ইমিপ্রামিন হাইড্রোক্লোরাইড

নির্দেশনা

ইমিপ্রামিন হাইড্রোক্লোরাইড নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • ডিপ্রেসিভ ইলনেস
  • শিশুদের নকটারনাল এনুয়েসিস

বিবরণ

ইমিপ্রামিন হাইড্রোক্লোরাইড হচ্ছে মৌলিক ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট, যা কিনা ডাইবেনজাজেপাইন গ্রুপের একটি সদস্য। ইমিপ্রামিনের কার্যসাধন পদ্ধতি স্পষ্ট নয়। এটি সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করার মাধ্যমে কার্যসাধন করে না। এটি স্নায়ুপ্রান্তে নরএপিনেফ্রিনের আপটেক বন্ধ করার মাধ্যমে এড্রেনার্জিক সাইন্যাপসকে পটেনশিয়েট করে। শৈশবকালীন এনুরেসিস নিয়ন্ত্রণে এর কার্যপদ্ধতি ইমিপ্রামিনের এন্টিডিপ্রেসেন্ট প্রভাব থেকে আলাদা।

মাত্রা ও সেবনবিধি

ডিপ্রেশন-
  • সর্বোচ্চ ৭৫ মি.গ্রা. বিভক্ত ডোজে শুরু করতে হবে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ১৫০-২০০ মি.গ্রা. পর্যন্ত দেয়া যাবে (সর্বোচ্চ ৩০০ মি.গ্রা. হাসপাতাল অধ্যয়নরত রোগীদের ক্ষেত্রে)
  • সর্বোচ্চ ১৫০ মি.গ্রা. ঘুমানোর সময় একবারে দেয়া যাবে।
  • বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে ১০ মি.গ্রা. দৈনিক ডোজ দিয়ে শুরু করতে হবে, ধীরে ধীরে বাড়িরে ৩০-৫০ মি.গ্রা. দৈনিক দেয়া যাবে।
  • শিশুদের ডিপ্রেশনের জন্য দেয়া যাবে না।
নকটারনাল ইনুরেসিস-
  • ৭-৮ বৎসরের শিশুদের ২৫ মি.গ্রা.
  • ৮-১১ বৎসরের শিশুদের ২৫-৫০ মি.গ্রা.
  • ১১ বৎসরের উর্দ্ধে ৫০-৭৫ মি.গ্রা. ঘুমানোর সময় দেয়া যাবে।
সর্বোচ্চ ৩ মাস ব্যাপী দেয়া যাবে (ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করার সময় সহ)। পরবর্তী কোর্স শুরু করার পূর্বে শারীরিক নিরীক্ষা করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

মিথাইলফেনিডেইট ইমিপ্রামিনের প্রভাবকে বৃদ্ধি করে। ইমিপ্রামিনের ডোজ কমানোর মাধ্যমে এর থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব। ইমিপ্রামিন এ্যালকোহলের ডিপ্রেসেন্ট এ্যাকশন বৃদ্ধি করে। এম.এ.ও. ইনহিবিটরের সাথে একত্রে ব্যবহারে মারাত্মক উচ্চরক্তচাপ দেখা দেয়। যেসকল রোগী এম.এ.ও ইনিহিবিটর গ্রহণ করেন যেমন ফেনেলজিন সালফেট বা ট্রানিলসাইপ্রমিন সালফেট তাদের ইমিপ্রামিন ব্যবহারের কমপক্ষে ১৪ দিন আগ থেকে এম.এ.ও. ইনহিবিটর বন্ধ রাখতে হবে। এম.এ.ও. ইহিবিটর শুরু করার সময়ও একই ভাবে ইমিপ্রামিন বন্ধ করতে হবে। এন্টিকোলিনার্জিক ড্রাগসমূহ যেমন-বেনজ্ট্র‌পিন, বিপারিডেন, ট্রাইহেক্সিফেনিডাইল বা এন্টিহিসটামিন ইমিপ্রামিনের এন্টিকোলিনার্জিক প্রভাব বৃদ্ধি করে।

প্রতিনির্দেশনা

এম.এ.ও ইনহিবিটরের সাথে একত্রে বা এর দ্বারা ১৪ দিন চিকিৎসার মধ্যে ইমিপ্রামিন দেয়া যাবে না। যদি এক সাথে দেয়া হয় তবে ওষুধ ইন্টার‍্যাকশনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ জনিত বিপর্যয়, হাইপারএকটিভিটি, হাইপাররেক্সিয়া,  মাংসপেশীর খিঁচুনি, মারাত্মক কাঁপুনি বা কোমা এমনকি মৃত্যুও সংঘটিত হতে পারে। যে সকল রোগী মারাত্মক কিডনী বা হেপাটিক রোগ রয়েছে এবং যাদের রক্ত ডিসক্রেসিয়াস রয়েছে তাদের জন্য ইমিপ্রামিন প্রতিনির্দেশিত। ইমিপ্রামিন প্রতিনির্দেশিত সেই সকল রোগীর জন্য যাদের ইমিপ্রামনি হাইপারসেনসিটিভিটি রয়েছে বা ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রুপের অন্তর্গত ডাইবেনজাজেপাইন গ্রুপের ওষুধের হাইপারসেনসিটিভিটি রয়েছে। গ্লুকোমা বা কাঁপুনি জনিত জটিলতা থাকলে দেয়া যাবে না।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

প্রায়শ সংঘটিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো হলো ড্রাই মাউথ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ইউরিনারী রিটেনশন, বর্ধিত হৃদস্পন্দন, নিদ্রাচ্ছন্নতা, ইরিটেবিলিটি, মাথা ঘোরা, হ্রাসকৃত সমন্বয় সাধন। ড্রাই মাউথ যদি এমন মারাত্মক আকার ধারন করে যাতে কথা বলা বা ঢোক গেলা কষ্টসাধ্য হয় তবে ওষুধের ডোজ কমানো বা সাময়িকভাবে বন্ধ করা যেতে পারে। রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি এবং হ্রাস উভয়ই ইমিপ্রামিন ব্যবহারের সাথে সম্পৃক্ত। হার্ট এ্যাটাক, কনজেসটিভ হার্টফেইলর এবং স্ট্রোক হতে পারে। স্বল্প সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে ইমিপ্রামিন ব্যবহারে নিম্নলিখিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো দেখা দেয়- দ্বিধাবিভক্তি, ডিজঅরিয়েন্টেশন, ডিলিউশন, ঘুমস্বল্পতা এবং অস্থিরতা। ত্বকসংক্রান্ত সমস্যাবলী (অসংবেদনশীলতা, অবশ বা টিংলিং, চামড়ার ছোট ছোট লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং পাফিনেস), কাঁপুনি এবং কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া এবং পেটে ব্যথা ইত্যাদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম সংখ্যক ইমিপ্রামিন ব্যবহারকারীদের মধ্যে দেখা দেয়।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরী ডি। ইমিপ্রামিন মায়ের দুধ দ্বারা নিঃসরন হয় অতঃপর ভ্রুনের ক্ষতি সাধন করতে পারে।

সতর্কতা

ইমিপ্রামিন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন এবং ডাক্তারদের তত্ত্ববধায়ন আবশ্যক বিশেষ করে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে যাদের বি.পি.এইচ, ইউরিনারী রিটেনশন এবং গ্লুকোমা রয়েছে বিশেষ করে এ্যানগেল কোসার গ্লুকোমা। ইমিপ্রামিনের সিডেটিভ এফেক্ট বৃদ্ধি পায় যদি এর সাথে অন্যান্য সি.এন.এস ডিপ্রেসেন্টস্দে য়া হয় যেমন: এ্যালকোহল সমৃদ্ধ পানীয়, ঘুমের ওষুধ, অন্যান্য সিডেটিভ বা এন্টিহিসটামিনস্। ইমিপ্রামিন হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি বা হার্টের উপর চাপ ফেলতে পারে। ইমিপ্রামিন বা একই গ্রুপের অন্যান্য এন্টিডিপ্রেসেন্টস্ ব্যবহার কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিপদজনক বিশেষ করে যাদের সম্প্রতি হার্ট এ্যাটাক হয়েছে। বয়স্ক বা যে সকল রোগীর হার্ট ডিজিজ রয়েছে তাদের এরিদমিয়া, হার্ট সঞ্চালন, কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর, হার্ট এ্যাটাক, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন এবং স্ট্রোক হতে পারে। রোগীদের থেরাপিউটিক ডোজ নির্ধারিতা না হওয়া পর্যন্ত আত্মহত্যার লক্ষণ আছে কিনা তা পর্যবেক্ষন করতে হবে। ইমিপ্রামিন মাত্রাধিক্য বা এ্যালকোহলের সাথে ব্যবহারে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ইমিপ্রামিন ব্যবহার শুরু করা হলে ম্যানিক এপিসোড বা পূর্বে বিদ্যমান সাইকোটিক স্টেইটের লক্ষণের আবির্ভাব হতে পারে।

মাত্রাধিক্যতা

শিশুরা পূর্ণবয়স্কদের থেকে ইমিপ্রামিন মাত্রাধিক্যে বেশী স্পর্শকাতর। শিশুদের ইমিপ্রামিন মাত্রাধিক্য প্রাননাশক হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Tricyclic & related anti-depressant drugs, Tricyclic Anti-depressant

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ৩০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রার নীচে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।