ডায়াজিপাম

নির্দেশনা

মৃদু থেকে মাঝারী দুশ্চিন্তা, অতি উত্তেজনা, ভয়, উগ্র স্বভাব এসব ক্ষেত্রে ডায়াজিপাম স্বল্পকালীন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এলকোহল প্রত্যাহারের লক্ষনাদির চিকিৎসায়, মাংশপেশীর খিচুনি, মৃগী রােগীর খিচুনি প্রতিরােধে, অস্ত্রোপচারের প্রাক-চিকিৎসায়, জ্বর জনিত খিঁচুনি ডায়াজিপাম ব্যবহৃত হয়।

বিবরণ

ডায়াজিপাম একটি বেনজোডায়াজিপাইন জাতীয় উপাদান এবং একটি নিরাপদ নিদ্রা আকর্ষণকারী ওষুধ। একই সাথে এর এংক্সিওলাইটিক, এন্টিকনভালসেন্ট এবং মাংশপেশী শিথিলকারী ধর্ম আছে। ধাত্রীবিদ্যাসংক্রান্ত এবং মৃগী রােগের চিকিৎসায় ডায়াজিপাম ইঞ্জেকশন বহুল ব্যবহৃত।

ফার্মাকোলজি

ডায়াজিপাম গাবা রিসেপ্টর এর নির্দিষ্ট জায়গায় সংযুক্ত হয়ে গাবার কার্যকারিতা ত্বরান্বিত করে, যা কোষের ক্লোরাইড চ্যানেলকে উন্মুক্ত করে ক্লোরাইড আয়নকে কোষে প্রবেশে সহায়তা করে এবং নিউরনের উত্তেজনা প্রশমন করে। 

মুখে খাওয়ার পর ডায়াজিপাম খুব দ্রুত এবং সম্পূর্ণভাবে শােষিত হয়। ১৫-৯০ মিনিটে প্লাজমা ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয়। গড় প্লাজমা অর্ধায়ু ৩০ ঘন্টা। প্লাজমা প্রােটিন বাইন্ডিং ৯৮-৯৯%। ডায়াজিপাম যকৃত এ মেটাবােলাইজ হয়। অতি অল্প পরিমাণ মেটাবােলাইট পিত্তরসের মাধ্যমে নিঃসৃত হয় এবং মলের মাধ্যমে দূরীভুত হয়। পায়ুপথে সাপােজিটরি দ্বারা ডায়াজিপাম দেয়া হলে তা খুবই ভালােভাবে শােষিত হয় এবং ১.৫-২ ঘন্টা পর প্লাজমা ঘনত্ব সর্বোচ্চ হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

মুখে খাওয়ার জন্য-
  • দুশ্চিন্তা: ২ মিগ্রা দিনে ৩ বার, প্রয়ােজনবােধে দিনে ১৫-৩০ মিগ্রা বিভক্ত মাত্রায় সেব্য। বয়স্ক অথবা দূর্বল রােগীদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের অর্ধেক মাত্রায় ব্যবহার্য।
  • দুশ্চিন্তা জনিত অনিদ্রা: ৫-১৫ মিগ্রা রাতে শােবার সময়।
  • শিশুদের দুঃস্বপ্ন অথবা একাকীত্ব: ১-৫ মিগ্রা রাতে শােবার সময়।
ইঞ্জেকশন হিসেবে মাংশপেশী শিরাপথে ধীরে ধীরে (বৃহৎ শিরায়, ৫ মিগ্রা/মিনিট এর কম হারে):
  • তীব্র দুশ্চিন্ত, হঠাৎ আতঙ্ক, হঠাৎ এলকোহল প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে: ১০ মিগ্রা করে, প্রয়ােজনবোধে ৪ ঘন্টা পরপর দেয়া যেতে পারে।
  • শিশুদের ফেব্রিল খিঁচুনির ক্ষেত্রে: ২৫০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি শিরাপথে ধীরে ধীরে প্রয়োগ করতে হবে।
পায়ুপথে:
  • শিশুদের ক্ষেত্রে- ২৫০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি ডোজ (সর্বোচ্চ ১০ মিগ্রা) করে, প্রয়োজনবোধে ইহা পুনঃরাবৃত্তি করা যেতা পারে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

এলকোহলের সাথে ডায়াজিপাম এর ব্যবহার নির্দেশিত নয়। স্নায়ুতন্ত্রীয় ওষুধ, হিপনােটিক, নিদ্রা উদ্রেককারী এন্টিহিস্টামিন এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র অবসাদকারী ওষুধের সাথে ডায়াজিপাম এর ব্যবহারে নিদ্রালুতা বৃদ্ধি পেতে পারে। ফেনােবারবিটোন ডায়াজিপাম এর নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং সিমেটিডিন হ্রাস করে। ওমিপ্রাজল এবং আইসােনিয়াজাইড ডায়াজিপাম এর বিপাক ক্রিয়ায় বাঁধা প্রদান করে।

প্রতিনির্দেশনা

শ্বাসযন্ত্রের উচ্চ সংবেদনশীলতা, ফুসফুসের হ্রাসকৃত কার্যকারিতা, রেসপিরেটরী ডিপ্রেশন, মাইয়েস্থেনিয়া গ্রাভিস-এ সকল ক্ষেত্রে ডায়াজিপাম ব্যবহার করা যাবে না।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ডায়াজিপাম সাধারণত সুসহনীয়। উচ্চমাত্রায় ঘুম, ঝিমঝিম ভাব, মাথা হালকাবােধ হওয়া, বিভ্রান্তি এবং মাংশপেশীর কাজের অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

ডায়াজিপাম এবং এর বিপাকীয় যৌগ প্লাসেন্টায় প্রবেশ করে। এছাড়া মাতৃদুগ্ধেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাই গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালে এর ব্যবহার পরিহার করা উচিত। USFDA প্রেগনেন্সি ক্যাটেগরী-ডি।

সতর্কতা

দীর্ঘদিন ব্যবহার এবং হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করে দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যেসব রােগীর যকৃতের সমস্যা আছে বা কিডনির সমস্যা আছে, মাংশপেশীর দুর্বলতা, এলকোহলের অপব্যবহার কিংবা শ্বাসযন্ত্রের রােগ আছে সে সকল ক্ষেত্রে ডায়াজিপাম ব্যবহার করা যাবে না।

মাত্রাধিক্যতা

ঘুমঘুম ভাব, মাংশপেশীর দুর্বলতা ইত্যাদি। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কোমা কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Benzodiazepine sedatives, Centrally acting Skeletal Muscle Relaxants, Primary anti-epileptic drugs

সংরক্ষণ

আলাে থেকে দূরে ঠান্ডা (২৫°সে. এর নীচে) ও শুষ্কস্থানে রাখুন।

Available Brand Names