সালবিউটামল + ইপ্রাট্রপিয়াম

নির্দেশনা

সালবিউটামল সালফেট ও ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড রিভার্সিবল ব্রঙ্কোম্পাজম এবং সেই সাথে অবস্ট্রাক্টিভ এয়ারওয়ে ডিজিজে যাদের একাধিক ব্রঙ্কোডাইলেটর দরকার, তাদের ক্ষেত্রে নির্দেশিত।

বিবরণ

এই প্রিপারেশনে দুটো সক্রিয় ব্রঙ্কোডাইলেটিং উপাদান, সালবিউটামল সালফেট এবং ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোামাইড রয়েছে। সালবিউটামল সালফেট একটি বিটা-এড্রেনাজিক উপাদান যা এয়ারওয়ে স্মুথ মাসলের প্রসারণ করে। সালবিউটামল ট্রাকিয়া থেকে টার্মিনাল ব্রঙ্কিওল পর্যন্ত সকল স্মুথ মাসল প্রসারণ করে এবং সকল ব্রঙ্কোকনস্ট্রিক্টর চ্যালেঞ্জ থেকে রক্ষা করে। ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড একটি কোয়াটার্নারি অ্যামােনিয়াম যৌগ যা এন্টিকোলিনার্জিক গুণ সমৃদ্ধ। প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টাডিতে দেখা যায়, ইহা ভ্যাগাস নার্ভ থেকে নিঃসৃত এসিটাইলকোলাইনের কাজ এন্টাগােনাইজ করার মাধ্যমে ভ্যাগালি মেডিয়েটেড রিফ্লেক্স ইনহিবিট করে। এন্টিকোলিনার্জিক সমূহ এসিটাইলকোলাইন ও ব্রঙ্কিয়াল স্মুখ মাসলের মাস্কারিনিক রিসেপ্টরের আন্তঃক্রিয়ার ফলে কোষমধ্যস্থ সাইক্লিক গুয়ানােসিন মনােফসফেট এর বৃদ্ধি ব্যাহত করে। ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড ইনহেলেশনের ফলে প্রাপ্ত ব্রঙ্কোডাইলেশন প্রধাণত ফুসফুসে স্থানীয় ক্রিয়া দেয় কিন্তু সিস্টেমিক ক্রিয়া দেয় না। এই প্রিপারেশন একসঙ্গে ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড ও সালবিউটামল রিলিজ করে এয়ারওয়ে মাস্কারিনিক ও বিটা ২-এড্রেনার্জিক রিসেপ্টরে সম্মিলিত ক্রিয়া দেয় এবং ব্রঙ্কোডাইলেশন করে, যা উভয়ের একক উপাদানের চেয়ে অনেক ভাল।

ফার্মাকোলজি

ইনহেলেশনের পর ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড দ্রুত শােষিত হয় ইনহেলেশনের পর সিস্টেমিক বায়ােএভেইলেবিলিটি ব্যবহৃত মাত্রার ১০% এর চেয়ে কম শিরাপথে প্রয়ােগের পর ব্যবহৃত মাত্রার ৪৬% বৃক্কীয় নিঃসরণ হয় শিরাপথে প্রয়ােগের পর টার্মিনাল এলিমিনেশন ফেইজের হাফ-লাইফ . ঘন্টা ওষুধ মেটাবলাইটসের এলিমিনেশন হাফ-লাইফ . ঘন্টা, রেডিও লেবেলিং এর পর নির্ণীত ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার আতিক্রম করে না

ইনহেলেশন অথবা মুখে সেবনের পর সালবিউটামল সালফেট দ্রুত সম্পূর্ণভাবে শােষিত হয় তিন ঘন্টার মধ্যে রক্তরসে সর্বোচ্চ ঘণমাত্রায় পৌঁছে এবং অপরিবর্তিত অবস্থায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে মূত্রের মাধ্যমে নিঃসৃত হয় এলিমিনেশন হাফ-লাইফ ঘন্টা সালবিউটামল ব্লাড ব্রেইন ব্যারিয়ার অতিক্রম করে, ইহা রক্তরসের ঘণমাত্রার % পর্যন্ত হতে পারে

একসাথে নেবুলাইজ করার ফলে ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড সালবিউটামল সালফেট কোনটির সিস্টেমিক শােষণ বাড়ে না। এই প্রিপারেশনের বাড়তি কার্যকারিতা ফুসফুসে শুধুমাত্র দুটোর সম্মিলিত স্থানীয় ক্রিয়ার ফলাফল

ঔষধের মাত্রা

এই ইনহেলেশন সল্যুশন নেবুলাইজারের সাহায্যে অথবা ইন্টারমিটেন্ট পজিটিভ প্রেসার ভেন্টিলেটরের সাহায্যে দেয়া যেতে পারে।
  • প্রাপ্ত বয়স্ক (বৃদ্ধ সহ): প্রতিবার একটি করে ৩ মি.লি. এ্যাপুল দিনে ৪ বার ব্যাবহার করুণ। প্রয়ােজনে, দিনে আরাে দুই বার অতিরিক্ত চিকিৎসা করা যেতে পারে।
  • শিশু: ব্যাবহার ও ডোজ অবশ্যই চিকিৎসক নির্ধারণ করবেন।
মারাত্মক শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাসকষ্ট বাড়ার ক্ষেত্রে, ইনহেলেশনের পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

সেবনবিধি

ধাপ ১: মােচড় দিয়ে এ্যাম্পুলটি মাথার অংশ অপসারণ করুন। সতর্ক থাকুন যেন এ্যাম্পুলটির মাথা উপরের দিকে থাকে।

ধাপ ২: চাপ দিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমান নেবুলাইজার সলিউশন নেবুলাইজার চেম্বারে ঢালুন।

ধাপ ৩: যদি লঘুকরণ প্রয়োজন হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

একইসাথে অন্যান্য বিটা অনুকারী, সিস্টেমিক্যালি শােষিত এন্টিকোলিনার্জিক এবং জ্যানথিন ডেরিভেটিভের ব্যবহার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারে।

জ্যানথিন ডেরিভেটিভ, গ্লুকোকর্টিকয়েড এবং ডাইইউরেটিক এর সাথে একত্রে ব্যবহার বিটা-এগনিস্ট জনিত হাইপােক্যালেমিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে। মারাত্মক এয়ারওয়ে অবস্ট্রাকশনের ক্ষেত্রে এ ব্যপারটি বিশেষ বিবেচনায় নেয়া উচিত। ডিগক্সিন নিচ্ছেন এমন রােগীদের ক্ষেত্রে হাইপােক্যালেমিয়া হলে এরিদমিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ সকল ক্ষেত্রে সিরাম পটাসিয়াম লেভেল মনিটর করতে হবে। বিটা ব্লকারের সাথে একত্রে ব্যবহার ব্রঙ্কোডাইলটর ইফেক্ট মারাত্মকভাবে কমিয়ে দিতে পারে।

মনােএমাইন অক্সিডেজ ইনহিবিটর অথবা ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেস্যান্ট দেয়া হচ্ছে এমন রােগীদের ক্ষেত্রে বিটা-এড্রেনার্জিক এগনিস্ট সতর্কতার সহিত ব্যবহার করতে হবে, কারণ এতে বিটা-এড্রেনার্জিক এগনিস্ট এর কার্যকারিতা বেড়ে যেতে পারে।

হ্যালােজেনেটেড হাইড্রোকার্বন এনেস্থেটিক যেমন: হ্যালােথেন, ট্রাইক্লোরােইথিলিন এবং এনফ্লুরেন এর ইনহেলেশন বিটা এগনিস্ট সমূহের কার্ডিওভাস্কুলার ক্রিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

হাইপারট্রোপিক অবস্ট্রাক্টিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথি এবং ট্যাকিএরিদমিয়া আছে এমন রােগীদের ক্ষেত্রে এবং এট্রোপিন অথবা এর অন্যান্য ডেরিভেটিভস বা এর অন্য কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীল রােগীদের ক্ষেত্রে প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অন্যান্য বিটা এগনিস্ট সম্বলিত ওষুধের মতাে ইহা ব্যবহারে স্কেলেটাল মাংশপেশীর মৃদু কাপুনি ও অস্থিরতা হতে পারে, তাছাড়া বিশেষ করে অতিসংবেদী রােগীদের ক্ষেত্রে বুক ধরফর করা, মাথা ঘােরা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি অথবা মাথা ব্যথা হতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মাত্রায় বিটা-এগনিস্ট ব্যবহারে মারাত্মক হাইপােক্যালেমিয়া হতে পারে। অন্যান্য ইনহেলেশন থেরাপির মতাে কফ, জ্বালাপােড়া এবং দূর্লভ ক্ষেত্রে ইনহেলেশন সৃষ্ট ব্রঙ্কোস্পাজম হতে পারে।

অন্যান্য বিটা অনুকারীদের মতো বমিবমি ভাব, বমি, ঘাম, দূর্বলতা এবং মাংশপেশীর ব্যথা হতে পারে। দূর্লভ ক্ষেত্রে বিশেষ করে উচ্চ মাত্রায় ব্যবহারের ফলে ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ কমে যাওয়া, সিস্টোলিক রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, অ্যারিদমিয়া হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে ইনহেলেশনের মাধ্যমে বিটা অনুকারী ব্যবহারে মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।

সচরাচর পরিলক্ষিত নন-রেসপিরেটরি এন্টিকোলিনার্জিক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং কথা বলতে সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। বিচ্ছিন্ন ক্ষেত্রে চোখের সমস্যা (যেমনঃ চোখের মনি প্রসারণ, চোখে চাপ বৃদ্ধি পাওয়া, গ্লুকোমা এবং চোখে ব্যথা) যদি এরােসােলাইজড ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড এককভাবে অথবা এড্রেনার্জিক বিটা-২ এগনিস্ট এর সাথে চোখে প্রবেশ করে। বিরল ক্ষেত্রে চোখের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, পরিপাকতন্ত্রের নাড়াচাড়া এবং মুত্রতন্ত্রের রিটেনশন হতে পারে যা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরি সি। প্রাণীদেহে গবেষণায় সালবিউটামল সালফেটের টেরাটোজেনিক প্রভাব পাওয়া গেছে। ফিটাসের উপর এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব আছে কি না জানা যায় নি। ইহার সম্ভাব্য সুবিধার যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার পর গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা উচিত। প্রসবের পূর্বে ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কারণ ইহা ইউটেরাইন কন্ট্রাকশন ব্যাহত করতে পারে।

স্তন্যদানকালে: সালবিউটামল সালফেট এবং ইপ্রাট্রপিয়াম ব্রোমাইড সম্ভবত মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় কিন্তু নবজাতকের উপর এর প্রভাব অজানা। যদিও চর্বিতে অদ্রবণীয় কোয়াটার্নারী বেইসগুলাে মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়, ইনহেলেশনের মাধ্যমে নিলে এমনটি নাও ঘটতে পারে। তবুও যেহেতু বেশীরভাগ সময় মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়, তাই দুগ্ধ দানকালে ইহা ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

সতর্কতা

মারাত্মক শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাসকষ্ট বাড়ার ক্ষেত্রে, ইনহেলেশনের পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। ব্যবহারের সাথে সাথে কিছু ক্ষেত্রে অতি সংবেদনশীল ক্রিয়া হতে পারে ফেমন: আর্টিকারিয়া, এ্যানজিওইডিমা, র‍্যাশ, ব্রোঙ্কোম্পাজম এবং ওরোফ্যারিঞ্জিয়াল ইডিমা।

মাত্রাধিক্যতা

মাত্রাধিক্যের ফলে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া মূলত সালবিউটামল এর জন্য হয়ে থাকে কারণ ইনহেলেশনের মাধ্যমে অথবা মুখে সেবনের ফলে ইপ্রাট্রপিয়ামের সিস্টেমিক শােষণ খুব কম হয়।

উপসর্গ: সালবিউটামল এর মাত্রাধিক্যতার উপসর্গের মধ্যে হৃদ কম্পন বেড়ে যাওয়া, বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, নিম্ন রক্তচাপ, বুক ধড়ফড় করা, কাঁপুনি, পালস প্রেসার বৃদ্ধি, এরিদমিয়া এবং ফ্লাশিং হতে পারে।

চিকিৎসা: ঘুমের ওষুধ প্রয়ােগ করা হয়; মারাত্মক ক্ষেত্রে ইনটেনসিভ থেরাপি দিতে হবে। বিটা রিসেপ্টর ব্লকার, বিশেষ করে বিটা সিলেক্টিভ সমূহ বিশেষ উপকারী। উপরন্তু ব্রঙ্কিয়াল অবস্ট্রাকশন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিশেষ বিবেচনায় রাখতে হবে এবং এজমা রেগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা ঠিক করে নিতে হবে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Combined bronchodilators

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ৩০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রার নীচে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।