Ketoprofen (oral & injection)

নির্দেশনা

কিটোপ্রােফেনের নির্দেশনা এর এ্যান্টিইনফ্লামেটরি (প্রদাহরােধক), এ্যানালজেসিক (বেদনানাশক) এবং এ্যান্টিপাইরেটিক (জ্বররােধী) বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভরশীল। কিটোপ্রােফেন নিম্নবর্ণিত উপসর্গযুক্ত চিকিৎসায় নির্দেশিত-
  • রিউম্যাটয়েড আরথ্রাইটিস
  • অস্থিসন্ধির ক্ষয় সৃষ্টিকারী রােগ সমূহ (ডিজেনারেটিভ জয়েন্ট ডিজি)
  • পেশী ও অস্থি এবং অস্থিসন্ধির সমস্যা যেমন- টেন্ডনের প্রদাহ, মচকানাে
  • উৎপত্তি নির্বিশেষে ব্যথা সমূহ যেমন- দাঁতের ব্যথা, মাথা ব্যথা এবং মাসিকের প্রারম্ভিক ব্যথা (রজস্রাব শুরুর পূর্ববর্তী ব্যথা)

ঔষধের মাত্রা

এ্যান্টিইনফ্লামেটরি (প্রদাহরােধক) মাত্রা: নির্দেশিত প্রারম্ভিক মাত্রা ১৫০ থেকে ৩০০ মিগ্রা দিনে তিনবার বিভক্ত মাত্রায়। একবার দীর্ঘমেয়াদী মাত্রা যা সাধারণত দৈনিক ১০০ থেকে ২০০ মিগ্রা কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে তা রােগী দিনে দুইবার গ্রহণ করতে পারে। বিকল্পভাবে, একই মাত্রা দৈনিক একবার গ্রহণ করা যেতে পারে। নির্দেশিত দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্রা হচ্ছে ৩০০ মিগ্রা।

ব্যথা এবং মাসিকের প্রারম্ভিক ব্যথা (রজস্রাব শুরুর পূর্ববর্তি ব্যথা): প্রয়ােজন অনুযায়ী নির্দেশিত সাধারণ মাত্রা হচ্ছে ২৫ থেকে ৫০ মিগ্রা প্রতি ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পর পর। এ ক্ষেত্রেও দৈনিক সর্বমােট মাত্রা ৩০০ মিগ্রা অতিক্রম করা উচিত নয়।

সেবনবিধি

মুখে সেব্য ওষুধ সমূহ পর্যাপ্ত পরিমাণ তরলের সাথে বিশেষ করে খাবার পর সেবন করা উচিত।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

মুখে সেবনযােগ্য কিটোপ্রােফেন জাতীয় ওষুধসমূহ প্রয়ােগের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ওষুধের সাথে সিলেক্টিভ সাইক্লোঅক্সিজেনেস-২ ইনহিবিটর সমূহ সহ অন্যান্য এনএসএআইডিস নির্দেশিত নয়: (ব্যথানাশক ওষুধ) এবং অধিক মাত্রার স্যালিসাইলেটস যা পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ, আলসারের এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট সমূহ: যা রক্তক্ষরণ এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
  • হেপারিন
  • ভিটামিন কে অ্যান্টাগােনিষ্ট (যেমন- ওয়ারফারিন)
  • প্লেটেলেট অ্যাগ্রেগেশন ইনহিবিটর (যেমন- টিক্লোপিডিন, ক্লোপিডােগ্রেল)
  • গ্লোম্বিন ইনহিবিটর (যেমন- ডাবিগাট্রিন)
  • ডাইরেক্ট ফ্যাক্টর এক্সএ ইনহিবিটর (যেমন- এপিক্সাব্যান, রিভারােক্সাব্যান, এডােক্সাব্যান)
যদি সমন্বিত চিকিৎসা অপরিহার্য হয় সেক্ষেত্রে রােগীকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিৎ।
  • লিথিয়াম: রক্তে লিথিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধির ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কারণ কিডনির মাধ্যমে লিথিয়ামের নির্গমন কমে যাওয়ার ফলে কিছু ক্ষেত্রে এটি বিষক্রিয়ার মাত্রা অতিক্রম করতে পারে। প্রয়ােজন হলে রােগীর রক্তের লিথিয়ামের পরিমাণ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত এবং এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) দ্বারা চিকিৎসার সময় ও চিকিৎসার পরে লিথিয়ামের মাত্রা সমন্বয় করা উচিত।
  • সপ্তাহে ১৫ মিগ্রা এর অধিক মাত্রার মেথােট্টরেক্সেট ব্যাবহারের ক্ষেত্রে: বিশেষ করে যদি তা উচ্চ মাত্রায় প্রয়ােগ করা হয় (>১৫ মিগ্রা/সপ্তাহ) সেক্ষেত্রে প্রােটিন সংযুক্ত মেথােট্রেক্সটের বিযুক্তির কারণে এবং কিডনির মাধ্যমে মেথােট্রেক্সেটের নির্গমন কমে যাওয়ার ফলে রক্তে মেথােট্রেক্সেটের বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • নিম্নোক্ত ওষুধের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়ােজন ওষুধসমূহ যা রক্তে পটাশিয়ামের পরিমান বৃদ্ধি করে (যেমন, পটাশিয়াম যুক্ত লবন, যেসব মুত্রবর্ধক পটাশিয়াম ধরে রাখে, এসিই ইনহিবিটরস এবং এ্যানজিওটেনসিন || এ্যান্টাগনিস্ট, ব্যথানাশক, হেপারিনস্ (নিম্ন আনবিক ওজন বা অখণ্ডিত), সাইক্লোস্পােরিন এবং ট্রাইমেথােপ্রিম): যখন এসব ওষুধ একসাথে ব্যবহার করা হয় তখন রক্তে পটাশিয়ামের পরিমান বেড়ে যেতে পারে।
  • কর্টিকোস্টেরয়েড সমূহ: পরিপাকতন্ত্রের আলসারেশন অথবা রক্তক্ষরণ এর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। 
  • ডায়ইউরেটিক (মূত্রবর্ধক) সমূহ: কিটোপ্রােফেন ব্যাবহারে প্রােস্টাগ্ল্যাডিন ইনহিবিশন এর কারণে কিডনিতে রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে সাধারণ রোগী এবং বিশেষ করে পানিশূন্য রােগী ডায়ইউরেটিক গ্রহণ করলে রেনাল ফেইলিওর এর ঝুঁকি অধিক বৃদ্ধি পায়। এই সমস্ত রােগীর সমন্বিত চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে পানিশূন্যতা দূর করতে হবে এবং যখন চিকিৎসা শুরু করা হয় তখন কিডনির কার্যকারীতা পর্যবেক্ষণ করতে হবে
  • এসিই ইনহিবিটর সমূহ এবং এ্যানজিওটেনসিন-২ এ্যান্টাগােনিস্টস: কিডনি অকার্যকর রােগীর ক্ষেত্রে (যেমন- পানিশূন্য রােগী অথবা বয়স্ক রােগী) এসিই ইনহিবিটর সমূহ এবং এ্যানজিওটেনসিন-২ এ্যান্টাগােনিস্টস এবং সাইক্লোঅক্সিজিনেস ইনহিবিটকারী উপাদান এর সমন্বিত চিকিৎসার ফলে পুনঃরায় কিডনির কার্যকারীতা হ্রাস পেতে পারে যার ফলে মারাত্বক কিডনি ফেইলিওর এর সম্ভাবনা থাকে।
  • সপ্তাহে ১৫ মিগ্রা মাত্রার মেথােট্রেক্সেট প্রয়ােগের এর ক্ষেত্রে: সমন্বিত চিকিৎসার শুরুর দিকে প্রতি সপ্তাহেই রক্ত পরীক্ষার ফলাফল পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যদি কিডনির কার্যকারীতার কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় অথবা যদি রােগী অধিক বয়স্ক হয়, সেক্ষেত্রে বারবার পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
  • পেনক্সিফাইলিন: এ ক্ষেত্রে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই এ ক্ষেত্রে আরাে ঘন ঘন ক্লিনিক্যাল পর্যবেক্ষণ এবং কতক্ষণ ধরে রক্তপাত ঘটে তা পর্যবেক্ষণ করা প্রয়ােজন। টেনােফোভির: টেনােফোভির, ডিসােপ্রােক্সিল ফিউমারেট এবং এনএসএআইডি সমূহ (ব্যথানাশক ওষুধ) একত্রে প্রয়ােগ করলে কিডনি ফেইলিওরের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • নিম্নোক্ত ওষুধের সাথে ব্যাবহারের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা প্রয়ােজন উচ্চ রক্তচাপরােধী ওষুধ যেমন- বিটা-ব্লকার সমূহ, এ্যানজিওটেনসিন কনভার্টিং এনজাইম ইনহিবিটর সমূহ, ডায়ইউরেটিক সমূহ: এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) দ্বারা ভেসােডাইলেটর প্রােস্টাগ্ল্যানডিন এর ইনহিবিশনের কারণে উচ্চ রক্তচাপরােধী ওষুধ এর কার্যকারীতা কমে যাবার ঝুঁকি থাকে।
  • গ্রোম্বালাইটিক সমূহ (রক্ত জমাটরােধী ওষুধ সমূহ): রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। প্রােবেনিসিড: প্রােবেনিসিড এর সাথে এটির সমন্বিত প্রয়ােগের ফলে কিটোপ্রােফেনের প্লাজমা ক্লিয়ারেন্স উল্লেখ্যযােগ্য হারে হ্রাস পেতে পারে। সিলেক্টটিভ সেরােটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটর সমূহ (এসএসআরআইস): পরিপাকত্ত্রের রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • টেনােফোভির: টেনােফোভির, ডিসােপ্রােক্সিল ফিউমারেট এবং এনএসএআইডি সমূহ (ব্যথানাশক ওষুধ) একত্রে প্রয়ােগ করলে কিডনি ফেইলিওরের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • নিকোরানডিল: যেসকল রােগী নিকোরানডিল ও এনএসএআইডি একত্রে গ্রহণ করে, তাদের ক্ষেত্র পাকস্থলির আলসার, ছিদ্র এবং রক্তক্ষরণের মত গুরুতর জটিলতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড: কিটোপ্রােফেন এবং ডিগর্সিনের মধ্যে ফার্মাকেোকাইনেটিক মিথস্ক্রিয়া প্রদর্শিত হয় নাই। তথাপি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে, বিশেষত বৃকের অকার্যকারিতায় আক্রান্ত রােগীদের ক্ষেত্রে, যেহেতু এনএসএআইডি বৃক্কের ক্রিয়া কমিয়ে কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইডের রেনাল ক্লিয়ারেন্স হ্রাস করতে পারে।
  • সাইক্লোস্পােরিন: নেফ্রোটক্সিসিটির ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • ট্যাক্রোলিমাস: নেফ্রোটক্সিসিটির ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

প্রতিনির্দেশনা

এ্যাসিটাইল স্যালিসাইলিক এসিড (এএসএ) অথবা অন্যান্য এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) এর প্রতি অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া যেমন- হাঁপানী অথবা অন্য এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার ইতিহাস আছে এমন রােগীদের ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেন নিষিদ্ধ। এই সমস্ত রােগীদের ক্ষেত্রে তীব্র বা কখনাে প্রাণঘাতী এ্যানাফাইল্যাক্টিক প্রতিক্রিয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। নিম্ন বর্ণিত ঘটনাগুলাের ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেন নিষিদ্ধ-
  • মারাত্মক হার্ট ফেইলিওরের রােগী
  • সক্রিয় অথবা পেপটিক আলসারের/রক্তক্ষরণের ইতিহাস আছে এমন রােগী
  • এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) চিকিৎসা জনিত পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ অথবা ক্ষত জনিত পরিপাকতন্ত্র ছিদ্র হয়ে যাবার ইতিহাস আছে এমন রােগী
  • যকৃতের মারাত্মক অকার্যকারীতায়
  • কিডনীর মারাত্মক অকার্যকারীতায়
  • গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টার (শেষ তিন মাস)
  • মলদ্বারের প্রদাহ অথবা মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণের ইতিহাস আছে (মলদ্বারের ওষুধ প্রয়ােগের সময়) এমন রােগী

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

  • রক্ত এবং লসিকানালী সংক্রান্ত রােগ- বিরল: রক্তক্ষরণ জনিত রক্তস্বল্পতা (হেমরেজিক এ্যানেমিয়া); জানা যায়নি: গ্র্যানিউলােসাইটের পরিমাণ অত্যাধিক কমে যাওয়া, রক্তে অনুচক্রিকা গ্রামবােসাইট এর পরিমাণ কমে যাওয়া,অস্থিমজ্জার ফেইলিওর, হেমােলাইটিক এ্যানেমিয়া (রক্তকোষ বিধ্বংশী রক্তস্বল্পতা), রক্তে শ্বেতকণিকার/লিউকোসাইট এর পরিমাণ কমে যাওয়া।
  • ইমিউনিসিস্টেম (রােগ প্রতিরােধতন্ত্র) সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: এ্যানাফাইল্যাকটিক প্রতিক্রিয়া ও শক্।
  • নােরোগ/সাইক্রিয়াটিক সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: বিষন্নতা, মতিভ্রম, দ্বিধাগ্রস্থতা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন
  • স্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা- মাঝে মাঝে: মাথাব্যথা, ঝিমুনিভাব, ঘুমঘুম ভাব; বিরল: প্যারেস্থেসিয়া ( বিশেষ করে হাতের তালুতে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা অনুভূত হওয়া ) জানা যায়নি: এ্যাসেপটিক মেনিনজাইটিস, খিচুনি, স্বাদ সম্পর্কে অনুভূতির সমস্যা, মাথা ঘােরা।
  • চক্ষু সংক্রান্ত সমস্যা- বিরল: চোখে ঝাপসা দেখা
  • কান এবং অন্তকর্নের সমস্যা- বিরল: কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ শােনা
  • কার্ডিয়াক হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: হার্ট ফেইলিওরের তীব্রতা বেড়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন
  • রক্তনালী সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: উচ্চ রক্তচাপ, রক্তনালীর প্রসারণ, রক্তনালীর প্রদাহ (সাথে অতিসংবেদনশীল রক্তনালীর প্রদাহ)
  • শ্বসনতন্ত্র, বক্ষ এবং মধ্যবক্ষ গহ্বর সংক্রান্ত সমস্যা- বিরল: এ্যাজমা (হাঁপনী)। জানা যায়নি: ব্রঙ্কোজম শ্বসনতন্ত্রের অভিক্ষেপ (বিশেষ করে যে সমস্ত রােগীর এ্যাসিটাই স্যালিসাইলিক এসিড এবং অন্যান্য এনএসএআইডির প্রতি সুনির্দিষ্ট অতিসংবেদনশীলতা রয়েছে)
  • পরিপাকতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা- সাধারণ: বদহজম, বমিবমি ভাব, পেট ব্যাথা, বমি হওয়া মাঝে মাঝে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, পেটফাঁপা, পাকস্থলির প্রদাহ; বিরল: মুখ-গহ্ববরের প্রদাহ, পেপটিক আলসার; জানা যায়নি: বৃহদান্ত্রের প্রদাহ, ক্রোণস ডিজিজ, পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং ছিদ্র হয়ে যাওয়া, অগ্নাশয়ের প্রদাহ
  • হেপাটোবিলিয়ারি (যকৃত ও পিত্ত) সংক্রান্ত সমস্যা- বিরল: যকৃতের প্রদাহ, ট্রান্সএ্যামাইনেজ এনজাইমের বৃদ্ধি
  • ত্বক এবং ত্বকের নিচের কলার সমস্যা- মাঝে মাঝে: ত্বকের ফুসকুড়ি ভাব, চুলকানি; জানা যায়নি: আলােক সংবেদনশীলতা , চুল পরে যাওয়া, আর্টিকারিয়া (চুলকানি), এ্যানজিওইডিমা, গােলাকৃতি ফুসকুড়ি সাথে স্টিভেনস-জনসন সিন্ড্রোম, টক্সিক ইপিৰ্ডামাল কিডনী (বৃক্ক) এবং মুত্রতন্ত্রের সমস্যা নেক্রোলাইসিস, মারাত্মক জেনারালাইজড এক্সানথেমেটাস পাস্টুলােসিস- জানা যায়নি: মারাত্মক কিডনী (বৃক্ক) ফেইলিওর, টিবিউলােইণ্টারস্টিশিয়াল নেফ্রাইটিস, নেফ্রেটিক সিনড্রোম, কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষার অস্বাভাবিক ফলাফল সাধারণ সমস্যা এবং প্রয়ােগ স্থানের অবস্থা জানা যায়নি: ইডিমা
  • পরিপাক এবং পুষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা- জানা যায়নি: রক্তে সােডিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়া, পটাশিয়ামের মাত্রাতিরিক্ততার সম্ভাবনা পর্যবেক্ষণ; বিরল: ওজন বৃদ্ধি পাওয়া প্রয়োগ স্থানের অবস্থা; জানা যায়নি: ইঞ্জেকশন প্রয়ােগের স্থানে প্রতিক্রিয়ার সাথে ইমবােলিয়া কিউটিস মেডিকামেনটোসা (নিকোলাউ সিন্ড্রোম)

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থার প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় (প্রথম ও দ্বিতীয় তিন মাসে) গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেন এর নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হয়নি, তাই গর্ভাবস্থার প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় (প্রথম ও দ্বিতীয় তিন মাসে) কিটোপ্রােফেন প্রয়ােগ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। গর্ভাবস্থার তৃতীয় ট্রাইমেস্টারের ক্ষেত্রে (তৃতীয় তিন মাসে) গর্ভাবস্থার সর্বশেষ ট্রাইমেস্টারের সময় (তৃতীয় তিন মাসে) কিটোপ্রােফেন নির্দেশিত নয়। কিটোপ্রােফেন স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

সতর্কতা

মুখে সেবন যােগ্য কিটোপ্রােফেন জাতীয় ওষুধসমূহ-
  • পরিপাকতন্ত্রের অসুখ যেমন- আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রোনস্ ডিজিজ এর ইতিহাস আছে এমন রােগীদের ক্ষেত্রে এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) সতর্কতার সাথে প্রয়োগ করা উচিৎ কারণ এর ফলে রােগের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • যে সমস্ত রােগীর হার্ট ফেইলিওর, সিরােসিস, নেফ্রোসিস রয়েছে, যে সমস্ত রােগী ডায়ইউরেটিক থেরাপী গ্রহণ করছে, দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যায় ভুগছে এবং বিশেষ করে বয়স্ক রােগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই রােগীর কিডনির কার্যকারীতা সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এই সমস্ত রােগীদের কিটোপ্রােফেন প্রয়ােগের ফলে প্রােস্টাগ্ল্যাডিন ইনহিবিশন এর কারণে কিডনিতে রক্ত প্রবাহ কমে যাবার প্রবনতা বৃদ্ধি পেতে পারে ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ত্বরান্বিত হয়।
  • যেহেতু এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) দিয়ে চিকিৎসার ফলে অনুষঙ্গ হিসেবে শরীরের নিম্নাংশে পানি জমা এবং ইডিমা হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাই যে সমস্ত রােগীর উচ্চ রক্তচাপ, হালকা থেকে মাঝারি মানের কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিওর অথবা উভয় প্রকারের এর সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়ােজন।
  • এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) প্রয়ােগের ফলে অনুষঙ্গ হিসেবে এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন এর ঝুঁকি বৃদ্ধির তথ্যও পাওয়া গেছে। যেসব রােগীর ডায়াবেটিস, বৃক্কের অকার্যকারিতা এবং যারা রক্তে পটাশিয়াম বৃদ্ধির জন্য ওষুধ গ্রহন করে তাদের ক্ষেত্রে পটাশিয়ামের মাত্রাতিরিক্ততার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এসব রােগীকে নিয়মিত রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
  • অন্য এনএসএআইডির (ব্যথানাশক ওষুধ) মত সংক্রামক রােগে আক্রান্ত রােগীদের ক্ষেত্রে এটা লক্ষণীয় যে কিটোপ্রােফেনের এর এ্যান্টিইনফ্লামেটরি (প্রদাহরােধক), এ্যানালজেসিক (বেদনা নাশক) এবং এ্যান্টিপাইরেটিক (জ্বররােধী) বৈশিষ্ট্যের জন্য সংক্রামক রােগের অন্যান্য উপসর্গের স্বাভাবিক অগ্রগতি যেমন- জ্বরের লক্ষণ প্রচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে।
  • যে সমস্ত রােগীর যকৃতের কার্যকারীতার পরীক্ষায় অস্বাভাবিকতা পাওয়া গেছে অথবা যকৃতের রােগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পর পর ট্রান্সএ্যামাইনেস লেভেল পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার সময়। বিরল কিছু ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেন প্রয়ােগে জন্ডিস এবং যকৃতের প্রদাহের (হেপাটাইটিস) এর তথ্য পাওয়া গেছে।
  • দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যা যেমন- চোখে ঝাপসা দেখা পরিলক্ষিত হলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসা বন্ধ রাখা উচিত। এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) প্রয়ােগে মেয়েদের গর্ভধারণে ব্যঘাত ঘটতে পারে এবং যে সমস্ত নারী গর্ভধারণের চেস্টা করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এটি নির্দেশিত নয়। যে সমস্ত নারী গর্ভধারণে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন অথবা যারা গর্ভধারণ সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে এনএসএআইডি (ব্যথানাশক ওষুধ) দিয়ে চিকিৎসা করা উচিত নয়।

বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহার

বয়স্কদের ক্ষেত্রে স্বল্প মাত্রায় চিকিৎসা শুরু করাই যুক্তিসংগত এবং এসকল রােগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ফলপ্রসূ মাত্রা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

যে সকল রােগীর যকৃতের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ফলপ্রসূ মাত্রা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

যে সকল রােগীর কিডনীর (বৃক্কের) সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও স্বল্প মাত্রায় চিকিৎসা শুরু করাই যুক্তিসংগত এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ফলপ্রসূ মাত্রা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

মাত্রাধিক্যতা

মাত্রাতিরিক্ততার ক্ষেত্রে কিটোপ্রােফেনের ২.৫ গ্রাম মাত্রা পর্যন্ত তথ্য পাওয়া গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলাে মৃদু যেমন- উদ্যমহীনতা, ঝিমুনিভাব, বমিবমি ভাব, বমি এবং পেটব্যথাতেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিটোপ্রােফেন এর মাত্রাতিরিক্ততার নির্দিষ্ট কোন প্রতিষেধক নেই। যদি মারাত্মক মাত্রাতিরিক্ততার সম্ভাবনা থাকে সেক্ষেত্রে পাকস্থলী ধৌতকরণ নির্দেশিত এবং উপসর্গ অনুযায়ী ও পানিশূন্যতা পূরণের জন্য সহায়ক চিকিৎসা করা প্রয়ােজন। যদি এ্যাসিডােসিস ঘটে থাকে তা প্রশমন করতে হবে এবং সেক্ষেত্রে মূত্রের মাধ্যমে কিটোপ্রােফেন নিঃসরণের পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যদি রেনাল (কিডনি) ফেইলিওর ঘটে থাকে সেক্ষেত্রে রক্তে বিদ্যমান ওষুধ দূর করার জন্য হেমােডায়ালাইসিস এর প্রয়ােজন হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Drugs for Osteoarthritis, Drugs used for Rheumatoid Arthritis, Non-steroidal Anti-inflammatory Drugs (NSAIDs)

সংরক্ষণ

আলাে থেকে দূরে, ৩০° সেঃ তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষন করুন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ব্যবহার করবেন না। সমস্ত ওষুধ শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। শুধুমাত্র রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বিক্রয়যােগ্য।

Available Brand Names