হ্যালোপেরিডল

নির্দেশনা

নিম্ন মাত্রায়-
  • নার্ভাসনেস, অস্থিরতা এবং এর সাথে সম্পৃক্ত মস্তিষ্কের গোলযোগ যেমন ইরিটেবিলিটি গ্রেসিভনেস, সাইকিক লায়াবেলিটি এবং অনিদ্রা
  • অস্থিরতার জন্য কার্যকারিতা সমস্যা যেমন ট্ৰেম্বলিক, থোরাক্স অপ্রেশন, অন্ত্রের অতিরিক্ত কার্যকারিতা এবং হজমের অসুবিধা
  • টিকস এবং স্টাটারিং
  • বমি ভাব এবং বমি।
উচ্চ মাত্রায়-
  • সাইকোমোটর এজিটেশন, ম্যানিয়া, ডিমেনশিয়া, একিউট এবং ক্রনিক সিজোফ্রেনিয়া, এ্যালকোহলিজম।
  • একিউট এবং ক্রনিক সিজোফ্রেনিয়ায় ডেলিউশন এবং হ্যালোসিনেশন, একিউট কনফিউশন।
  • কোরিয়েটিক মুভমেন্ট
  • বাচ্চাদের চারিত্রিক এবং আচরণগত সমস্যা
  • টিকস এবং স্টাটারিং
  • বমি।

ফার্মাকোলজি

হ্যালোপেরিডল একটি এন্টিসাইকোটিক গুণাগুণ বিশিষ্ট বিউটাইরোফেরন জাতকা যা মস্তিষ্কের অকার্যকারিতা, অ্যাজিটেশন এবং ম্যানিয়ার বিরুদ্ধে অতিশয় কার্যকরী। হ্যালোপেরিডল একটি কার্যকরী নিউরোলেপটিক এবং ইহার বমিরোধক গুণাবলীও রয়েছে। এটি হাইপোথারমিক, ক্ষুধামন্দা প্রদর্শনের পাশাপাশি বারবিচুরেট, এনেসথেশিয়া এবং বিষন্নতা রোগীর ঔষুধের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। হ্যালোপেরিডল একটি দ্রুত কার্যকরী ঔষধ যার কার্যকারিতা ১২ ঘন্টা স্থায়ী এবং দিনে ২ টি মাত্রায় নির্দেশিত।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ট্যাবলেট-
প্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্য প্রারম্ভিক মাত্রা-
  • কম মাত্রার লক্ষনের ক্ষেত্রে: ০.৫ মি.গ্রা. থেকে ৩ মি.গ্রা. প্রতিদিন ২-৩ বার।
  • অতিরিক্ত লক্ষনের ক্ষেত্রে: ৩ মি.গ্রা. থেকে ৫ মি.গ্রা. প্রতিদিন ২-৩ বার।
  • বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে: ০.৫ মি.গ্রা. থেকে ৪.৫ মি.গ্রা. প্রতিদিন ২-৩ বার।
  • ক্রনিক এবং রেজিস্ট্যান্ট রোগীদের ক্ষেত্রে: ৩ মি.গ্রা. থেকে ৬ মি.গ্রা. প্রতিদিন ২-৩ বার।
অতিরিক্ত সমস্যা অথবা অসম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন রোগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা ঠিক করা প্রয়োজন। সম্পূর্ণ মাত্রায় প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১০০ মি.গ্রা. পর্যন্ত দরকার হতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে: চারিত্রিক সমস্যা এবং সিজোফ্রেনিক বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেবন বিধি ৫০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি ওজনে।

ইঞ্জেকশন (ইন্ট্রামাসকুলার বা ইন্ট্রাভেনাস)

সিজোফ্রেনিয়া এবং অন্য সাইকোসিস, ম্যনিয়া:
  • প্রাথমিকভাবে ২-১০ মি.গ্রা.। ইহার উপর নির্ভর করে প্রতি ৪-৮ ঘন্টা পর পর দৈনিক সর্বোচ্চ ১৮ মি.গ্রা. মত্রায় নির্দেশিত।
  • গুরুতর রোগীদের ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক মত্রা সর্বোচ্চ ১৮ মি.গ্রা. পর্যন্ত।
  • বয়ষ্ক বা দুর্বল রোগীদের ক্ষেত্রে শুরুতে প্রাপ্তবয়স্কদের অর্ধেক মাত্রা নির্দেশিত।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

খবর পাওয়া গিয়েছে যে, হ্যালোপেরিডল ফেনিনডিয়ন এবং রক্ত জমাট বাধা রোধক ঔষধের কার্যকারিতার সাথে ইন্টারফেয়ার করে এবং মনে রাখা উচিত একই ধরণের সমস্যা হতে পারে যখন হ্যালেপেরিডল অন্যান্য রক্ত জমাট বাধা রোধক ঔষধের সাথে ব্যবহার করা হয়। হ্যালোপেরিডল এপিনেফরিন এবং অন্যান্য সিমপেথোমাইমেটিক এজেন্ট এর কার্যকারিতায় বাধা প্রদান করে এবং এড্রেনার্জিক বন্ধকতা ঔষধের রক্তচাপ কমানোর কার্যকারিতাকে বন্ধ করে। যখন হ্যালোপেরিডল মিথাইল ডোপার সাথে একত্রে ব্যবহার করা হয় তখন এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে তরান্বিত করে। হ্যালোপেরিডল ট্রাইসাইক্লিক এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট এর মেটাবলিজমকে বাধা প্রদান করে বিধায় এসব ঔবধের প্লাজমা ঘনত্ব মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ট্রাইসাইক্লিক এন্টি-ডিপ্রেসেন্ট টক্সিসিটি বৃদ্ধি পায় (এন্টিকোলিনার্জিক প্রতিক্রিয়া, কার্ডিওভাসকুলার টক্সিসিটি, খিঁচুনির মাত্রা কমায়)। হ্যালোপেরিডল লেভোডোপার এন্টিপারকিনসন ক্রিয়াকে বাঁধা প্রদান করে।  যদি কোন এন্টিপারকিনসন ঔষধ হ্যালোপেরিডল এর সাথে একত্রে ব্যবহৃত হয় তাহলে উভয় ঔষধ একত্রে বন্ধ করা উচিত নয়। কারণ হ্যালোপেরিডল ধীরে নিষ্কৃত হয়।

প্রতিনির্দেশনা

কোমার রোগী এবং এ্যালকোহল অথবা অন্যান্য ডিপরেসেন্ট ঔষধ দিয়ে মস্তিকের ডিপরেশন, অতিরিক্ত ডিপরেসিভ অবস্থা, পূর্বের স্পেসটিক রোগ, বেসাল গ্যাংলিয়ার রোগ, পারকিনসনস সিনড্রোম, শুধু লিভোডোপা দিয়ে ডিসকাইনেসিয়া চিকিৎসা ব্যতীত, হ্যালোপেরিডলে সেনসিটিভিটি, বৃদ্ধ রোগী, যাদের পূর্বে পারকিনসনের লক্ষণ রয়েছে।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

হ্যালোপেরিডল একটি নিরাপদ নিউরোলেপটিক। মাথা ধরা, মাথা ঘোরা, অনিদ্রা ইহার প্রচলিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ঘুম ঘুম ভাব, দূর্বলতা, স্টুপর, কনফিউশন, অস্থিরতা, এজিটেশন, দুশ্চিন্তা , ইউফোরিয়া এবং সাইকোটিক লক্ষণ বৃদ্ধিও হতে পারে। শুখনা মুখ, ঝাপসা দৃষ্টি, ইউরিনারি রিটেনশন, বুক জ্বালাপোড়া, বমিভাব, বমি, ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া এবং অতিরিক্ত লালা পড়ারও প্রমান পাওয়া গিয়েছে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে ইহার নিরাপদ অবস্থা প্রমান করা যায়নি। গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়। হ্যালোপেরিডল মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়।

সতর্কতা

হ্যালোপেরিডল খিঁচুনির সর্বোচ্চ মাত্রা কমাতে পারে এবং প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ইহা পূর্বে নিয়ন্ত্রিত এপিলেপসি রোগীর ক্ষেত্রে খিচুনি বাড়ায়। তাই যখন এসব রোগীকে হ্যালোপেরিডল চিকিৎসা দেওয়া হয় তখন তাকে উপর্যুপরি এন্টি কনভালসেন্ট ঔষধও দেওয়া উচিৎ। অন্যান্য এন্টি সাইকোটিক ঔধের মতো হ্যালোপেরিডল কিডনি ও লিভার সমস্যার রোগীদেরকে এবং এলার্জি রোগী ও যাদের নিউরোলেপটিক ঔষধে এলার্জি আছে তাদের সাবধানতার সহিত দেওয়া উচিত। ফিওক্রোমোসাইটোমা এবং যেসব কারনে এপিলেপসি ঘটায় যেমন মাদকদ্রব্য বন্ধ এবং ব্রেইন নষ্ট রোগীদের ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। যেহেতু এই ঔষধ এনালজেসিক এবং হিপনোটিক হিসেবে বেশ ভাল কার্যকর সেহেতু উহাকে সতর্কতার সহিত নিয়মিত ব্যবহারকারী রোগীদেরকে দেওয়া উচিত।

মাত্রাধিক্যতা

সাধারণত মাত্রাধিক্যের লক্ষণ হচ্ছে অতিরিক্ত ফার্মাকোলজিক কার্যকারিতা এবং বিপরীত কার্যকারিতা যেমন অতিরিক্ত এক্সট্রা পাইরামিডাল কার্যকারিতা, নিম্নরক্তচাপ অথবা তন্দ্রা, কোমা, রেসপিরেটরী ডিপ্রেশন এবং নিম্নরক্তচাপ যাহা শক পর্যন্ত যেতে পারে এমনভাবে প্রতীয়মান হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Butyrophenone drugs, Drugs used in tremor, tics & related disorder

সংরক্ষণ

৩০°সে. এর উপরে সংরক্ষন করা হতে বিরত থাকুন। আলো থেকে দূরে এবং শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।