতে হবে। চোখের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।

সেবনবিধি

  • ইভারমেকটিন লোশন ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই মাথা ও মাথার চুল সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে নিতে হবে।
  • ইভারমেকটিন লোশন সরাসরি মাথার শুকনো চুলে এবং মাথার তালুতে প্রয়োগ করতে হবে।
  • প্রথমে মাথার তালুর নিকটবর্তী চুল থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে দূরবর্তী চুলে ইভারমেকটিন লোশন প্রয়োগ করতে হবে।
  • চুলের সকল অংশে ইভারমেকটিন লোশনটি মালিশ করতে হবে।
  • সমস্ত মাথা ইভারমেকটিন লোশন দিয়ে ভালভাবে আবৃত করতে হবে, যেন সমস্ত উকুন ও ডিম ইভারমেকটিন লোশনের সংস্পর্শে আসে। প্রত্যেকটি চুলের গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত যাতে ইভারমেকটিন লোশন দিয়ে আবৃত থাকে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ইভারমেকটিন লোশন ব্যবহার করতে হবে, যেন মাথা ও সমস্ত চুল আবৃত হয় ।
  • ইভারমেকটিন লোশন ব্যবহারের পর ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
  • এরপর পানি দিয়ে সম্পূর্ণরূপে মাথা ও চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • ইভারমেকটিন লোশন ব্যবহারের পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

প্রতিনির্দেশনা

কোন ধরনের প্রতিনির্দেশনা নেই।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কনজাংটিভাইটিস, অকুলার হাইপারেমিয়া, চোখের জ্বালাপোড়া ভাব, খুশকি, শুষ্ক ত্বক, ত্বকের জালাপোড়া ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি সি। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এই লোশন ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতা

শিশুরা যাতে খেয়ে না ফেলে এজন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে। দূর্ঘটনাবশত খেয়ে বিষক্রিয়া হলে সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে প্যারেন্টেরাল তরল ও ইলেক্ট্রোলাইট, শ্বসনের সহায়ক (প্রয়োজন হলে অক্সিজেন এবং যান্ত্রিক বাতাস চলাচল ব্যবস্থা) এবং যদি ক্লিনিক্যালি গুরুত্বপূর্ণ হাইপোটেনশন থাকে তাহলে প্রেশার উৎপাদন যোগ করতে হবে। গলধঃকরণ করা ওযুধের শোষণ রোধ করার জন্য জরুরী ভিত্তিতে বমি করতে হবে অথবা, গ্যাস্ট্রিক ল্যাভোজের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরবর্তীতে বিরেচক এবং অন্যান্য বিষরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উকুন এর বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পরামর্শঃ
  • যাদের মাথায় জীবিত উকুন আছে তাদের মাথার সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • চিরুণী, ব্রাশ, টুপি, স্কার্ফ, ব্যান্ডেনা, রিবন, চুলের ব্যান্ড, তোয়ালে, হেলমেট এবং চুল সম্পর্কিত ব্যক্তিগত সামগ্রী অন্যের সাথে আদান-প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • উকুনের চিকিৎসা শেষে এক সপ্তাহ পর পরিবারের সবাইকে পরীক্ষা করাতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Miscellaneous topical agents

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names