ডেক্সআইবুপ্রোফেন

নির্দেশনা

ডেক্সআইবুপ্রোফেন নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • ওস্টিওআর্থ্রাইটিস এর লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসায়
  • রিউমাটোয়েডাল ডিসঅর্ডারে নির্দেশিত যেমন- ওসিয়াস রিউমাটিজম, এনকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, মাসকুলার রিউমাটিজম, ডিজেনারেটিভ জয়েন্ট ডিজিজ
  • ব্যথাযুক্ত স্রাবে লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসায় (প্রাথমিক ব্যথাযুক্ত স্রাবে)
  • সাধারণ মাথাব্যথায় ও জ্বরে
  • মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের ব্যথায় লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা যেমন-মাংস পেশীর ব্যথা, দাঁতের ব্যথা
  • সাধারণ সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা সংশ্লিষ্ট মাথা ব্যথায়।

ফার্মাকোলজি

ডেক্সআইবুপ্রোফেন (এস (+) আইবুপ্রোফেন) রেসিমিক আইবুপ্রোফেনের সক্রিয় ফার্মাকোলজিক এনানসিওমার ডেক্সআইবুপ্রোফেন রেসিমিক আইবুপ্রোফেনের মতোই প্রদাহরোধী ব্যথানাশক ওষুধ। ডেক্সআইবুপ্রোফেন প্রোস্টাগ্লানডিন সংশ্লেষণ প্রতিহত করার মাধ্যমে কাজ করে

মাত্রা ও সেবনবিধি

ওষুধের মাত্রা অবশ্যই রোগের তীব্রতা ও রোগীর চাহিদানুযায়ী সমন্বয় করা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী ব্যথায় সবচেয়ে সর্বনিম্ন কার্যকর মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।

২-৩ টি বিভক্ত মাত্রায় ডেক্সআইবুপ্রোফেন দৈনিক মাত্রা ৬০০-৯০০ মি.গ্রা.। তীব্র ব্যথা রোগের তীব্রতা বৃদ্ধিতে ডেক্সআইবুপ্রোফেনের দৈনিক মাত্রা ক্রমান্বয়ে ১২০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্রা ১২০০ মি.গ্রা.।

ব্যথাযুক্ত স্রাবে ডেক্সআইবুপ্রোফেন এর মাত্রা ৬০০-৯০০ মি.গ্রা. ২-৩ টি বিভক্ত মাত্রায় নির্দেশিত।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ডেক্সআইবুপ্রোফেন এর ড্রাগ ইন্টার্যাকশান রেসিমিক আইবুপ্রোফেন এর মতই। যেসব ওষুধের সাথে ডেক্সআইবুপ্রোফেন এর ড্রাগ ইন্টার্যাকশান হয় সেগুলো হল-এন্টিকোয়াগুলেন্টস, হাইডান্‌টোয়েন, সালফোনামাইডস, টাইকোপিডিন, লিথিয়াম, অন্যান্য এনএসআইডি, এসিই ইনহিবিটরস, বিটা ব্লকারস, সাইকোসপোরিন, ট্যাক্রোলিমাস, কর্টিকোস্টেরয়েডস্, ডিগক্সিন, মেথোট্রিক্সেট, পেন্টোক্সিফাইলিন, ফেনায়টোয়েন, প্রবেনিসিড, সালফিনপাইরাজোন, সালফোনাইল ইউরিয়া, থায়াজাইড ও থায়াজাইড ধরনের ডায়ইউরেটিক এবং জিডোভুডিন।

প্রতিনির্দেশনা

ডেক্সআইবুপ্রোফেন অথবা ট্যাবলেটের যেকোন উপাদান অথবা যেকোন এনএসএআইডি ওষুধের প্রতি অতিসংবেদনশীলতার ইতিহাস রয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত। এসপিরিন ও অন্যান্য এনএসএআইডি গ্রহনের ফলে শ্বাসকষ্ট, এরাউজ ব্রংকোস্পাজম, একিউট রাইনাইটিস, আর্টিকারিয়া, ইডিমায় আক্রান্ত হলে, এ ওষুধটি প্রতিনির্দেশিত। যেসব ক্ষেত্রে রক্তপাত হয় অথবা হওয়ার ঝুঁকি থাকে সেসব ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত যেমন-ক্রনস ডিজিজ, আলসারেটিভ কোলাইটিস। এছাড়াও হার্ট ডিজিজ, কিডনির অসমকার্যকারিতায় (জিএফআর <৩০ মিলি/মিনিট) ও যকৃতের অসমকার্যকারিতায় প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, ডেক্সআইবুপ্রোফেন রেসিমিক আইবুপ্রফেনের অনুরূপ। সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ হচ্ছে বদহজম, ডায়রিয়া, অবসাদ, মাথাব্যথা, বমিভাব, বমি, পেট ব্যথা। অতিসংবেদনশীলতা হবার নিদর্শন রয়েছে যেমন- রক্তক্ষরন, ক্ষতহওয়া।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায়: যদিও প্রাণীদেহে গবেষণায় ডেক্সআইবুপ্রোফেন ও আইবুপ্রোফেন কোন ধরনের টেরাটোজেনিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি, তবুও গর্ভকালে এ ওষুধটির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকলে, ব্যবহার অনুচিত। কারণ প্রাণীদেহে প্রজনন পরীক্ষার সন্তোষজনক ফলাফল দ্বারা মানবদেহে সন্তোষজনক ফলাফল প্রত্যাশা করা যায় না। এনএসএআইডি ওষুধ ব্যবহারে ফিটাসের রক্তসংবহনতন্ত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাবের তথ্য (ক্লজার অব্ডা ক্টাস আর্টিরিওসাস) পাওয়া গিয়াছে, এ কারণে গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে এ ওষুধটির ব্যবহার বর্জনীয়।

স্তন্যদানকালে: রেসিমিক আইবুপ্রোফেন মতই, ডেক্সআইবুপ্রোফেন মাতৃদুগ্ধে খুবই অল্প পরিমানে নিঃসৃত হয়। সেজন্য ডেক্সআইবুপ্রোফেন ব্যবহারে এ সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতা

ব্রংকিয়াল এজমা, শ্বষণতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতায় ও এলার্জিপ্রবণ রোগীদের ক্ষেত্রে অতি সতর্কতার সহিত ডেক্সআইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও লিভার, কিডনি ও হৃৎপিন্ডের অসমকার্যকারিকায় এবং উচ্চ রক্ত চাপজনিত রোগীদের উচ্চ চাপরোধী ওষুধের অকার্যকারিতায় এ ওষুধটি সতর্কতার সহিত ব্যবহার করা উচিত। যে রোগীদের সিস্টেমিক লুপাস ও অন্যান্য অটোইমিউন ডিজিজ রয়েছে, চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তাদের ডেক্সআইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা উচিত। সক্রিয় রক্তপাত ও রক্তপাতের ঝুঁকি রয়েছে এ ধরনের রোগে যেমন- গ্যাস্ট্রোডিওডেনাল আলসার, আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রনস ডিজিজ, এলকোহলিজম। প্রথম ডেক্সআইবুপ্রোফেন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে অতিসংবেদনশীলতা দেখা দিলে সাথে সাথে এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

যকৃতের অসমকার্যকারিতায়: নিবিড় পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে, মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের অসমকার্যকারিতায় ডেক্সআইবুপ্রোফেনের সর্বনিম্ন মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।

কিডনির অসমকার্যকারিতায়: মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের অসমকার্যকারিতায় ডেক্সআইবুপ্রোফেনের সর্বনিম্ন মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। কিডনির তীব্র অসমকার্যকারিতায় ডেক্সআইবুপ্রোফেন দেয়া যাবে না।

শিশুদের সেবনমাত্রা ও বিধি: যদিও ডেক্সআইবুপ্রোফেন ইউকে-তে ১৮ বছরের নীচের বাচ্চাদের জন্য নিবন্ধনকৃত নয়, কিছু দেশে এমন ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, সুইজারল্যান্ডে ডেক্সআইবুপ্রোফেন ৬ বছর এবং তদুর্ধ বাচ্চাদের মুখে খাবার ডোজ ১০ থেকে ১৫ মি.গ্রা. প্রতি কেজি ওজন হিসাবে দিনে ২ থেকে ৪ বার ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে।

বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে: সর্বনিম্ন কার্যকর মাত্রা নির্দেশিত। ওষুধটি সুসহনিয় হলে মাত্রা প্রাপ্ত বয়স্কদের সমান করা যেতে পারে।

মাত্রাধিক্যতা

ডেক্সআইবুপ্রোফেন এর একিউট টক্সিসিটি কম। সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ মি.গ্রা./কেজি ওজন মাত্রায় বিষক্রিয়ার উপসর্গ দেখা যায়। মৃদু উপসর্গ যেমন পেটব্যথা, পেট ফাঁপা, বমিভাব, বমি, লেথার্জি, মাথাব্যথা, টিনিটাস ও এটাক্সিয়া। মাঝারি থেকে মারাত্মক উপসর্গ যেমন- নিম্ন রক্ত চাপ, নিম্ন তাপমাত্রা, মেটাবোলিক এসিডোসিস, কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস, কোমা, শ্বাসরুদ্ধতা। চিকিৎসা উপসর্গ ভিত্তিক নির্দিষ্ট কোন এন্টিডোট নেই। অল্প পরিমান মাত্রাধিক্যের ক্ষেত্রে সক্রিয় চারকোল গ্রহন করা যেতে পারে। জীবনের জন্য ঝুঁকি এমন পরিমান ওষুধ গ্রহন করলে রোগীকে অবশ্যই গ্রহনের ৩০ মি. এর মধ্যে বমি করাতে হবে। ডেক্সআইবুপ্রোফেনের প্রোটিন বাইন্ডিং বেশি হওয়ায় ডায়ালায়সিস এবং হিমোডায়ালায়সিস কার্যকর হবে না।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Drugs for Osteoarthritis, Drugs used for Rheumatoid Arthritis, Non-steroidal Anti-inflammatory Drugs (NSAIDs)

সংরক্ষণ

৩০°সে. এর উপরে সংরক্ষণ করা হতে বিরত থাকুন। আলো থেকে দূরে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।