ওমিপ্রাজল

নির্দেশনা

ওমিপ্রাজল নিম্নোক্ত উপসর্গে নির্দেশিত-
  • গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার
  • নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহবিরোধী ঔষধ ব্যবহারজনিত গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার
  • নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহবিরোধী ঔষধ ব্যবহারের পূর্বে গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার হয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে
  • প্রতিষেধক হিসেবে গ্যাস্ট্রোইসােফ্যাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসায়
  • গ্যাস্ট্রিক এসিডজনিত ডিস্পেপসিয়ায়
  • মারাত্বক রিফ্লাক্স ইসোফ্যাগাইটিস জনিত আলসারে
  • অ্যানেসথেসিয়াকালে এসিড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে
  • প্রতিষেধক হিসেবে জলিঞ্জার-এলিসন সিনড্রমে
  • হেলিকোব্যাকটার পাইলেরি জনিত পেপটিক আলসার-এর নিরাময়ে।

ফার্মাকোলজি

ওমিপ্রাজল একটি প্রতিস্থাপিত বেনজিমিডাজল জাতীয় ঔষধ, যা গ্যাস্ট্রিক এসিড নিঃসরণে প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করে। এটি গ্যাস্ট্রিক প্যারাইটাল কোষের হাইড্রোজেন-পটাশিয়াম-এ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেটেজ এনজাইম সিষ্টেম (H+/K+ ATPase)-কে বাধা দিয়ে গ্যাস্ট্রিক এসিড নিঃসরণে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। মুখে সেবনের পর ওমিপ্রাজলের এসিড নিঃসরণ বিরোধী কার্যক্রম ১ ঘন্টার মধ্যে শুরু হয়, যা ২ ঘন্টায় সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে এবং ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত বিরাজ করে। যখন এটি সেবন বন্ধ করা হয়, তখন এসিড নিঃসরণ প্রক্রিয়া ৩-৫ দিনের মধ্যে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।

মাত্রা ও সেবনবিধি

বিনাইন (মারাত্বক নয় এমন) গ্যাস্ট্রিক এবং ডিওডেনাল আলসার: ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে দৈনিক ২০ মিঃগ্রাঃ করে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত এবং গ্যাস্ট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে এ মাত্রা ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত; তীব্রতার ক্ষেত্রে এ মাত্রা ৪০ মিঃগ্রাঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে; ডিওডেনাল আলসারের ক্ষেত্রে, মেইনটেনেন্স ডোজ দৈনিক ২০ মিঃগ্রাঃ এবং ডিওডেনাল আলসারের পূনঃআক্রমণ রোধে দৈনিক মাত্রা ১০-২০ মিঃগ্রাঃ।

নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহবিরোধী ঔষধ ব্যবহারজনিত গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার: দৈনিক ২০ মিঃগ্রাঃ করে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত; পুরোপুরি নিরাময় না হলে আরও ৪ সপ্তাহ সেবন করতে হবে। নন-স্টেরয়ডাল প্রদাহবিরোধী ঔষধ ব্যবহারে গ্যাস্ট্রিক আলসার ও ডিওডেনাল আলসার হওয়ার ঝুঁকি আছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে দৈনিক মাত্রা ২০ মিঃগ্রাঃ, প্রতিষেধক হিসেবে।

গ্যাস্ট্রো-ইসোফ্যাগাল রিফ্লাক্স ডিজিজ: দৈনিক ২০ মিঃগ্রাঃ করে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত; পুরোপুরি নিরাময় না হলে আরও ৪-৮ সপ্তাহ সেবন করতে হবে; অন্য ঔষধ দ্বারা নিরাময় হয় না এমন ক্ষেত্রে, দৈনিক ৪০ মিঃগ্রাঃ করে ৮ সপ্তাহ সেবন করতে হবে। মেইনটেনেন্স ডোজ দৈনিক ২০ মিঃগ্রাঃ।

এসিড-রিফ্লাক্স সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসায়: দৈনিক ১০-২০ মিঃগ্রাঃ।

গ্যাস্ট্রিক এসিডজনিত ডিস্পেপসিয়া: দৈনিক ১০-২০ মিঃগ্রাঃ করে ২-৪ সপ্তাহ পর্যন্ত।

অ্যানেসথেসিয়াকালে এসিড নি:সরণ নিয়ন্ত্রণে: অস্ত্রোপচারের পূর্ববতী সন্ধ্যায় ৪০ মিঃগ্রাঃ; পরবর্তী মাত্রা, অস্ত্রোপচারের ২-৬ ঘণ্টা পূর্বে ৪০ মিঃগ্রাঃ।

জোলিঞ্জার-এলিসন সিনড্রোম: প্রাথমিকভাবে ক্ষেত্রে দৈনিক মাত্রা ৬০ মিঃগ্রাঃ। স্বাভাবিক মাত্রা দৈনিক ২০-১২০ মিঃগ্রাঃ (দৈনিক মাত্রা ৮০ মিঃগ্রাঃ -এর উপরে হলে দু’টি বিভক্ত মাত্রায়)।

Helicobacter pylori-জনিত পেপটিক আলসার: ওমিপ্রাজল ২০ মিঃগ্রাঃ দিনে দুইবার ও সাথে নিম্নেবর্ণিত অনুজীব বিরোধী ঔষধের সমন্বিত মাত্রা-এমোক্সিসিলিন ৫০০ মিঃগ্রাঃ ও মেট্রোনিডাজল ৪০০ মিঃগ্রাঃ উভয়টি দিনে তিনবার ১ সপ্তাহ পর্যন্ত; অথবা ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ২৫০ মিঃগ্রাঃ ও মেট্রোনিডাজল ৪০০ মিঃগ্রাঃ উভয়টি দিনে দুইবার ১ সপ্তাহ পর্যন্ত অথবা এমোক্সিসিলিন ১ গ্রাম ও ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ৫০০ মিঃগ্রাঃ উভয়টি দিনে দুইবার ১ সপ্তাহ পর্যন্ত।

বাচ্চাদের (১ বৎসর বা তার উপরের বাচ্চা) মারাত্বক রিফ্লাক্স ইসোফ্যাগাইটিসজনিত আলসার: বাচ্চার ওজন ১০-২০ কেজি-এর মধ্যে হলে দৈনিক মাত্রা ১০-২০ মিঃগ্রাঃ, ৪-১২ সপ্তাহ পর্যন্ত; বাচ্চার ওজন ২০ কেজির বেশী হলে দৈনিক মাত্রা ২০-৪০ মিঃগ্রাঃ ৪-১২ সপ্তাহ পর্যন্ত।

ঔষধের মিথষ্ক্রিয়া

ওমিপ্রাজল ডায়াজিপাম, ফেনিটয়েন এবং ওয়ারফেরিন-এর রেচন বিলম্বিত করে; সুতরাং, ওমিপ্রাজল ও ওয়ারফেরিন বা ফেনিটয়েন একত্রে সেবন করলে ওয়ারফেরিন বা ফেনিটয়েন-এর মাত্রা কমানোর প্রয়োজন হয়। থিওফাইলিন, প্রোপ্রানোলল অথবা এন্টাসিড-এর সাথে ওমিপ্রাজল-এর মিথষ্ক্রিয়ার কোন তথ্য নেই।

প্রতিনির্দেশনা

ওমিপ্রাজল বা এর সাথে ব্যবহৃত যেকোন উপাদানের প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীর জন্য ওমিপ্রাজল ব্যবহার প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ওমিপ্রাজল একটি সুসহনীয় ঔষধ। তবে এটির ব্যবহারে কিছু মৃদু ও ক্ষণস্থায়ী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, যেমন- বমিবমি ভাব, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, এব্ডোমিনাল কলিক ও প্যারেসথেসিয়া হতে পারে। তবে এর জন্য মাত্রা কমানোর প্রয়োজন নেই।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে

তিনটি সম্ভাব্য মহামারী সংক্রান্ত গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় বা ভ্রূণ/নবজাতক শিশুর স্বাস্থ্যের উপর ওমেপ্রাজোলের কোনও বিরূপ প্রভাব পাওয়া যায় না। গর্ভাবস্থায় ওমিপ্রাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। বুকের দুধে ওমিপ্রাজল প্রবেশ বা নবজাতকের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। ওমেপ্রাজল ব্যবহার অপরিহার্য বলে বিবেচিত হলে, তাই বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা উচিত।

সতর্কতা

ক্লোপিডোগ্রেল এর ফার্মাকোলজিক্যাল ক্রিয়াকলাপ হ্রাস হওয়ায় ক্লোপিডোগ্রেল ও ওমিপ্রাজলের যুগপত ব্যবহার এড়ানো উচিত। পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় দেখা যায় যে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর থেরাপি হিপ, কব্জি বা মেরুদন্ডের অস্টিওপরোসিস সম্পর্কিত ফ্যাক্‌চারগুলির জন্য বর্ধিত ঝুঁকির সাথে যুক্ত হতে পারে। অ্যাট্রোপিক গ্যাস্ট্রোইটিমটি মাঝে মাঝে ওমেপ্রাজলের সাথে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা করা রোগী থেকে গ্যাস্ট্রিক কর্পাম বায়োপসিস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মেথোট্রেক্সেট ও পি পি আই এক সাথে সেবন করলে মেথোট্রেক্সেট বিষাক্ততা হতে পারে।

থেরাপিউটিক ক্লাস

Proton Pump Inhibitor

সংরক্ষণ

আলো ও তাপ থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে রাখুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।

Available Brand Names