ফিউরোসেমাইড + স্পাইরোনোলেকটোন

নির্দেশনা

ফিউরোসেমাইড এবং স্পাইরোনোলেকটোন ট্যাবলেট নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • প্রাথমিক উচ্চরক্তচাপ
  • ক্রণিক কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিউর
  • উদরের গহ্বরে পানি সম্বলিত হেপাটিক সিরোসিস (অ্যাসাইটিস)
  • অতিরিক্ত পানি ধারণের কারণে স্ফিত হয়ে যাওয়া (ইডিমা)
  • হাইপারএলডোস্টেরোনিজম
  • সেকেন্ডারী হাইপারএলডোস্টেরোনিজম সম্বলিত রেজিস্ট্যান্ট ইডিমা

ফার্মাকোলজি

ইহা একটি কম্বাইড্ ডায়ুরেটিক যাতে আছে একটি লুপ-ডায়ুরেটিক, ফিউরোসেমাইড এবং একটি পটাসিয়াম স্প্যারিং ডায়ুরেটিক, স্পাইরোনোলেকটোন। ফিউরোসেমাইড এবং স্পাইরোনোলেকটোন ক্রিয়া কৌশলের স্থল ভিন্ন কিন্তু সম্পূরক। ফিউরোসেমাইড উর্ধ্বমূখী লুপ-অব হেনলির Na+/K+/2CI- কো-ট্রান্সপোর্টারকে বাধা দান করে এবং সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্লোরাইড আয়নের শোষণ বন্ধ করে; ফলস্বরূপ মূত্রে সোডিয়াম ও পানির নির্গমণ বৃদ্ধি পায়। এটি পটাসিয়ামের নির্গমণকে প্রভাবিত করে। স্পাইরোনোলেকটোন ডিস্টাল টিউবিউল এ এলডোস্টেরনের ক্রিয়াকে বিরোধিতা করে পটাসিয়ামের পরিবর্তে সোডিয়াম আয়নের শোষণকে বাধা দান করে। এর ফল স্বরূপ সোডিয়ামের নির্গমণ বিশেষভাবে প্রভাবিত হয় এবং ফিউরোসেমাইড দ্বারা প্রভাবিত পটাসিয়াম আয়নের অপচয় কমে যায়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ফিউরোসেমাইড ২০ মি.গ্রা. এবং স্পাইরোনোলেকটোন ৫০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট: ওষুধের প্রতি রোগীর প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী দৈনিক ১-৪টি ট্যাবলেট (২০-৮০ মি.গ্রা. ফিউরোসেমাইড এবং ৫০-২০০ মি.গ্রা. স্পাইরোনোলেকটোন) দেয়া যেতে পারে।

ফিউরোসেমাইড ৪০ মি.গ্রা. এবং স্পাইরোনোলেকটোন ৫০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট: যে সব রোগীদের উচ্চ মাত্রার ফিউরোসেমাইড এবং স্পাইরোনোলেকটোন প্রয়োজন তাদেরকে এই ট্যাবলেট দৈনিক ১-২টি (৪০-৮০ মি.গ্রা. ফিউরোসেমাইড এবং ৫০-১০০ মি.গ্রা. স্পাইরোনোলেকটোন) দেয়া যেতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: ফিউরোসেমাইড এবং স্পাইরোনোলেকটোন শিশুদের ব্যবহারের উপযোগী নয়।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

এসিই ইনহিবিটর এবং পটাসিয়াম লবণের সাথে এ ওষুধ গ্রহণ করলে হাইপারক্যালিমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্পাইরোনোলেকটোন রক্তে কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড যেমন- ডিগোক্সিন এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং এটি ডিজিটালিস বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। কর্টিকোস্টেরয়েড যদি স্পাইরোনোলেকটোন সাথে ব্যবহার করা হয় তাহলে হাইপোক্যালেমিয়া হতে পারে। ফিউরোসেমাইড যদি ইনডোমিথাসিন এবং অন্যান্য এনএসএআইডি এর সাথে ব্যবহার করা হয় তাহলে এ ওষুধের রক্তচাপ কমানো এবং মূত্র বর্ধক কার্যকারিতা হ্রাস অথবা লোপ পেতে পারে। ফিউরোসেমাইড এমাইনোগ্লাইকোসাইড এন্টিবায়োটিক জনিত অটোটক্সিসিটি বৃদ্ধি করতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

যেসব রোগীদের এনুরিয়া, একিউট রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি, রেনাল ফাংশনের ক্রমশঃ অবনতি (ক্রিয়াটিনিন ক্লিয়ারেন্স: <৩০ মি.লি./মিনিট), হাইপারক্যালেমিয়া, এডিসন্স ডিজিজ এবং যেসব রোগীর ফিউরোসেমাইড, স্পাইরোনোলেকটোন অথবা সালফোনেমাইড এর প্রতি সংবেদনশীলতা আছে তাদের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

স্পাইরোনোলেকটোন ব্যবহারের কারণে মাথা ব্যথা, ঝিমুনি, ডায়রিয়া এবং পেশী সংকোচন সহ পাকস্থলীর রোগ দেখা দিতে পারে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটাক্সিয়া, মানসিক সমস্যা এবং চামড়ায় ফুঁসকুড়ি দেখা দিতে পারে। গাইনোকোমাসটিয়া সাধারণত বিরল এবং খুব কম ক্ষেত্রেই স্তনের বৃদ্ধি হতে পারে। অন্যান্য হরমোন সংক্রান্ত সমস্যার মধ্যে হিরসুটিজম, গলার স্বরের গাঢ়তা বৃদ্ধি, অনিয়মিত রজঃস্রাব এবং পুরুষত্বহীনতা দেখা দিতে পারে। রক্তের ইউরিয়া নাইট্রোজেন স্বল্প বৃদ্ধি পেতে পারে এবং মৃদু অম্লতা দেখা দিতে পারে। স্পাইরোনোলেকটোন হাইপোনেট্রেমিয়া এবং হাইপারক্যালেমিয়ার উদ্রেক ঘটাতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে অত্যাধিক মূত্র বর্ধন ডিহাইড্রেশন এবং ভাসকুলার থ্রম্বোসিস ও এমবোলিজম এর সম্ভাবনার দরুন সারকুলেটরি কলাপ্‌সের সাথে রক্তের পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে পারে। পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের তীব্র শূণ্যত্বের কারণে কার্ডিয়াক এরিদমিয়া হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ব্যবহার: স্পাইরোনোলেকটোন এবং এর মেটাবোলাইটস প্লাসেন্টাল পর্দা অতিক্রম করতে পারে। গর্ভবতী মায়ের এবং ভ্রুণের উপরে স্পাইরোনোলেকটোন এর ঝুঁকির চেয়ে সুফল বিবেচনা করে ব্যবহার করতে হবে। প্রাণীর উপর টেরাটোলজি গবেষণায় দেখা গেছে যে ফিউরোসেমাইড ভ্রুণের অস্বাভাবিকতা ঘটাতে পারে। তাই গর্ভধারনের বয়ঃসীমার সব মহিলার জন্য ফিউরোসেমাইড কেবল মাত্র তখনই ব্যবহার করা উচিত যখন যথার্থ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে অথবা যদি ব্যবহারের সম্ভাব্য উপকারিতা সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে যুক্তি সঙ্গত হয়।

স্তন্যদানকালে ব্যবহার: মাতৃদুগ্ধে স্পাইরোনোলেকটোন মেটাবোলাইটস এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যদি স্পাইরোনোলেকটোন ব্যবহার খুবই জরুরী হয় তাহলে নবজাতককে বিকল্প উপায়ে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে হবে। ফিউরোসেমাইড মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় এবং জরুরী চিকিৎসার ক্ষেত্রে দুগ্ধপান বন্ধ রাখতে হবে।

সতর্কতা

ইলেকট্রোলাইটের অভাবজনিত রোগীদের ক্ষেত্রে সতর্কতা নিতে হবে। ডায়াবেটিস, বিস্তৃত প্রোস্টেট, হাইপোটেনশন এবং হাইপোভলিমিয়ার ক্ষেত্রেও সতর্কতার সাথে এ ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Potassium-sparing diuretics, Potassium-sparing diuretics & Aldosterone antagonists

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ৩০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রার নীচে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names