প্রেডনিসোলোন

নির্দেশনা

রিউমাটিক ডিজঅর্ডার: সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, এঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, একিউট এবং সাবএকিউট বার্সাইটিস, একিউট ননস্পেসিফিক টেনোসিভাইটিস, একিউট গাউটি আর্থ্রাইটিস, পোস্ট-ট্রমাটিক অস্টিওআর্থ্রাইটিস ।

এন্ডোক্রাইন ডিজঅর্ডার: প্রাইমারী অথবা সেকেন্ডারী এড্রিনোকর্টিক্যাল অপর্যাপ্ততা, কনজেনিটাল এড্রিনাল হাইপারপ্লাসিয়া, ননসুপুরেটিভ থাইরয়ডিটিস, ক্যান্সারজনিত হাইপারক্যালসেমিয়া।

ডার্মাটোলোজিক ডিজিজেস: পেম্ফিগাস, বুলাস ডার্মাটাইটিস হাইপেটিফর্মিস, তীব্র ইরাইথিমা মাল্টিফর্ম, এক্সফোলিয়েটিভ ডার্মাটাইটিস, তীব্র সোরিয়াসিস।

এলার্জিক অবস্থা: সিজনাল অথবা পেরেনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা, কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস, এটোপিক ডার্মাটাইটিস, সিরাম সিকনেস, ঔষধের অতিসংবেদনশীলতার বিক্রিয়া।

রেসপিরেটরী ডিজিজেস: সিম্পটোমেটিক সারকয়ডোসিস, বেরিলিওসিস, ফালমিনেটিং, এসপিরেশন নিউমোনিটিস।

হেমাটোলোজিক ডিজঅর্ডার: ইডিওপেথিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপিউরা, সেকেন্ডারী থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, একুয়ার্ড (অটোইমিউন) হেমোলাইটিক এনিমিয়া, ইরাইথ্রোব্লাস্টোপেনিয়া (আরবিসি এনিমিয়া)।

ইডিমেটাস স্টেটস: নেফ্রোটিক সিন্ড্রোমে ডাইউরেসিস অথবা প্রোটিনিইউরিয়া রিমিশনে।

গেট্রোইন্টেস্টিনাল ডিজিজেস: আলসারেটিভ কোলাইটিস, রিজিওনাল এন্টেরিটিস।

ফার্মাকোলজি

প্রেডনিসোলন একটি কৃত্রিম এ্যাড্রোনোকর্টিকাল ওষুধ যার গ্লুকোকর্টিকয়েড় বৈশিষ্টোর আধিক্য রয়েছে। প্রেডনিসোলন সরাসরি ফসফোলাইপেজ এ২ এনজাইমের কার্যক্রমকে বাঁধা প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লামেটরী মেডিয়েটর যেমন-লিউকোট্রিন, এসআরএস-এ প্রোস্টাগ্লান্ডিন ইত্যাদির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। মুখে প্রেডনিসোলন নেয়া হলে এটি দ্রুত এবং ভালভাবে পাকস্থলী থেকে শোষিত হয়। এটির ৭০-৯০% প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয় এবং এর রক্তরস থেকে নিষ্কাশনের অর্ধায়ু ২-৪ ঘন্টা। এটি মূলত: যকৃতে বিপাক হয়ে মূত্রের মাধ্যমে দেহ থেকে নির্গত হয়।

মাত্রা ও সেবনবিধি

প্রাপ্তবয়স্ক-

নেফ্রোটিক সিন্ড্রোম:
  • প্রাথমিক মাত্রা: মূত্র প্রোটিনযুক্ত হওয়া পর্যন্ত দৈনিক ২মিগ্রা/কেজি (সর্বোচ্চ দৈনিক ৮০ মিগ্রা) ৩-৪ বার বিভক্ত মাত্রায় পরপর ৩ দিন (সর্বোচ্চ ২৮ দিন) দিতে হবে; পরবর্তী প্রতিদিন ১-১.৫ মিগ্রা/কেজি মাত্রায় ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত দিতে হবে।
  • নিয়ন্ত্রিত মাত্রা: প্রতিদিন ০.৫-১ মিগ্রা/কেজি ৩-৬ মাস দিতে হবে।
এন্টি-ইনফ্লামেটরী: দৈনিক ৫-৬০ মিগ্রা ১-৪ বার বিভক্ত মাত্রায় দিতে হবে ।

একিউট অ্যাজমা: দৈনিক ৪০-৬০ মিগ্রা মাত্রায় মুখে সেবন অথবা ১২ ঘন্টা পরপর ৩-১০ দিন দিতে হবে ।

এলার্জিক অবস্থা:
  • ১ম দিন: ১০ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, ৫ মিগ্রা দুপুরের ও রাতের খাবারের পর এবং ১০ মিগ্রা ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।
  • ২য় দিন: ৫ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, দুপুর ও রাতের খাবারের পর এবং ১০ মিগ্রা ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।
  • ৩য় দিন: ৫ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, দুপুর ও রাতের খাবারের পর এবং ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।
  • ৪র্থ দিন: ৫ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, দুপুরের খাবারের পরে এবং ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।
  • ৫ম দিন: ৫ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, দুপুরের খাবারের পরে এবং ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।
  • ৬ষ্ঠ দিন: ৫ মিগ্রা সকালের নাস্তার পূর্বে, দুপুরের খাবারের পরে এবং ঘুমানোর সময় মুখে সেবন করতে হবে।

শিশুদের-

অ্যাজমা:
  • ১ বছর এর নিম্নে: একিউট ১০ মিগ্রা প্রতি ১২ ঘন্টা পর পর। নিয়ন্ত্রিত মাত্রা: একদিন অন্তর ১০ মিগ্রা করে।
  • ১-৪ বছর: একিউট: ২০ মিগ্রা প্রতি ১২ ঘন্টা পর পর। নিয়ন্ত্রিত মাত্রা: একদিন অন্তর ২০ মিগ্রা করে।
  • ৫-১২ বছর: একিউট: ৩০ মিগ্রা প্রতি ১২ ঘন্টা পর পর। নিয়ন্ত্রিত মাত্রা: একদিন অন্তর ৩০ মিগ্রা করে।
  • ১২ বছরের ঊর্দ্ধে: একিউট: ৪০ মিগ্রা প্রতি ১২ ঘন্টা পর পর । নিয়ন্ত্রিত মাত্রা: একদিন অন্তর ৪০ মিগ্রা করে।
এন্টি-ইনফ্লামেটরী: দৈনিক ০.০৫-২ মিগ্রা/কেজি মাত্রায় ১-৪ বার সেবন করতে হবে।

ইমিউনোসাপ্রেশন: দৈনিক ০.০৫-২ মিগ্রা/কেজি মাত্রায় ১-৪ বার সেবন করতে হবে।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

অ্যামাইনোগ্লুটেথিমাইড এন্টাসিড, বার্বিচুরেট, কার্বামাজেপিন, গ্রাইসিওফালভিন, মিটোটেন, ফিনাইলবিউটেন, ফিনাইটোয়েন, প্রিমিডন এবং রিফামিন-প্রেডনিসোলোন এর কার্যকারীতা কমিয়ে দেয়। প্রেডনিসোলোন রক্তে পটাশিয়ামের পরিমান কমিয়ে দেয়। পটাশিয়ামের পরিমান যদি কমে যায় তখন ডিজিটালিস কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া ঘটায়। ইমিউনাইজেশন খুব সতর্কতার সাথে করা উচিত।

প্রতিনির্দেশনা

নির্দিষ্ট এ্যান্টি-ইনফেক্টিভ চিকিৎসা না দিলে সিস্টেমিক ইনফেকশন হতে পারে। যে কোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীলতায় প্রতিনির্দেশিত। পারফোরেশনের কারনে সম্ভাব্য অকুলার হারপিস সিমপ্লেক্সে প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সাধারন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা বৃদ্ধি, বদহজম, স্নায়ুবিক দূর্বলতা, অথবা অস্থিরতা। বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হল ত্বক কালো অথবা ফ্যাকাশে হওয়া, ঝিমুনী বা মাথা হাল্কা লাগা, মুখ ও গাল লালচে হওয়া, হেঁচকি, ঘাম বৃদ্ধি, মাথা ঘোরা।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এই ঔষধ ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রত্যাশিত সুফলের মাত্রা ভ্রূণের সম্ভাব্য ঝুঁকির চেয়ে বেশি হলেই এটি ব্যবহার করা উচিত। কর্টিকোস্টেরয়েড মাতৃদুগ্ধে নিঃসরিত হয় এবং দেহের ভিতরে কর্টিকোস্টেরয়েড এর উৎপাদন এবং বৃদ্ধিতে বাধাদান করে অথবা অন্যান্য অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া ঘটায়।

সতর্কতা

ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, মানসিক সমস্যা, অস্টিওপোরোসিস, মেনোপোজ পরবর্তী মহিলাদের এবং ক্রনিক নেফ্রাইটিসের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী প্রেডনিসোলোন ব্যবহারের ফলে কুশিং হ্যাবিটাস, হাইপারগ্লাইসেমিয়া, মাস্কুলার উইকনেস, ইনফেকশনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি, ক্ষত রোধ বিলম্বিত হওয়া এবং মানসিক সমস্যা হতে পারে।

মাত্রাধিক্যতা

সাধারনত প্রেডনিসোলোন দীর্ঘদিন নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে অধিকমাত্রায় ব্যবহারের কারনে ক্ষতিকর প্রভাব পরতে পারে। সিম্পটোমেটিক চিকিৎসা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী প্রেডনিসোলোন এর মাত্রা ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া উচিত।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Glucocorticoids

সংরক্ষণ

ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে, আলো থেকে দূরে সংরক্ষণ করতে হবে শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names