কো-এনজাইম কিউ ১০ [ইউবিডেকারেনন]

নির্দেশনা

ইহা কো-এনজাইম কিউ১০ এর ঘাটতি এবং মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসঅর্ডারে নির্দেশিত। এ ছাড়াও এটা নিম্নোক্ত সকল রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে নির্দেশিত-

ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব-
  • নারীর বন্ধ্যাত্ব (যেমনঃ ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু স্বল্পতা এবং পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম)
  • পুরুষের বন্ধ্যাত্ব
স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা-
  • মায়োপ্যাথি (পেশীর জটিলতা)
  • অ্যাটাক্সিয়া (পেশীর অসমক্রিয়া)
  • বংশগত স্নায়ু ও পেশী তন্ত্রের জটিলতা
  • মাইগ্রেন
  • পেশীর অপুষ্টতা
  • পারকিনসন্স রোগ
  • অ্যালজাইমার রোগ
হৃদতন্ত্রের জটিলতা-
  • রক্তাধিক্য জনিত হৃদপিণ্ডের বিকলতা
  • উচ্চ রক্তচাপ
  • বুকে শ্বাসরোধক ব্যথা
  • হৃদপেশীর জটিলতা
  • অস্ত্রপাচারকালীন হৃদপিণ্ডের সুরক্ষা
অন্যান্য-
  • দাঁতের মাড়ির রোগ
  • ডায়াবেটিস
  • হাঁপানি
  • দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
  • ক্যান্সার
  • থাইরয়েড হরমোন জনিত জটিলতা

ফার্মাকোলজি

কোএনজাইম কিউ ১০ বা ইউবিডেকারেনন স্নেহ বা চর্বিতে দ্রবীভূত হয় এমন ভিটামিনের মত একটি উপাদান। এটি শরীরের প্রতিটি কোষে অবস্থিত মাইটোকন্ড্রিয়ার ঝিল্লিতে ইলেক্ট্রন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের অপরিহার্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং শ্বসন ও এটিপি তৈরিতে সাহায্য করে। সক্রিয় বিপাকে অংশগ্রহণকারী কোষে সর্বোচ্চ মাত্রায় ইউবিডেকারেনন উপস্থিত থাকে এবং উচ্চ বিপাকক্রিয়া সম্পন্ন কোষ ও কলায় (যেমন- হৃদপিণ্ড, পেশীকলা, দাঁতের মাড়ি) এর ঘাটতি অতিমাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শরীরে ইউবিডেকারেনন এর উৎপাদন কমতে থাকে। খালি পেটে শোষণ কম হয় এবং ভরা পেটে বা চর্বিযুক্ত খাবারের সাথে গ্রহনে ইউবিডেকারেনন এর শোষণ বেশি হয়।

ইউবিডেকারেনন গ্রহনের পর তা ক্ষুদ্রান্তের মাধ্যমে শোষিত হয়ে লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমে যায় এবং পরবর্তীতে যকৃতে গিয়ে লাইপোপ্রোটিনের সাথে মিশ্রিত হয়ে রক্তে প্রবাহিত হয় যা পরবর্তীতে বিভিন্ন টিস্যুতে গিয়ে কাজ করে। ইউবিডেকারেনন মস্তিষ্ক সহ শরীরের বিভিন্ন কলাতে বন্টিত হয় যার মাত্রা বিভিন্ন হয়। উচ্চ বিপাক ক্রিয়া সম্পন্ন কলাতে (যেমন- হৃদপিণ্ড, পেশী, যকৃত, বৃক্ক ও মস্তিষ্ক) ইউবিডেকারেননের ঘণমাত্রা বেশি থাকে। ইউবিডেকারেননের বিপাক ক্রিয়া শরীরের সকল কলাতে সম্পন্ন হয়। ইউবিডেকারেনন প্রধানত যকৃত নিঃসৃত রস দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। মৌখিক ভাবে সেবনের ক্ষেত্রে এর মাত্রা ৬০ ভাগই অপরিবর্তিত অবস্থায় মলের সাথে নিষ্কাশিত হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

কো-এনজাইম কিউ১০ ঘাটতি এর জন্য: প্রতিদিন ১৫০ মিঃগ্রাঃ
সাম্প্রতিক মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসঅর্ডার এর জন্য: প্রতিদিন ১৫০-১৬০ মিঃগ্রাঃ বা দৈনিক ২ মিঃগ্রাঃ/কেজি
কনজেসটিভ হার্ট ফেলিওর এর জন্য: প্রতিদিন ১০০ মিঃগ্রাঃ ২ বা ৩ টি বিভক্ত মাত্রায়
মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসন এর জন্য: প্রতিদিন ১২০ মিঃগ্রাঃ ২ টি বিভক্ত মাত্রায়
হাইপারটেনশন এর জন্য: প্রতিদিন ১২০-২০০ মিঃগ্রাঃ ২ টি বিভক্ত মাত্রায়
আইসোলেটেড সিস্টোলিক হাইপারটেনশন এর জন্য: ৬০ মিঃগ্রাঃ দিনে ২ বার
মাইগ্রেন হেডেক এর জন্য: প্রতিদিন ১০০ মিঃগ্রাঃ ৩ টি বিভক্ত মাত্রায়
পারকিনসন ডিজিজ এর জন্য: প্রতিদিন ৩০০ মিঃগ্রাঃ, ৬০০ মিঃগ্রাঃ, ১২০০ মিঃগ্রাঃ, ২৪০০ মিঃগ্রাঃ ৩ বা ৪ টি বিভক্ত মাত্রায়
পুরুষের ইনফার্টিলিটি এর জন্য: প্রতিদিন ২০০মিঃগ্রাঃ-৩০০ মিঃগ্রাঃ
মাস্কুলার ডিসট্রোফি এর জন্য: প্রতিদিন ১০০ মিঃগ্রাঃ

একবারে বেশী মাত্রার পরিবর্তে দৈনিক মোট মাত্রাকে কম পরিমানে দুই বা তিনটি বিভক্ত মাত্রায় করে সেবন করলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম হয়।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

স্ট্যাটিন: স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ মানুষের শরীরে ইউবিডেকারেননের পরিমান কমিয়ে দেয়। ইউবিডেকারেনন ও স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ সমূহের সমব্যবহারে স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত না করে ইউবিডেকারেননের পরিমান বৃদ্ধি করে।

ওয়ারফেরিন: ইউবিডেকারেনন ওয়ারফেরিনের কার্জকারিতাকে কমিয়ে দিতে পারে।

বিটা ব্লকার: বিটা ব্লকার ওষুধ সমূহ (বিশেষত প্রোপ্রানোলল) ইউবিডেকারেননের উপর নির্ভরশীল কিছু এনজাইমের উৎপাদনকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।

এন্টিবায়োটিক ওষুধ: ইউবিডেকারেনন টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ওষুধ সমূহের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রয়োজনে এন্টিবায়োটিক ওষুধ সমূহের মাত্রা পুনঃনির্ধারণ করা যেতে পারে।

ডক্সোরুবিসিন: ইউবিডেকারেনন ডক্সোরুবিসিনের কার্ডিওটক্সিসিটির প্রবনতা কমিয়ে দেয়।

প্রতিনির্দেশনা

যে সমস্ত রোগীর এই ঔষধ বা এই ঔষধের যে কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা আছে তাদের ক্ষেত্রে কো-এনজাইম কিউ১০ প্রতিনির্দেশিত। যে সমস্ত রোগী আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে অপারেশনের কথা আছে তাদের ক্ষেত্রেও প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

কো-এনজাইম কিউ১০ বেশিরভাগ প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীর জন্য নিরাপদ। এটা কিছু মৃদু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিশেষ করে পাকস্থলীর ব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া ঘটাতে পারে। এটা কিছু কিছু রোগীর এলার্জিজনিত ত্বকের ফুসকুরি তৈরি করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে কো-এনজাইম কিউ১০ ব্যাবহার করা উচিত নয়।

সতর্কতা

কো-এনজাইম কিউ১০ রক্তে সুগারের পরিমান কমিয়ে দেয় এজন্য যে সমস্ত রোগী ডায়াবেটিস বা হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় ভুগছে তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কো-এনজাইম কিউ১০ রক্তের চাপ কমিয়ে দেয় এজন্য যে সমস্ত রোগীর রক্তচাপ কম আছে এবং যারা রক্তচাপ কমানোর ঔষধ সেবন করছে তাদের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Herbal and Nutraceuticals, Supplements & adjuvant therapy

সংরক্ষণ

আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names