কিটোকোনাজল

নির্দেশনা

শ্যাম্পু: কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু ইষ্ট ম্যালাসেজিয়া (পিটাইরোস্পোরাম) এর সংক্রমন যেমন- পিটাইরিয়াসিস ভারসিকলর (আঞ্চলিক), সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং পিটাইরিয়াসিস ক্যাপিটিস (খুশকি) এর চিকিৎসা ও প্রতিরোধে নির্দেশিত।

ক্রীম: কিটোকোনাজল ২% ডব্লিউ/ডব্লিউ ক্রীম ট্রাইকোফাইটন স্পেসিস, মাইক্রোসপোরন স্পেসিস এবং এপিডারমোফাইটন স্পেসিস এর কারনে ত্বকের ডার্মাটোফাইট সংক্রমন যেমন টিনিয়া করপোরিস, টিনিয়া ক্রুরিস (ধবি ইচ), টিনিয়া মেনাস এবং টিনিয়া পেডিস (এ্যাথলেটস্ ফুট) এর চিকিৎসায় বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত। কিটোকোনাজল ২% ক্রীম ম্যালাসেজিয়া স্পেসিস (পূর্বে পিটাইরোস্পোরাম হিসেবে পরিচিত) এর কারনে কিউটেনিয়াস ক্যানডিডোসিস (ভালভাইটিস সহ), ক্যানডিডাল ইন্টারট্রিগো (সোয়েট র‍্যাশ), টিনিয়া (পিটাইরিয়াসিস) ভার্সিকলর এবং সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এর চিকিৎসায়ও নির্দেশিত।

ফার্মাকোলজি

কেটোকনজোল হলো একটি বিস্তৃত বর্ণালী ইমিডাজল-ডাইঅক্সোলেন, সিন্থেটিক অ্যান্টিফাঙ্গাল এজেন্ট যা কোষের ঝিল্লির ব্যাপ্তিযোগ্যতা পরিবর্তন করে নিম্নলিখিত সাধারণ ডার্মাটোফাইটস এবং ইয়েস্টগুলির ভিট্রো বৃদ্ধিকে বাধা দেয়: ডার্মাটোফাইটস: ট্রাইকোফাইটন রুব্রাম, টি টনসুরানস, মাইক্রোস্পোরাম ক্যানিস, এম অডুইনি, এম জিপসিয়াম এবং এপিডার্মোফিটন ফ্লোক-কোসিয়াম; ইস্টস: ক্যান্ডিদা অ্যালবিকানস, মালাসেসিয়া ওভালে (পাইট্রোস্পোরাম ওভালে) এবং সি ট্রপিক্যালিস; এবং টিনিয়া ভার্সিকোলার এর জন্য রেস্পন্সিবল অর্গানিসম, মালাসেসিয়া ফুরফুর (পাইট্রোস্পোরাম অরবিকুলার) এর জন্য দায়ী।

মাত্রা ও সেবনবিধি

শ্যাম্পু: আক্রান্ত ত্বকে বা মাথার ত্বকে কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে, শ্যাম্পু ৩-৫ মিনিট ত্বকে/মাথার ত্বকে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে ।

চিকিৎসাঃ
  • পিটাইরিয়াসিস ভারসিকলর: প্রতিদিন ১ বার করে ৫ দিন।
  • সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং পিটাইরিয়াসিস ক্যাপিটিস: সপ্তাহে ২ বার করে ২-৪ সপ্তাহ।
প্রতিরোধঃ
  • পিটাইরিয়াসিস ভারসিকলর: গ্রীষ্মের পূর্বে একক চিকিৎসা হিসাবে দিনে ১ বার করে ৩ দিন।
  • সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং পিটাইরিয়াসিস ক্যাপিটিস: প্রতি ১ বা ২ সপ্তাহে ১ বার।
ক্ৰীম:
  • টিনিয়া পেডিস: কিটোকোনাজল ২% ক্ৰীম আক্রান্ত স্থানে দিনে দুইবার করে ব্যবহার করা উচিত। মৃদু সংক্রমনের জন্য সাধারনত চিকিৎসার সময়সীমা হল এক সপ্তাহ। মারাত্বক অথবা বিস্তৃত সংক্রমনের জন্য (যেমন পায়ের চারিদিকে অথবা পায়ের পাতার চারিদিকে) রোগের পুনরাক্রমন প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সকল চিহ্ন এবং লক্ষণ অদৃশ্য হবার পরও কিছুদিন চিকিৎসা চালানো উচিত।
  • অন্যান্য সংক্রমনের জন্য: কিটোকোনাজল ২% ক্ৰীম সংক্রমনের তীব্রতার উপর নির্ভর করে আক্রান্ত স্থানে দিনে এক অথবা দুইবার ব্যবহার করা উচিত। সকল চিহ্ন এবং লক্ষন অদৃশ্য হবার পরও কিছুদিন পর্যন্ত চিকিৎসা চালানো উচিত। চিকিৎসার সাধারন সময়সীমা হলঃ টিনিয়া ভার্সিকলর ২-৩ সপ্তাহ, টিনিয়া করপোরিস ৩-৪ সপ্তাহ। যদি ৪ সপ্তাহ পরও কোন বস্তুনিষ্ঠ উন্নতির তথ্য পাওয়া না যায় তাহলে পরীক্ষা পুনরায় করা উচিত। সংক্রমন অথবা পুনঃসক্রমনের উৎস নিয়ন্ত্রন করার জন্য স্বাভাবিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস একটি বহুদিন স্থায়ী অবস্থা এবং এর পুনরাক্রমন খুব বেশী দেখা যায়।
  • ব্যবহারবিধি: বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অন্যান্য ওষুধের সাথে আন্তঃক্রিয়া এখনো জানা নাই।

প্রতিনির্দেশনা

কিটোকোনাজলের প্রতি সংবেদনশীলতা আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার নিষিদ্ধ।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কিটোকোনাজল শ্যাম্পু: বাহ্যিক ব্যবহারে সাধারণত সু-সহনীয়। অন্যান্য শ্যাম্পুর মত প্রয়োগকৃত অংশে আঞ্চলিক জ্বালাপোড়া, চুলকানি অথবা কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস (জ্বালাপোড়া বা এলার্জি হেতু) হতে পারে। চুলের তৈলাক্ত ভাব বা শুষ্কতার ঘটনা কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু ব্যবহারে খুবই দূর্লভ ভাবে পরিলক্ষিত।

কিটোকোনাজল ক্রীম: এর সচরাচর পর্যবেক্ষনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল জ্বালা পোড়া, প্রয়োগকৃত অংশে রক্তিমাভাব এবং চুলকানী। বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল প্রয়োগকৃত অংশে রক্ত পড়া, অস্বস্তি, শুষ্কভাব, প্রদাহ, জুলুনী, অসুস্থ কিংবা পরিবর্তিত অনুভব শক্তি, পুনরুত্তেজনা, বেশি মাত্রায় ত্বকের উপর মৃদু ফোস্কা পড়া, ত্বকের প্রদাহ, র‍্যাশ, ত্বকের শ্বল্কমোচন, যন্ত্রনাদায়ক ত্বক।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

শ্যাম্পু: যেহেতু কিটোকোনাজল বাহ্যিক ব্যবহারে ত্বকের মাধ্যমে শোষিত হয় না সেহেতু গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালে কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু ব্যবহার নিষিদ্ধ নয়।

ক্রীম: গর্ভবর্তী অথবা দুগ্ধদানরত মহিলাদের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত এবং সু-নিয়ন্ত্রিত কোন পরীক্ষা নেই। অদ্যাবদি, এ ধরনের বহুব্যাপকতার কোন তথ্য নেই। সীমিত সংক্ষক গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে তথ্য নির্দেশ করে যে গর্ভাবস্থায় অথবা ভ্রুনের/সদ্য জন্মানো শিশুর স্বাস্থ্যের উপর বাহ্যিক ভাবে কিটোকোনাজল ব্যবহারের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রাণীদের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষনে দেখা যায় মুখ দিয়ে কিটোকোনাজল প্রয়োগ করলে প্রজনন সম্বন্ধীয় বিষাক্ততা পরিলক্ষিত হয়। দুগ্ধগ্রহণকারী সদ্যজাত/শিশুর উপর কোন প্রতিক্রিয়া হবে না এমন প্রত্যাশা করা যায়।

সতর্কতা

শ্যাম্পু: যে সকল রোগীরা বাহ্যিক কর্টিকোস্টেরয়েড দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে কিটোকোনাজল শ্যাম্পু ব্যবহারের সময়, সম্ভাব্য রিবাউন্ড প্রতিক্রিয়া রোধে, স্টেরয়েড এর চিকিৎসা দুই থেকে তিন সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে হবে। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং খুশকিতে প্রায়ই বেশী পরিমানে চুল ঝড়ে যায়, যা কিটোকোনাজল ২% শ্যাম্পু ব্যবহারে দূর্লভ ভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। চোখের সাথে সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। যদি চোখে শ্যাম্পু প্রবেশ করে তাহলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ক্রীম: চোখে ব্যবহারের জন্য নয়। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এর চিকিৎসায় যদি পূর্বে একটি শক্তিশালী বাহ্যিক কর্টিকোস্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাহলে কিটোকোনাজল ২% ডব্লিউ/ডব্লিউ ক্রীম ব্যবহারের পূর্বে নিরাময়ের জন্য ২ সপ্তাহের সময় দেওয়া উচিত, যেহেতু কোন নিরাময়ের সময় না দেওয়ার ফলে স্টেরয়েডের কারনে ত্বকের সংবেদনশীলতা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।

মাত্রাধিক্যতা

শ্যাম্পু: বাহ্যিক ব্যবহার করা হয় তাই অতিমাত্রার ঘটনা আশা করা যায় না। অসাবধানতাবশত মৌখিকভাবে গ্রহনক্ষেত্রে, শুধুমাত্র সহায়কমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।  অ্যাসপিরেশন প্রতিরোধে ইমেসিস অথবা গ্যাস্ট্রিক ল্যাভেজ প্রক্রিয়া সম্পাদন করা উচিত নয়।

ক্রীম: অতিরিক্ত বাহ্যিক ব্যবহারে শুষ্কতা, স্ফীতি এবং জ্বলা পোড়া ঘটতে পারে, যা চিকিৎসা বন্ধ হওয়ার পর পর ভালো হয়ে যায়। যদি কোন কারনে কিটোকোনাজল ২% ডব্লিউ/ডব্লিউ ক্রীম মুখে যায়, তাহলে কোন বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Drugs for subcutaneous and mycoses

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে সংরক্ষণ করুন।