দেশের টিকা "বঙ্গভ্যাক্স" ট্রায়ালেই ঘুরপাক খাচ্ছে

22 Aug, 2021
করোনা মহামারিকে থামিয়ে দিতে বিশ্বজুড়ে চলছে টিকার প্রয়োগ। তবে টিকা উদ্ভাবনে উন্নত দেশগুলো এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলো। বাংলাদেশ আমদানি করে দেশব্যাপী টিকার প্রয়োগ শুরু করলেও নিজস্ব উত্পাদনেও অনেকটা সাফল্যের কাছাকাছি।

গত বছরের ২ জুলাই ওষুধ প্রস্তুতকারী গ্লোব ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক ‘বঙ্গভ্যাক্স’ টিকা তৈরির কাজ শুরুর কথা জানায়। এরই মধ্যে সেই টিকা খরগোশ ও ইঁদুরের ওপর প্রয়োগ করে ‘কার্যকর ও সম্পূর্ণ নিরাপদ’ প্রমাণিত হয়েছে। এ মাসে শুরু হয়েছে বানরের ওপর পরীক্ষা, শেষ হবে আগামী মাসে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, বিশ্বে ডেল্টাসহ ১১টি ভেরিয়েন্টের সিকোয়েন্স অ্যানালাইজ করে দেখা গেছে প্রতিটি ভেরিয়েন্টের ক্ষেত্রেই বঙ্গভ্যাক্স কার্যকর।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বছরের ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেক কর্তৃক আবিষ্কৃত এমআরএনএ ভ্যাকসিনকে কভিড-১৯ টিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। গত ডিসেম্বরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষজ্ঞদল বঙ্গভ্যাক্সের গবেষণাগার পরিদর্শন করে সব তথ্য-উপাত্ত ও প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নথিপত্র পর্যালোচনা করে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অগ্রগতিতে সহযোগিতা করে। পরবর্তী সময়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওই গবেষণাগার ও উত্পাদনকেন্দ্র পরিদর্শন সাপেক্ষে গত ২৮ ডিসেম্বর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য ‘বঙ্গভ্যাক্স’ উত্পাদনের অনুমতি দেয়।

এরপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি চেয়ে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) আবেদন জমা দেয় গ্লোব বায়োটেক। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গত ২২ জুন বিএমআরসি একটি চিঠি দিয়ে গ্লোব বায়োটেককে জানায়, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে প্রয়োগ করে তার এ টিকা পরীক্ষা করতে হবে। তারপরই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

গ্লোব বায়োটেক কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আমরা সরকারের সহযোগিতা পেয়েছি। যেমন—ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি পেয়েছি। আমরা শুধু বিএমআরসির সহযোগিতা পাইনি। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদন না দিয়ে বানরের শরীরে ট্রায়ালের জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে এই ভ্যাকসিনটি যাতে উত্পাদন করতে বা অনুমোদন পেতে আরো অনেক সময় অতিবাহিত হয়। যদি বানরের শরীরে প্রয়োগের প্রয়োজন হতো তবে বিএমআরসি আরো পাঁচ মাস আগে গ্লোব বায়োটেককে এসব শর্ত উল্লেখ করতে পারত।’

গ্লোব বায়োটেক আরো জানায়, “আমেরিকা তাদের এমআরএনএ ভ্যাকসিন দিয়ে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমরা যদি সময়মতো ‘বঙ্গভ্যাক্স’ মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে আশানুরূপ ফলাফলের ভিত্তিতে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারতাম, তাহলে হয়তো আমাদের দেশেও করোনার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতো।”

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, “আমাদের গবেষণাগারে কর্মরত বিজ্ঞানীদের অন্যান্য ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায়, আমরা মহামারি প্রতিরোধে কভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ওষুধ আবিষ্কার-সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২ জুলাই কভিড-১৯-এর টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দিই। গ্লোব বায়োটেক কর্তৃক আবিষ্কৃত এমআরএনএ ভ্যাকসিনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমরা আমাদের উদ্ভাবিত টিকাটির বঙ্গভ্যাক্স নামকরণ করেছি। এই নামের ‘বঙ্গ’ একই সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের নামকে প্রতিনিধিত্ব করে। ড. কাকন নাগ এবং ড. নাজনীন সুলতানার নেতৃত্বে তরুণ বিজ্ঞানীদের একটি চৌকস দল এ টিকা আবিষ্কার করেছে।”

এই জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক বলেন, ‘বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টসহ ১১টি ভেরিয়েন্ট বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় ছিল। আমরা এই ১১টি ভেরিয়েন্টের সিকোয়েন্স অ্যানালাইজ করে আমাদের ভ্যাকসিনের যে সিকোয়েন্স মিলিয়ে দেখেছি প্রতিটি ভেরিয়েন্টের ক্ষেত্রেই বঙ্গভ্যাক্স কার্যকর। আমরা খুব আত্মবিশ্বাসী, এ টিকা যদি বাজারে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে সারা বিশ্বে ডেল্টা ধরনসহ করোনার যে মহামারি চলছে সেটা থেকে বঙ্গভ্যাক্স পরিত্রাণ দিতে পারে।’

ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের টিকাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর একটি ডোজেই এনিম্যাল ট্রায়ালে কার্যকর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আমরা আশা করছি, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালেও অনুরূপ ফলাফল পাওয়া যাবে। এটি প্লাস ফোর ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক মাস এবং মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছয় মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। এটি সিন্থেটিক্যালি তৈরি হওয়ায় তা ভাইরাসমুক্ত এবং শতভাগ হালাল। অন্য এমআরএনএ ভ্যাকসিনের তুলনায় এ ভ্যাকসিনটি সুলভ হবে, তাই স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য সহজেই ক্রয়যোগ্য হবে। আমরা যদি দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশবাসীর সেবায় উত্সর্গ করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বদরবারে আরো সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।’

গ্লোব বায়োটেকের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক বলেন, ‘আমরা প্রথমে টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আইসিডিডিআরবির সঙ্গে কাজ করি এবং তাদের তত্কালীন নির্বাহী পরিচালক ড. জন ডেভিড ক্লেমেন্সসহ জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের আমাদের টিকার তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের মাধ্যমে অবহিত করি এবং তাঁরা আমাদের অত্যাধুনিক গবেষণাকেন্দ্র ও টিকা কার্যক্রম দেখে অত্যন্ত প্রশংসা করেন। কিন্তু তাঁদের ফেজ-১ ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায়, পরবর্তী সময়ে আমরা ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন লিমিটেডের মাধ্যমে টিকাটির ফেজ-১ ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্সের জন্য বাংলাদেশ চিকিত্সা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) গত ১৭ জানুয়ারি জমা দিই। ইথিক্যাল কমিটি প্রটোকল পর্যালোচনা করে শতাধিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়ে বিএমআরসি একটি চিঠি গত ৯ ফেব্রুয়ারি দেয়। আমরা সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তরসহ সংশোধিত প্রটোকল ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএমআরসিতে জমা দিই। গত ১৮ মে আমাদের বঙ্গভ্যাক্সের গবেষণাপত্রটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মেডিক্যাল জার্নাল ভ্যাকসিনে প্রকাশিত হয়। তখন আমরা এই খবরটি স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট সব সংস্থায় চিঠি দিয়ে জানাই। তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ব্যাপারে সহযোগিতা চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে চিঠি দেয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এদিকে দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গত ২২ জুন বিএমআরসি থেকে আমাদের কাছে চিঠি আসে যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আগে বানর অথবা শিম্পাঞ্জিতে টিকাটির ট্রায়াল সম্পন্ন করতে হবে। তখন আমরা খুবই কষ্ট পাই। এ বিষয়টি দীর্ঘ পাঁচ মাস পর না জানিয়ে আমরা যখন ১৭ জানুয়ারিতে বিএমআরসির কাছে আবেদন করেছিলাম, তখন জানাতে পারত।’

জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বানরের ওপর টিকার পরীক্ষার জন্য বিদেশে চেষ্টা করেছি। ভারত বলছে জিটুজি পদ্ধতিতে আবেদন করার জন্য। তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দিয়েছি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনো আশানুরূপ রেজাল্ট পাইনি। আর উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বলছে, এমআরএনএ টিকা বানরের ওপর পরীক্ষার দরকার নেই। কিন্তু বিএমআরসি বলছে, করা লাগবে। তাই বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে বন বিভাগের অনুমোদন নিয়ে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে বানর সংগ্রহ করেছি। প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রূপগঞ্জে আমাদের এনিম্যাল সেন্টারে আমরা এখন বানরের ওপর ট্রায়াল শুরু করেছি। ট্রায়ালটি ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে আগামী মাসের শেষ দিকে শেষ হবে।’

ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরো বলেন, ‘টিকাটি সারা বিশ্বে অধিক কার্যকরী হবে বলে আশা করছি। আমরা আমাদের টিকার টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিক্যুয়েন্স এনসিবিআই ডাটাবেইসে জমা দিয়েছি, যা এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের অত্যাধুনিক এনিম্যাল সেন্টারে টিকার পূর্ণাঙ্গ প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছি, যার ফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বায়ো-আর্কাইভে প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের নিবন্ধটি এরই মধ্যে আট হাজার ৫০০ জন বিজ্ঞানী পর্যালোচনা করে খুবই কার্যকরী ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের এ নিবন্ধটি এরই মধ্যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ পাবলিশার্স এলসেভিইয়ারের ভ্যাকসিন জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে।’

বঙ্গভ্যাক্স ভ্যাকসিনের প্রধান গবেষক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বঙ্গভ্যাক্স ইঁদুরের ওপর ট্রায়াল করে দেখা গেছে ভালো কাজ করে। এই পর্যায়ে এটি মানুষের ওপর ট্রায়াল করার জন্য বিএমআরসিতে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তারা চাচ্ছে যে ইঁদুরের ওপর ট্রায়াল করে সরাসরি হিউম্যান ট্রায়াল (মানুষের শরীরে পরীক্ষা) না করে মাঝে বানরের ওপর ট্রায়াল করার জন্য। পাশাপাশি তারা আরো কিছু অবজারভেশন দিয়েছে। বানর বা শিম্পাঞ্জির শরীরে পরীক্ষা চালাতে হলে তৃতীয় পক্ষের গবেষণাগার (থার্ড পার্টি রিসার্চ ল্যাব) প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো গবেষণাগার নেই। এ বিষয়ে ভারত ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, এ ধরনের পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হবে সরকারের মাধ্যমে। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কোনো আশানুরূপ রেজাল্ট পাইনি। সমস্যাটি হচ্ছে, এখন দেশে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বানরের ওপর ট্রায়ালটি দেশেই হবে।’

এই প্রধান গবেষক আরো বলেন, ‘এটি একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর সঙ্গে শুধু বাংলাদেশের সুনাম নয়, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও বিশ্বের মানুষের স্বার্থ জড়িত। ভ্যাকসিনটি যদি চলে আসে, নিশ্চয় এটি দেশের বাইরে যাবে। সব কিছু বিবেচনায় রেখেই চিন্তা করা হচ্ছে।’

জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গ্লোব বায়োটেক ২০১৫ সালে দুরারোগ্য রোগ যেমন—ক্যান্সার, অটিজম, রক্তস্বল্পতা, আর্থ্রাইটিসসহ আরো অনেক বিরল রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিকস, নোভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উত্পাদনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করে। যার নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। এখন কভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরিতে আমাদের পুরো কাঠামোটি কাজে লাগাতে পারছি। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিনের জন্য নতুন কিছু ম্যাটেরিয়ালস, কাঁচামাল, কেমিক্যালসহ বিভিন্ন উপকরণ আনতে হয়েছে। তাই যেহেতু আগের বিনিয়োগগুলো কাজে লাগছে, তাই সব মিলিয়ে বিনিয়োগের বিষয়টি বলতে গেলে ৭০০ কোটি টাকার মতো। আমাদের যে কারিগরি সক্ষমতা আছে, সেখানে প্রতি মাসে এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উত্পাদন করতে পারব। বঙ্গভ্যাক্স উত্পাদনের কারখানা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে। কারখানায় বিজ্ঞানীয় ৭০ জন জনবল রয়েছে।’

বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, ‘বঙ্গভ্যাক্স একটি দেশীয় টিকা। দেশীয় কোনো সফলতা এলে তা আমাদের জন্যও গর্বের বিষয়। কিন্তু আমরা তো অনৈতিক বা নিয়মবহির্ভূত কোনো পন্থায় তাদের মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমোদন দিতে পারি না। আমরা অনুমোদন দিলাম, এরপর বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটল, এর দায় কে নেবে? তাই আমরা চাচ্ছি মানবদেহে ট্রায়ালের আগে যেন অন্য কোনো প্রাণীর দেহে ট্রায়াল হয়। সেখানে যদি প্রমাণিত হয় এটা ঝুঁকিমুক্ত, তাহলে আমরা মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমতি দিতে একমুহূর্তও দেরি করব না।’


Source: kalerkantho.com