অক্সাজিপাম

নির্দেশনা

অক্সাজিপাম দুশ্চিস্তার সাথে সম্পর্কযুক্ত এমন উদ্বেগজনিত সমস্যাসমূহের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই ওষুধটি নির্দিষ্টভাবে দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর চিন্তার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তীব্র মদ্যপান পরিত্যাগের চিকিৎসায়ও এটা ব্যবহার করা হয়।

ফার্মাকোলজি

অক্সাজিপাম বেনজোভায়াজেপিন শ্রেণীভূক্ত একটি ওষুধ যা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু (কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র) উপর কাজ করে যা মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা করে। এটা মস্তিষ্কের একটা প্রাকৃতিক রাসায়নিক উপাদানকে (জিএবিএ) উদ্দীপ্ত করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

প্রাপ্তবয়ষ্ক-
  • স্বল্প থেকে মধ্যম মাত্রার উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, বিরক্তি এবং অস্থিরতা: স্বভাবিক মাত্রা হচ্ছে ১০-১৫ মি.গ্রা. দৈনিক ৩-৪ বার।
  • মারাত্মক উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা সহ উদ্বেগ অথবা মদ্যপান পরিত্যাগে: স্বভাবিক মাত্রা হচ্ছে ১৫-৩০ মি.গ্রা. দৈনিক ৩-৪ বার।
শিশু-
  • ৬ বছরের নিচের বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে নিরাপদ ব্যবহার এবং কার্যকারিতা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি কিংবা
  • ৬-১২ বয়সীদের জন্য মাত্রাও এখন পর্যন্ত সুনির্দেশিত নয়। চিকিৎসকই শিশুর প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে মাত্রা সমন্বয় করবেন।
বয়স্ক রোগী: সাধারণ প্রারম্ভিক ডোজ ১০ মিলিগ্রাম, দিনে ৩ বার। প্রয়োজনে ডাক্তার দিনে ৩ বা ৪ বার ডোজ ১৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারেন।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অক্সাজিপাম এ্যালকোহলের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এই ওষুধ গ্রহণ কালে এ্যালকোহল পরিত্যাগ করা উচিত। যদি অক্সাজিপাম অন্য ওষুধের সাথে গ্রহণ করা হয় যেকোনটির কার্যকারিতা বাড়তে, কমতে অথবা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচের ওষুধগুলির সাথে একসংগে অক্সাজিপাম ব্যবহার করলে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এন্টিহিস্টামিন যেমন- ডাইফিনহাইড্রামিন, মাদকগোত্রীয় ব্যথানাশক যেমন অক্সিকোডন এবং পেথিডিন। ঘুমের অষুধ যেমন- সেকোবারবিটাল, ট্রায়াজোলাম, ডায়াজিপাম বা এলপ্রাজোলাম।

প্রতিনির্দেশনা

যারা অক্সাজিপাম বা অন্য কোন বেনজোডায়াজেপিন যেমন- ডায়াজিপামের প্রতি অতি মাত্রায় সংবেদনশীল তাদের ক্ষেত্রে অক্সাজিপাম প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো আগে থেকে ধারণা করা যায় না। তবে যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় অথবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তীব্রতার পরিবর্তন ঘটে তবে চিকিৎসককে অনতিবিলম্বে জানানো উচিত। চিকিৎসকই নির্ধারণ করবেন অক্সাজিপাম গ্রহণ ঐ রোগীর জন্য নিরাপদ কিনা। বেশি লক্ষণীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে ঝিমুনিভাব। কম লক্ষণীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হচ্ছে রক্তের সমস্যা, যৌনকর্মে আগ্রহের পরিবর্তন, ইতস্তত বোধ করা, উত্তেজনা, উজ্জ্বলতা হ্রাস পাওয়া, মাথাব্যথা, যকৃতের সমস্যা, মাংসপেশীর উপর নিয়ন্ত্রণহীনতা, বমিবমি ভাব, চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া অথবা ফুসকুড়ি ফেটে যাওয়া, ধীরে সাড়া দেওয়া, অথবা একেবারেই সাড়া না দেওয়া, কথাবার্তায় অসংলগ্নতা অথবা পানি জমা হওয়ার কারণে মাংসপেশী ফুলে উঠা, কাঁপুনি, মাথাঘোরা এবং চোখ চড়া হলুদ হয়ে যাওয়া। অক্সাজিপাম হঠাৎ পরিত্যাগে সমস্যা হতে পারে যেমন পেট মোচড় দেয়া বা মাংসপেশীর খিঁচুনি, কাঁপুনি,অবসন্ন মন, ঘুমের সমস্যা, অতিরিক্ত ঘাম বা বমি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

ভ্রুণের জন্য যথেষ্ট ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়। এই ওষুধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অন্যান্য ওষুধের প্রাপ্ত তথ্যাদি থেকে জানা যায় এ ওষুধ মাতৃদুগ্ধের সাথে নিঃসৃত হতে পারে এবং এই কারণে ছোট বাচ্চাদের জন্য এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এ ওষুধ গ্রহণকালীন সময়ে বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানো থেকে মায়ের বিরত থাকা উচিত।

সতর্কতা

অক্সাজিপামের কারণে মাথা ঘোরা, ঘুমঘুম ভাব অথবা ঘোলা দৃষ্টি হতে পারে। গাড়ী চালনা বা যন্ত্রপাতি চালনার মত কাজসমূহ যেগুলির জন্য সাবধানতা প্রয়োজন সেসব কাজে সংযুক্ত হবার পূর্বে সতর্কতা প্রয়োজন। এ্যালকোহল জাতীয় পানীয় গ্রহণে সীমারেখা মেনে চলা উচিত যদি অক্সাজিপাম গ্রহণ করতে হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত কারণ এই ওষুধের কার্যকারিতার প্রতি তারা বেশি প্রতিক্রিয়াশীল হতে পারে; যেমন- ঘুমঘুম ভাব।

মাত্রাধিক্যতা

অক্সাজিপামের মাত্রাধিক্য মারাত্মক হতে পারে। মৃদু মাত্রাধিক্যের লক্ষণ: দ্বিধা, ঝুিমুনি ও অলসতা। অতিরিক্ত মাত্রাধিক্যের লক্ষণ: কোমা, বাহ্যিক চেতনা লোপ পাওয়া, মনোসংযোগে ঘাটতি, মাংসপেশী অবশ হয়ে যাওয়া এবং নিম্ন রক্তচাপ।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Tricyclic Anti-depressant

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names