কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন (ক্রিম)

নির্দেশনা

কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • ইস্ট্রোজেনের অভাবে মাঝারি থেকে তীব্র ভ্যাসােমােটর উপসর্গ নিরাময়ে
  • ইস্ট্রোজেনের অভাবে হাড় ক্ষয় প্রতিরােধে
  • অ্যাটরােপিক ভ্যাজাইনাইটিস এবং কুরােসিস ভালভা চিকিৎসায়
  • মেয়েদের রক্তে ইস্ট্রোজেনের পরিমান কমে গে।।
  • সঙ্গমে ব্যথা অনুভব করলে।

বিবরণ

কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন হচ্ছে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেনের মিশ্রন যা যােনিপথে ব্যবহারের জন্য প্রযােজ্য। এতে রয়েছে ইস্ট্রোনের সালফাল ইস্টার, ইকুইলিন, ১৭-আলফা ডাইহাইড্রোইকুইলিন, স্বল্প পরিমান ১৭-আলফা ইস্ট্রাডিয়ল, ইকুইলেনিন, ১৭-আলফা ডাইহাইড্রোইকুইলেনিন, ১৭-বিটা ডাইহাইড্রোইকুইলিন, ১৭-বিটা ডাইহাইড্রোইকুইলেনিন, ১৭-বিটা ইস্ট্রাডিয়ল এবং ডেলটা-৮, ৯ ডিহাইড্রোইস্ট্রোন।

ফার্মাকোলজি

ইস্ট্রোজেন মহিলাদের জননাঙ্গের বর্ধন ও উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ন। ইস্ট্রোজেন যােনি, জরায়ু, ফেলােপিয়ান টিউব-এর গঠন এবং স্তনের ক্রমবিকাশে সহায়তা করে। এছাড়া, ইস্ট্রোজেন পিটুইটারী গােত্রাডােট্রপিনের নিঃসরনকে প্রভাবিত করে। ইস্ট্রোজেন হচ্ছে মাসিকের প্রাথমিক নির্ধারক। কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন শরীরে অন্তর্জনিফ্ণু ইস্ট্রোজেনের মতই কাজ করে। ইস্ট্রোজেন মূলত নির্দিষ্ট কোষে প্রবেশ করে নিউক্লিয়াসের সাথে যুক্ত হয়। এরপর এটি আরএনএ এবং প্রােটিন সংশ্লেষনে সহায়তা করে। 

ইস্ট্রোজেনের অভাবে ভ্যাসােমােটর উপসর্গ যেমন- চরম উত্তাপ (মুখ, ঘাড়, গলা ঘামে সিক্ত হওয়া, অস্বস্তি অনুভব হওয়া)। এই ভেসােমােটর উপসর্গগুলাে সাধারনত মহিলাদের মেনােপজ হয়ে গেলে অনুভব হয়। ইস্ট্রাকচ ব্যবহারে এই উপসর্গ অনেকাংশে নিরাময় হয়।

ইস্ট্রোজেনের অভাবেহাড় ক্ষয়: মেনােপজ মহিলাদের হাড় ক্ষয় রােধে ইস্ট্রোজেন প্রতিস্থাপন থেরাপি খুবই কার্যকরী চিকিৎসা। ইস্ট্রোজেন হাড়ে ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সহায্য করে যা হাড় ক্ষয় রােধ করে।

অ্যাটরােপিক ভ্যাজাইনাইটিস এবং ক্রুরােসিস ভালভা: ইস্ট্রোজেনের অভাবে যােনিপথের ভালভা ও টিস্যু সংকুচিত হয়ে যায়, যােনিপথ পাতলা ও শুকিয়ে যায়। এ কারনে সঙ্গমে ব্যথা অনুভব হওয়া এবং প্রস্রাবে জ্বালাপােড়া হাতে পারে। কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেনের চিকিৎসায় এই সকল সমস্যা থেকে পরিত্রান সম্ভব।

মেয়েদের রক্তে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়া: ইস্ট্রোজেনের পরিমান কমে গেলে মেয়েদের অস্থি অপরিপক্ক হয়, জননাঙ্গ সুসংগঠিত হয় না। ইস্ট্রোজেন থেরাপিতে এগুলাে থেকে পরিত্রান সম্ভব হয়।

ঔষধের মাত্রা

অ্যাটরােপিক ভ্যাজাইনাইটিস এবং ক্রুরােসিস ভালভাঃ যােনিপথে ২১ দিন ব্যবহারের পর ৭ দিন বন্ধ রাখতে হবে। এভাবে ০.৫ গ্রাম দিয়ে শুরু করে ২ গ্রাম পর্যন্ত বাড়ানাে যেতে পারে।

সঙ্গমে ব্যথা অনুকরলেঃ যােনিপথে ০.৫ গ্রাম সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে হবে অথবা টানা ২১ দিন ব্যবহারের পর ৭ দিন বন্ধ রাখতে হবে।

সেবনবিধি

ধাপ ১: টিউবের মুখ খুলুন
ধাপ ২: প্রলেপকের অগ্রভাগ টিউবে প্রবেশ করান
ধাপ ৩: টিউবের নিচে চাপ দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমান ক্রিম প্রলেপকের নলে নিন
ধাপ ৪: প্রলেপকটি টিউব থেকে বের করে নিন
ধাপ ৫: প্রলেপকটি যােনিপথে প্রবেশ করান
ধাপ ৬: প্রলেপকের ডাট নিচের দিকে চাপ দিয়ে ক্রিম প্রয়ােগ করুন।

প্রলেপকটি পরিষ্কার করার জন্য সাবান এবং হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। প্রলেপকের ডাট উপরে তুলে আনুন।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

রিফামপিন ইস্ট্রোজেনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। সাধারনত হেপাটিক মাইক্রোজোমাল এনজাইমের প্রভাবে ইস্ট্রোজেনের মেটাবলিজম অধিক হলে উপরােক্ত মিথস্ক্রিয়া দেখা যায়।

প্রতিনির্দেশনা

  • স্তন ক্যান্সার
  • ইস্ট্রোজেন সম্বলিত নিওপ্লাসিয়া
  • গর্ভবতী হলে
  • অজ্ঞাত কারনে যােনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত হলে
  • রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থাকলে
  • কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন ভ্যাজাইনাল ক্রিমের কোন উপাদানের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকলে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

মূত্র ও জননাঙ্গ সংক্রান্ত ছিটা ছিটা রক্তপাত, মাসিকের রক্তপ্রবাহের পরিবর্তন, মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
  • স্তনঃ ব্যথা, বড় হয়ে যাওয়া, নিরন।
  • পরিপাকনালীঃ বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, তলপেট ব্যথা, পেট ফুলে ফেপে থাকা, কোলেস্ট্যাটিক জন্ডিস।
  • চর্মঃ ঔষধ ব্যবহার বন্ধ করলে কোলাজমা/মেলাজমা হতে পারে, চুল পড়া, চুলকানাে।
  • চোখঃ ধীরে ধীরে কর্ণিয়া বাঁকা হয়ে যেতে পারে।
  • স্নায়ুতন্ত্রঃ মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, মাথাঘােরা
  • অন্যান্যঃ ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া, ফোলা, কামশক্তি পরিবর্তন, ফরফাইরিয়া বৃদ্ধি।
সাধারন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: মাথাব্যথা, স্তনে ব্যথা, যােনিপথে অনিয়মিত রক্তপাত, তলপেট ব্যথা, ফুলে-ফেঁপে থাকা, বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া, চুল পড়া, শরীরে পানি ধরে রাখা, যােনিপথে ইষ্ট সংক্রমন, ক্রিমের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ যােনিপথে জ্বালাপােড়া কিংবা চুলকানো।

বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক/মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, রক্ত জমাট বাঁধা, ভুলে যাওয়া, স্তন ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, পিত্তথলিতে রােগ, জরায়ুর টিউমার ফুলে যাওয়া, তীব্র চুলকানি।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভকালে ইস্ট্রোজেন থেরাপির ব্যবহার নির্দেশিত নয়। ইস্ট্রোজেন থেরাপি গর্ভকালে ব্যবহারে বাচ্চার প্রজনন অংগের ত্রুটি দেখা যেতে পারে। ভ্যাজাইনাল অ্যাডেনােসিস, ভ্যাজাইনাল ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে ইস্ট্রোজেন গর্ভপাত রােধে ব্যবহৃত হয়। স্তন্যদানকালে যেকোন ঔষধ প্রয়ােগ করা এর প্রয়ােজনীয়তার উপর নির্ভর করে। কারন, বেশিরভাগ ঔষধই মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়।

সতর্কতা

যেসব মহিলাদের জরায়ু আছে, তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে ইস্ট্রোজেন ব্যবহারে এন্ডােমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া/জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে, ইস্ট্রোজেনের সাথে। অবশ্যই প্রােজেস্টেরন ব্যবহার করতে হবে। ইস্ট্রোজেন ব্যবহারে পিত্তথলিতে রােগ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন বেশি ডিজে ইস্ট্রোজেন ব্যবহারে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমিক মহিলার স্তন পরীক্ষা আবশ্যক। কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন ক্রিমের নির্দেশিত ডোজের চেয়ে বেশি দেওয়া উচিত নয়।

ইস্ট্রোজেন থেরাপি শুরু করার পূর্বে মহিলার রক্তচাপ, স্তন, তলপেট এবং জননাঙ্গ পরীক্ষা করে নিতে হবে। যকৃতের কর্মক্ষমতা কম হলে, সতর্কতার সাথে ইস্ট্রোজেন থেরাপি প্রয়ােগ করতে হবে। যােনিপথে অতিরিক্ত রক্তপাত যদি জীবানু দ্বারা সংক্রমিত হবার কারনে না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ডােজ পর্যায়ক্রমে কমিয়ে দিতে হবে। কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন প্রতিস্থাপন থেরাপিতে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি থাকে না। কোন মহিলার যকৃতে সমস্যা থাকলে ইস্ট্রাকন ক্রিম সতর্কতার সাথে দিতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

অপরিমিত মাত্রায় ইস্ট্রোজেন ব্যবহারে বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, স্তন ব্যথা করা, তলপেটে ব্যথা, মাথা ঘোরানাে, দূর্বলতা অনুভব হতে পারে। এক্ষেত্রে কনজুগেটেড ইস্ট্রোজেন থেরাপি বন্ধ করতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Female Sex hormones

সংরক্ষণ

শুদ্ধ ও ঠাণ্ডা (৩০°সে. এর নিচে) স্থানে রাখুন। আলাে ও আদ্রতা থেকে রক্ষা করুন।