ইবান্ড্রোনিক এসিড + আলজি ক্যালসিয়াম + ভিটামিন ড৩

নির্দেশনা

ইবান্ড্রোনিক এসিড, আলজি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ড৩ কিট অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের জন্য নির্দেশিত।

উপাদান

প্রতিটি কিটে রয়েছে-
  • ১ টি ইবানড্রোনিক এসিড ট্যাবলেট: প্রতিটি ট্যাবলেটে আছে ইরানড্রোনেট সোডিয়াম মনোহাইড্রেট Ph. Eur. যা ১৫০ মিগ্রা ইবানড্রোনিক এসিড এর সমতুল্য।
  • ৩০ টি ক্যালসিয়াম (এ্যালজি উৎস) ও ভিটামিন ডি৩ ট্যাবলেট: প্রতিটি ট্যাবলেটে আছে ক্যালসিয়াম কার্বনেট ইউএসপি (এ্যালজি উৎস) যা ৬০০ মিগ্রা মৌলিক ক্যালসিয়াম এর সমতুল্য এবং কোলেক্যালসিফেরল কনসেনট্রেট বিপি যা ৪০০ আইইউ ভিটামিন ডি. এর সমতুল্য।

ফার্মাকোলজি

ইবানড্রোনিক এসিড (ইবানড্রোনেট সোডিয়াম মনোহাইড্রেট): একটি নাইট্রোজেনসমৃদ্ধ বিসফসফোনেট যা অস্টিওক্ল্যাস্ট দ্বারা অস্থির যে পুনঃস্থাপন হয় তাতে বাঁধা প্রদান করে। অস্থির উপর ইবানড্রোনেটের প্রভাব হাইড্রোক্সিএ্যাপাটাইটের প্রতি এর আকর্ষণের উপর নির্ভরশীল যা অস্থির খনিজ মজ্জার একটি অংশ। ইবানড্রোনেট অস্টিওক্ল্যাস্টের কার্যক্রমকে প্রতিহত করে এবং অস্থির পুনঃস্থাপন ও টার্নওভার হ্রাস করে। যে সকল মহিলার রজোনিবৃত্তি হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি অস্থির টার্নওভারের উচ্চতর হারকে হ্রাস করে এবং এর ফলে অস্থির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

ক্যালসিয়াম (এ্যালজি উৎস) এবং ভিটামিন ডি৩: এ্যালজি উৎস থেকে পাওয়া ক্যালসিয়াম হল একটি উদ্ভিদ ভিত্তিক এ্যালজি যা হাতে কেটে, রোদে শুকিয়ে তারপর পাউডারে পরিণত করা হয়। এ্যালজিগুলি সামুদ্রিক জল থেকে ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য ১২টি অত্যাবশ্যক হাড়ের উপযোগী খনিজসমূহ বহন করে। ক্যালসিয়াম এবং এর লবণের ফার্মাকোকাইনেটিক প্রোফাইলগুলি সুপরিচিত। ক্যালসিয়াম কার্বনেট গ্যাস্ট্রিক এসিড দ্বারা ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডে রূপান্তরিত হয়। ক্যালসিয়াম গ্যাস্ট্রো-ইন্টেস্টিনাল ট্র্যাক্টে শোষিত হয় এবং অবশিষ্ট অদ্রবণীয় ক্যালসিয়াম কার্বনেট এবং ক্যালসিয়াম স্টিয়ারেটে ফিরে যায় ও মল দ্বারা নির্গত হয়। ভিটামিন ডি৩ পরিপাকতন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে এবং দেহে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

১ম-১০ম দিন: প্রতিদিন ১ টি করে আলজি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ড৩ ট্যাবলেট খাবারের পর সেবন করুন।

১১তম দিন: একটি ইবান্ড্রোনিক এসিড ট্যাবলেট ১ গ্লাস খাবার পানির সাথে খালি পেটে সকালের নাস্তার ১ ঘণ্টা পূর্বে সেবন করুন। ইবান্ড্রোনিক এসিড ট্যাবলেট গ্রহণের পর ১ ঘণ্টা পর্যন্ত সোজা হয়ে স্বাভাবিক হাঁটাচলা করা যাবে বা বসে থাকা যাবে, কিন্তু শোয়া যাবে না অথবা অন্য কোন খাবার ও পানীয় (খাবার পানি ব্যতীত) গ্রহণ করা যাবে না।

১১ তম-৩০ তম দিন: প্রতিদিন ১ টি করে বায়োক্যাল- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ড৩ ট্যাবলেট খাবারের পর সেবন করুন।

শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে নিরাপদ ব্যবহার ও কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ইবানড্রোনিক এসিড: যে সকল ওষুধের মধ্যে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য বহুযোজী ক্যাটায়ন (যেমন- অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন) আছে সেগুলো ইবানড্রোনিক এসিডের শোষণকে ব্যাহত করে। যেহেতু এ্যাসপিরিন, এনএসএআইডি এবং বিসফসফোনেট প্রত্যেকেই পরিপাকতন্ত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তাই ইরানড্রোনিক এসিডের সাথে একত্রে এ্যাসপিরিন বা এনএসএআইডি ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে।

ক্যালসিয়াম (এ্যালজি উৎস) এবং ভিটামিন ডি৩: এই কম্বিনেশনটির সাথে ডিজক্সিন, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এন্টাসিড, অ্যালুমিনিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম, অন্যান্য ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্টস এবং ক্যালসিট্রায়োলের সম্ভাব্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ওরাল ক্যালসিয়াম টেট্রাসাইক্লিন, ডক্সিসাইক্লিন, অ্যামিনোসাইক্লিন বা অক্সিটেট্রাসাইক্লিনের শোষণ হ্রাস করে। থায়াজাইড ডাইইউরেটিক ক্যালসিয়ামের বৃক্কীয় নিষ্কাশন হ্রাস করে। ফিনাইটোমিন, বারবিচুরেট, গ্লুকোটিওয়েড ভিটামিন ডি৩ এর মেটাবলিজমকে বৃদ্ধি করে।

খাবার ও অন্য কিছুর সাথে: কিছু কিছু খাবার যেমন- পালং শাক, শস্যদানা, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবারের সাথে একত্রে ব্যবহারে অস্ত্রে ক্যালসিয়ামের শোষণ হ্রাস পেতে পারে। ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট, এন্টাসিড এবং মুখে গ্রহণীয় কিছু ওষুধ ইরানডোনেটের শোষণকে ব্যাহত করতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

যাদের ইরানড্রোনিক এসিড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি৩ অথবা এই কিটের অন্যান্য উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই কিটটি প্রতিনির্দেশিত।

ইবানমোনিক এসিড: এটি নিম্নে উল্লেখিত ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত-
  • খাদ্যনালী থেকে খাদ্যদ্রব্যের সম্মুখ গমনে বিলম্ব হয় এরকম কিছু সমস্যায় যেমন- খাদ্যনালীর অস্বাভাবিক সংকীর্ণতা বা এ্যাকালেসিয়া
  • কমপক্ষে ৬০ মিনিটের জন্য দাঁড়াতে বা সোজা হয়ে বসতে অক্ষমতা
  • হাইপোক্যালাসেমিয়া
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি৩: এই কম্বিনেশনটি নিম্নে উল্লেখিত ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত-
  • হাইপারক্যালসেমিয়া
  • হাইপারপ্যারাথাইরয়ডিজম
  • নেফ্রোলিথিয়াসিস
  • হাইপারক্যালসিইউরিয়া
  • মারাত্মক বৃক্কীয় অকার্যকারিতা
  • ডিজক্সিনের সাথে একত্রে ব্যবহারের ক্ষেত্রে
  • বৃক্কে পাথরের উপস্থিতি থাকলে
  • জলিঞ্জার-এলিসন সিনড্রোম

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হলো পিঠে ব্যথা, বদহজম, হাত পায়ে ব্যথা, ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ব্যথা, পেশীতে ব্যথা এবং পরিপাকতন্ত্রের উপরের অংশে অস্বস্তি।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ইবানড্রোনিক এসিডের ব্যবহারে ওষুধ সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রজননে সক্ষম এরকম মহিলাদের ক্ষেত্রে এই কিটটি নির্দেশিত নয়। মাতৃদুগ্ধে ইবানড্রোনেটের উপস্থিতি, মায়ের দুধ পাচ্ছে এমন শিশুদের উপর অথবা দুগ্ধ নিঃসরণের উপর ইবানড্রোনেটের প্রভাব সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এই কিটটি স্তন্যদানকালে ব্যবহার করা উচিত নয়।

সতর্কতা

ইবানড্রোনিক এসিড-
  • যে সকল রোগীর পরিপাকতন্ত্রের উপরের অংশের সক্রিয় সমস্যা (যেমন- ব্যারেটস ইসোফ্যাগাস, খাদ্য গলাধঃকরণে সমস্যা, খাদ্যনালীর অন্যান্য সমস্যা, গ্যাস্ট্রাইটিস, ডিওডেনাইটিস অথবা পরিপাকনালীতে ক্ষত) রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ইরানড্রোনিক এসিড ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
  • ইবানড্রোনিক এসিড দ্বারা চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে হাইপোক্যালসেমিয়া ও মিনারেল মেটাবলিজমের অন্যান্য সমস্যার চিকিৎসা করে নিতে হবে।
  • কোন রোগীর ক্ষেত্রে অস্থি, অস্থিসন্ধি ও পেশীতে মারাত্মক ব্যথা দেখা দিলে ইবানড্রোনিক এসিড দ্বারা চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হবে।
  • কোন রোগী চোয়ালের অস্টিওনেক্রোসিসের শিকার হলে বিসফসফোনেট দ্বারা চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হবে।
  • কোন রোগী ঊরু বা কুঁচকির ব্যথার অভিযোগ করলে অসম্পূর্ণ ফিমার ফ্র্যাকচার হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং সেক্ষেত্রে বিসফসফোনেট দ্বারা চিকিৎসা বন্ধ রাখতে হবে। মারাত্মক বৃক্কীয় অকার্যকারিতার (ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স <৩০ মিলি/মিনিট) রোগীদের ক্ষেত্রে ইবানড্রোনিক এসিড দেয়া যাবে না।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি৩:
  • যে সকল রোগীর মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় বৃক্কীয় অকার্যকারিতা বা মৃদু হাইপারক্যালসিইউরিয়া রয়েছে
  • তাদেরকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং মাঝে মাঝে প্লাজমা ক্যালসিয়াম মাত্রা ও মূত্রের মাধ্যমে নিষ্কাশিত ক্যালসিয়াম মাত্রা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
  • যে সকল রোগীর হৃদরোগ, সারকয়ডোসিস, বৃক্কে পাথর এবং বৃত্তের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
  • হাইপারক্যালসেমিয়া হলে ওষুধটি বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। যে সকল রোগীর শরীরে পাথর সৃষ্টির ইতিহাস রয়েছে তাদেরকে বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • ক্যালসিয়াম ও আয়রন গ্রহণের মধ্যে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান রাখতে হবে।

মাত্রাধিক্যতা

ইবানড্রোনিক এসিডের মাত্রাধিক্যের চিকিৎসার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ইবানড্রোনিক এসিডের মাত্রাধিক্যের ফলে হাইপোক্যালসেমিয়া, হাইপোফসফেটেমিয়া এবং পরিপাকতন্ত্রের উপরের অংশের বিরূপ প্রতিক্রিয়া যেমন- পাকস্থলীতে অস্বস্তি, বদহজম, ইসোফ্যাজাইটিস, গ্যাস্ট্রাইটিস অথবা পরিপাকতন্ত্রে ক্ষত হতে পারে। এক্ষেত্রে ইবানড্রোনিক এসিডের শোষণ হ্রাসে দুধ বা এন্টাসিড দিতে হবে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি৩ কম্বিনেশনটির মাত্রাধিক্যের ফলে বমি বমি ভাব ও বমি, মারাত্মক তন্দ্রাভাব, শুষ্ক মুখগহ্বর, ক্ষুধামান্দ্য, মুখে ধাতব স্বাদ, পাকস্থলীতে টান, সংজ্ঞাহীনতা, ডায়রিয়া, দুর্বলতা, মাথা ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ঘোরা বা বিরক্তি ভাব দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে এই কম্বিনেশন দ্বারা চিকিৎসা বন্ধ করে রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার জন্য উপদেশ দিতে হবে।

সংরক্ষণ

আলো থেকে দূরে, ঠাণ্ডা (৩০°সে. এর নিচে) ও শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names