লারকানিডিপিন হাইড্রোক্লোরাইড

নির্দেশনা

লারকানিডিপিন মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের এসেনসিয়াল উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসার জন্য নির্দেশিত।

ফার্মাকোলজি

লারকানিডিপিন হাইড্রোক্লোরাইড হচ্ছে ডাইহাইড্রোপিরিডিন গ্রুপের একটি সিলেকটিভ ক্যালসিয়াম চ্যানেল প্রতিবন্ধক এবং এটি মসৃণ অনৈচ্ছিক পেশীর কোষাবরণের মধ্যদিয়ে ক্যালসিয়ামের প্রবেশ বন্ধ করে। এটি রক্তনালীর মসৃণ অনৈচ্ছিক পেশীর টানকে সরাসরি শিথিল করার মাধ্যমে উচ্চরক্তচাপ বিরোধী ক্রিয়া দেখায়, ফলে টোটাল পেরিফেরাল রেজিস্টেন্স কমে যায়। লারকানিডিপিন দীর্ঘসময় ধরে উচ্চরক্তচাপ বিরোধী কর্মক্ষমতা দেখায় কারণ এটির উচ্চ মেমব্রেন পার্টিশন কোএফিসিয়েন্ট রয়েছে এবং রক্তনালীর প্রতি অতিমাত্রায় সিলেক্টিভিটির কারণে এর কোন নেগেটিভ আয়নোট্রপিক প্রভাব নেই।

মাত্রা ও সেবনবিধি

বয়স্কদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে: নির্দেশিত সেবনমাত্রা হচ্ছে দৈনিক একবার ১০ মি.গ্রা. খাবারের কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে মুখে সেব্য; সেবনমাত্রা প্রত্যেক রোগীর প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভর করে ২০ মি.গ্রা. পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। সর্বোচ্চ উচ্চরক্তচাপ বিরোধী কর্মক্ষমতা পাওয়ার জন্য মোটামুটি ২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

যাদের একক উচ্চরক্তচাপ বিরোধী এজেন্ট পর্যাপ্তভাবে রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সেসব রোগীর চিকিৎসায় সংযুক্তভাবে বেটা-এড্রোনোসেপটর ব্লকিং ওষুধ (যেমন- অ্যাটিনোলোল), ডাইউরেটিক (যেমন- হাউড্রোক্লোরোথায়াজাইড) অথবা এসিই ইনহিবিটর (যেমন- র‍্যামিপ্রিল) এর সাথে লারকানিডিপিন ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

শিশুদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে: যেহেতু ১৮ বছরের নিচের রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের কোন ক্লিনিক্যাল তথ্য নাই, তাই শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার বর্তমানে নির্দেশিত নয়।

বৃক্ক ও যকৃতের অসমকার্যকারিতার ক্ষেত্রে: মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের বৃক্ক ও যকৃতের অসমকার্যকারিতার ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত। সেবন মাত্রা  দৈনিক ২০ মি.গ্রা.-এর বেশী হলে সতর্কতার সাথে দিতে হবে। লারকানিডিপিন মারাত্মক যকৃত ও বৃক্কের অসমকার্যকারিতার ক্ষেত্রে নির্দেশিত নয়।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

সাইক্লোস্পোরিন, ফিনাইটোইন, কার্বামাজিপিন, রিফামপিসিন, কিটোকোনাজল, ইট্রাকোনাজল, রিটোনাভির, ইরাইথ্রোমাইসিন, ট্রলিনডোমাইসিন এবং মিডাজোলামের সাথে লারকানিডিপিনের সহচিকিৎসা পরিহার করা উচিত। এসটিমিজল, এমাইয়োড্যারোন, কুইনিডিন, সিমেটিডিন, মেটোপ্রোলল এবং সিমভাস্ট্যাটিনের সাথে লারকানিডিপিন সহব্যবস্থাপত্র দিলে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

প্রতিনির্দেশনা

যেসব রোগীদের বাম নিলয়ের বহির্গমন তন্ত্রের বাধা, আনট্রিটেড কনজেসটিভ কার্ডিয়াক অকার্যকারিতা, আনস্টেবল অ্যানজিনা পেকটোরিস, মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন হওয়ার ১ মাসের মধ্যে এবং কোন ডাইহাড্রোপিরিডিনের প্রতি অতিসংবেদনশীলতা জানা আছে, তাদের ক্ষেত্রে লারকানিডিপিন প্রতিনির্দেশিত। আঙ্গুরফলের রসের সাথে লারকানিডিপিন সেবন করা উচিত নয় ।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

লারকানিডিপিন দিয়ে চিকিৎসা সাধারণত সুসহনীয়। সবচেয়ে বেশী দেখা যায় এমন পার্শ্ব প্রতিক্রিয় গুলো লারকানিডিপিনের রক্তনালীর প্রসারণের বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত যেমন রক্তিমতা, পেরিফেরাল ইডিমা, মাথা ব্যথা, ঝিমঝিম ভাব এবং দুর্বলতা। অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, যা ১% এর কম রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেগুলো হচ্ছে অবসাদগ্রস্ততা; পরিপাকতন্ত্রীয় সমস্যা যেমন- বদহজম, বমি-বমি ভাব, বমি, পাকস্থলীর ব্যথা এবং ডায়রিয়া, পলিইউরিয়া, র‍্যাশ, নিদ্রালুতা এবং পেশীর ব্যথা।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

যেহেতু গর্ভবর্তী মহিলাদের ক্ষেত্রে লারকানিডিপিন ব্যবহারের কোন ক্লিনিক্যাল তথ্য নাই, তাই গর্ভাবস্থায় অথবা যথাযথ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া শিশু জন্মদানে সক্ষম মহিলাদের লারকানিডিপিন ব্যবহার করা উচিত নয়। লারকানিডিপিন অত্যন্ত লিপোফিলিক এবং দুধের মধ্যে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেইজন্য, এটা স্তন্যদানকারী মায়েদের সেবন করা উচিত নয়।

সতর্কতা

যেসব রোগীর সিক সাইনাস সিনড্রম, বাম নিলয়ের অসমকার্যকারিতা এবং হৃদপিন্ডের ইসকিমিক রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে লারকানিডিপিন ব্যবহারে বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত।

মাত্রাধিক্যতা

লারকানিডিপিনের মাত্রাধিক্যের কোন তথ্য নাই। অন্যান্য ডাইহাইড্রোপিরিডিনের মত, মাত্রাধিক্যের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পেরিফেরাল রক্তনালীর প্রসারণসহ লক্ষণীয় নিম্নরক্তচাপ ও রিফ্লেক্স অতি হৃদস্পন্দন হতে পারে। যেহেতু, এই ওষুধটা অত্যন্ত লিপোফিলিক, এটা সবচেয়ে সম্ভাব্য যে, ওষুধের প্লাজমা লেবেল ঝুঁকির সময়কাল সম্বন্ধে কোন নির্দেশনা দেয় না এবং ডায়ালাইসিস কার্যকর নাও হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Calcium-channel blockers

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ৩০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রার নীচে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।