ফেনোবারবিটাল

নির্দেশনা

ফেনোবারবিটাল নিম্নলিখিত অবস্থার জন্য নির্দেশিতঃ
  • নিদ্রাকারক
  • তন্দ্রাভাব আনায়ন, অনিদ্রার স্বল্পমেয়াদী চিকিৎসার জন্য
  • এ্যানেসথেসিয়ার পূর্বে
  • দীর্ঘ সময় খিঁচুনীরোধক চিকিৎসার জন্য যেমন টনিক-ক্লোনিক ও কার্টিক্যাল সিজার এবং হঠাৎ খিঁচুনী হলে জরুরী নিয়ন্ত্রনের জন্য (স্ট্যাটাস এপিলেটিকাস, মেনিনজাইটিস, টিটেনাস, বিষক্রিয়া জনিত রিঅ্যাকশন, ও লোকাল এ্যানেসথেসিয়ায়) ব্যবহৃত হয়

বিবরণ

ফেনোবারবিটাল এক প্রকার বারবিচূরেট, ননসিলেকটিভ, কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্র ব্যবস্থার উপর প্রভাব বিস্তারকারী যা প্রধাণত নিদ্রাকারক হিসেবে প্রথমত ব্যবহৃত হয় এবং খিঁচুনীরোধক হিসেবে ঘুমের অর্ধেক মাত্রায় ব্যবহৃত হয় ।

মাত্রা ও সেবনবিধি

নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ফেনোবারবিটাদের প্রস্তাবিত মাত্রা নিম্নরূপ:
বাচ্চাদের সেবনমাত্রা-
  • অপারেশনের পূর্বে: ১ থেকে ৩ মি.গ্রা./কেজি
  • খিঁচুনীরোধক হিসেবে: দৈনিক ১ থেকে ৬ মি.গ্রা./কেজি
প্রাপ্তবয়স্কদের সেবনমাত্রা-
  • দিনে ঘুমানোর জন্য: দৈনিক ৩০ থেকে ১২০ মি.গ্রা. ২ থেকে ৩ বার
  • রাতে ঘুমানোর জন্য: ১০০ থেকে ৩২০ মি.গ্রা.
  • খিঁচুনীরোধক হিসেবে: দৈনিক ৫০ থেকে ১০০ মি.গ্রা. ২ থেকে ৩ বার।
বাচ্চাদের জন্য ইনজেক্শনের মাত্রা-
  • ১৫-২০ মি.গ্রা./কেজি আই ভি ১০-১৫ মিনিট ধরে দিতে হবে
  • অপারেশনের পূর্বে: আই ভি/আই এম ১-৩ মি.গ্রা./কেজি
  • খিঁচুনী রোধক হিসাবে: দৈনিক ৪-৬ মি.গ্রা./কেজি আই ভি/আই এম ১০ দিনের জন্য প্রয়োগ করতে হবে। খুব দ্রুত থেরাপিউটিক ফলাফলের জন্য বিকল্প হিসাবে দৈনিক ১০-১৫ মি.গ্রা./কেজি আই ভি/আই এম দেয়া যেতে পারে। আই ভি পথে সর্বোচ্চ প্রয়োগকৃত মাত্রা হচ্ছে ৬০ মি.গ্রা./মিনিট
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ইনজেকশনের মাত্রা-
  • অনিদ্রা: ১০০-৩২০ মি.গ্রা. আই এম/আই ভি
  • খিঁচুনী রোধক: ১০০-৩২০ মি.গ্রা. আই ভি। প্রয়োজনে পুনরায় প্রয়োগ করা যাবে। ২৪ ঘন্টার ভিতর সর্বোচ্চ ৬০০ মি.গ্রা. দেয়া যাবে ।
  • স্ট্যাটাস ইপিলেপটিকাস: ১০-২০ মি.গ্রা./কেজি আই ভি। প্রয়োজনে পুনরায় প্রয়োগ করা যাবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অ্যালকোহল অথবা অন্যান্য কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্র অনুদ্দীপক ঔষধ একসাথে ব্যবহার করলে অতিরিক্ত কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অবসাদ হতে পারে।

প্রতিনির্দেশনা

যে সমস্ত রোগীর ফেনোবারবিটাল এর প্রতি সংবেদনশীলতার ইতিহাস আছে বা এলার্জির ইতিহাস রয়েছে তাদের প্রতি ইহা প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সর্বাধিক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হচ্ছে তন্দ্রাচ্ছন্নতা। অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে কাঁপুনি, বিভ্রান্তি, কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্রে দুর্বলতা, দুঃস্বপ্ন, এটাক্সিয়া, স্নায়বিক অবসাদ, মানসিক অশাস্তি, ভ্রাস্তি, নিদ্রাহীনতা, দুশ্চিন্তা, ঘুমঘুম ভাব, চিন্তাশক্তির বৈকল্য, হার্টবিট কমে যাওয়া, নিম্নরক্তচাপ, বমিবমি ভাব, ঘাম, কোষ্ঠ কাঠিন্য ও অ্যাপনিয়া হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভাবস্থায় ক্যাটাগরি ডি। ফেনোবারবিটাল গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে যদি গর্ভবর্তী মাকে দেওয়া হয়। যদি এ ঔষধটা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা হয় অথবা রোগিনী ঔষধ ব্যবহার করা অবস্থায় গর্ভধারন করে তাহলে গর্ভস্থ ভ্রূণের বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়। দুগ্ধদানকারী মাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে কারণ ফেনোবারবিটাল অল্পমাত্রায় দুধের সাথে নিঃসৃত হয়।

সতর্কতা

নিয়মিত ব্যবহারে শারীরিক ও মানসিক সহনশীলতা ও নির্ভরতা তৈরী হতে পারে। ফেনোবারবিটাল সাবধানে ব্যবহার করা উচিত তাদের ক্ষেত্রে যারা মানসিক অবসাদ গ্রন্থ, যাদের আত্মহত্যার সম্ভাবনা রয়েছে বা যাদের মাদকাসক্তির ইতিহাস আছে। হাসপাতালে ভর্তিকৃত লিভার ড্যামেজ রোগীদের ক্ষেত্রেও সাবধানে স্বল্পমাত্রায় ব্যবহার করা উচিত।

মাত্রাধিক্যতা

বারবিচুরেটের বিষাক্ততার মাত্রা একেক জনের জন্য এক এক রকম। সাধারণত, ১ গ্রামই একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ভয়াবহ বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে। ২ থেকে ১০ গ্রাম খেলে মৃত্যু হতে পারে। অতিরিক্ত থেয়ে ফেললে কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্র ও শ্বাসতন্ত্রের দূর্বলতা দেখা দেয়। এর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ও সাপোর্টিভ চিকিৎসা জরুরী।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Adjunct anti-epileptic drugs, Barbiturates

সংরক্ষণ

আলো ও আর্দ্রতা থেকে দূরে, ৩০ ডিগ্রী সেঃ তাপমাত্রার নীচে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।